বাংলাদেশ সোসাইটির রব-রুহুল নেতৃত্বাধীন বিগত কমিটি নোয়াখালী সমিতির নেতাদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সেমিট্রি প্রকল্প থেকে ৩৪০টি কবর কিনেছিল। এ জন্য বিগত কমিটি ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার পরিশোধ করেছিল। এখন এই অর্থ ফেরত নিতে চাইছে বাংলাদেশ সোসাইটির বর্তমান কমিটি। তারা ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সেমিট্রি কর্তৃপক্ষের কাছে সোসাইটির পরিশোধ করা আড়াই লাখ ডলার ফেরত চেয়েছে। বাংলাদেশ সেমিট্রির ট্রাস্টি বোর্ডও এই অর্থ ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে ঘাপলা হয়েছে ১০ হাজার ডলার নিয়ে। সোসাইটির কোষাগার থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার কবর কেনার জন্য পরিশোধ করা হলেও বাংলাদেশ সেমিট্রি কর্তৃপক্ষ সোসাইটির পক্ষ থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার ডলার পেয়েছে বলে জানিয়েছে। বাকি ১০ হাজার ডলার তারা পায়নি। সূত্র জানায়, সোসাইটি চায় কবরের সংখ্যা আরও বাড়াতে। তবে তা এখনই নয়। বিশেষ করে, কবর তৈরি হওয়ার আগেই সব অর্থ পরিশোধ করার পেছনে তারা মনে করছে, ইচ্ছে করেই সোসাইটির কোষাগার খালি করা হয়েছে, যাতে নতুন কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থসংকটে পড়ে এবং কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে না পারে। আর তারা যাতে ৩৪০টি কবর কেনার কৃতিত্ব নিতে পারে। ৩৪০টি কবর কেনার পেছনে নানা কারণ থাকায় সোসাইটির নতুন কমিটি এ নিয়ে আপত্তি তোলে। তারা মনে করে, যেখানে প্রকল্প এখনো বাস্তবায়িত হয়নি, সেখানে পুরো কবরের দাম বাংলাদেশ সোসাইটির বিগত নেতারা পরিশোধ করে দিয়েছেন। বিষয়টি বর্তমান সেলিম-আলীর নেতৃত্বাধীন কমিটি যথাযথ হয়েছে বলে মনে করে না। এ কারণে তারা কবর না নিয়ে অর্থ ফেরত নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা সোসাইটি থেকে সব সময় কবর কেনার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আসছি। তবে আমরা মনে করি, যে প্রকল্প এখনো বাস্তবায়িত হয়নি, সেখান থেকে ৩৪০টি কবর কিনে সব অর্থ পরিশোধ করার বিষয়টি ইতিবাচক নয়। তারা কবর কেনার জন্য ১০ থেকে ২০ শতাংশ অর্থ ডাউন পেমেন্ট দিলে ভিন্ন কথা ছিল। কিন্তু তারা তা না করে পুরো অর্থ শোধ করেন। এ ব্যাপারেই কমিটির নেতারা আপত্তি করছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে কবর প্রকল্পের ট্রাস্টি বোর্ডের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা অর্থ ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে আমরা কবরের পুরো আড়াই লাখ ডলার ফেরত পাচ্ছি না। ফেরত পাব ২ লাখ ৪০ হাজার ডলার। বাকি ১০ হাজার ডলার ফেরত পাওয়ার বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত। কারণ কবর প্রকল্পের ট্রাস্টিদের পক্ষ থেকে আমাদেরকে জানানো হয়েছে, তারা ২ লাখ ৪০ হাজার ডলার পেয়েছেন। বাকি ১০ হাজার ডলার তারা পাননি। ১০ হাজার ডলার তারা কেন পেলেন না, এই অর্থের কী হয়েছে, এটি আমরা অনুসন্ধান করে বের করব।
কবর কেনার পর তা থেকে সরে আসার বিষয়টি ভালো দৃষ্টান্ত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এখন কবর কেনার চেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি বাংলাদেশ সেন্টার স্থাপনের বিষয়ে। নির্বাচনের আগে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, বাংলাদেশ সেন্টার করব। সে হিসেবে আমরা এটি করার উদ্যোগ নিয়েছি। তাই এ মুহূর্তে কবর প্রকল্পটি প্রাধান্য পাচ্ছে না। আমরা আলাদা করে সেমিট্রি করার বিষয়টি প্রাধান্য দিচ্ছি। আমাদের কাছে এখনো কিছু কবর আছে। আমরা কবরের সংখ্যা আরও বাড়াব। আমরা একেবারেই তাদের কাছ থেকে কবর নেব না, এমনটি বলছি না। তাদের কবর প্রকল্প আরও এগিয়ে যাক এবং তৈরি হোক। আমাদের কমিটির নেতারা এ ব্যাপারে সময়মতো সিদ্ধান্ত নেবেন।