Thikana News
১৩ মার্চ ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

আন্তর্জাতিক খেলার ঘুঁটি বাংলাদেশ!

আন্তর্জাতিক খেলার ঘুঁটি বাংলাদেশ! সংগৃহীত
মিয়ানমারকে বিভক্ত করে একটি খ্রিষ্টান রাষ্ট্র গঠনের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে আধিপত্যবাদী পশ্চিমা বিশ্ব। প্রাকৃতিক সম্পদসমৃদ্ধ দেশটি হতে এই সম্পদ লুটে নেওয়াই তাদের অন্যতম উদ্দেশ্য।
জানা গেছে, মিয়ানমারকে বিভক্ত করার লক্ষ্যে পশ্চিমা শক্তি ‘আরসা’সহ একাধিক সশস্ত্র জঙ্গিগোষ্ঠীকে জান্তাবিরোধী কার্যক্রমে সামরিক, আর্থিকভাবে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। মিয়ানমার তেল ও গ্যাসসমৃদ্ধ। প্রাকৃতিক সম্পদে এতটাই সমৃদ্ধ যে, প্রতি তিনটি কূপ খনন করে একটিতে গ্যাস পাওয়ার যায়, যা বিশ্বের খুব কম দেশেই দেখা যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের লোলুপ দৃষ্টি এ কারণেই। কিন্তু চীনের প্রবল বাধার কারণে পশ্চিমারা তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারছে না। প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনসহ অর্থনৈতিকভাবে মিয়ানমার চীনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। বঙ্গোপসাগরের তলদেশ দিয়ে পাইপলাইন বসিয়ে মিয়ানমার থেকে তেল-গ্যাস টেনে নিচ্ছে চীন।
এদিকে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে বাংলাদেশ প্রচণ্ড চাপে রয়েছে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ভরণ-পোষণে বছরে কমপক্ষে ২০ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ এক দশক আগে সমন্বিতভাবে এই চাহিদা দিয়েছিল। শরণার্থীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় বেড়ে যাওয়ায় এবং মূল্যবৃদ্ধির ফলে এই চাহিদার পরিমাণও বেড়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে এই অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অধিকাংশ দেশ প্রতিশ্রুত অর্থসহায়তা চার বছর আগেই বন্ধ বা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে। বিশ্বের ১১৭টি দেশ ও সংস্থা শরণার্থীদের জন্য নিয়মিত আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিলেও একমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া কোনো দেশই নিয়মিত অর্থসহায়তা করছে না। বাংলাদেশ বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা পাচ্ছে। ২০১৭ সাল থেকেই রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের ওপর বিরাট এক বোঝা হয়ে আছে। বাংলাদেশকে বছরে কমপক্ষে ১৫ হাজার কোটি টাকা এ খাতে ব্যয় করতে হচ্ছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারের প্রত্যাবর্তন প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিচ্ছে না। বঙ্গোপসাগরে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন এবং সেন্টমার্টিন, মিয়ানমারের পার্বত্য এলাকায় মার্কিন সৈন্যের অবাধ চলাচলের সুযোগ চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ জাতিগত সশস্ত্র লড়াইয়ে ইন্ধন জোগাচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। আরাকান আর্মি, আরসা ছাড়াও দুটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী সেখানে তৎপর। বাংলাদেশে বর্তমানে ১৩ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে। আর্থিক, সামাজিক, আইনশৃঙ্খলার দিক থেকে এরা বাংলাদেশের জন্য শুধু বোঝাই নয়, বহুমাত্রিক দুর্ভাবনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুদূরপ্রসারী আন্তর্জাতিক ভয়ংকর এক খেলার ঘুঁটি হয়েছে বাংলাদেশ।

কমেন্ট বক্স