৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ব্যাপক গণ-আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এর সাত মাস পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে নানা চড়াই-উতরাই পার করেছে দেশ। দিন যতই যাচ্ছে দেশের জনগণের মনে একটাই প্রশ্ন জাগছে জাতীয় নির্বাচন কবে হবে? যদি নির্বাচন হয়ও কোন বিভাগে কোন রাজনৈতিক দল এগিয়ে রয়েছে।
এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে নির্বাচনের তারিখ ঠিক করেনি অন্তর্বর্তী সরকার। তবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর বা আগামী বছরের মার্চে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব প্রায় নেই বললেই চলে। বর্তমানে বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রধান দুই রাজনৈতিক দল হিসেবেই গণ্য। সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে নতুন একটি দল রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছে।
সম্প্রতি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চালানো এক জরিপে দেখা গেছে, দেশের আটটি বিভাগের মধ্যে ছয়টিতে বিএনপি এবং দুটিতে জামায়াতে ইসলামী এগিয়ে রয়েছে। আর প্রতিটি বিভাগেই আওয়ামী লীগ তৃতীয় ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
এই মুহূর্তে ঢাকা বিভাগে বিএনপি ৪৪.৭ শতাংশ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২৫.৫ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ১৮.৫ শতাংশ, ছাত্র সমর্থিত পার্টি ৫.৪ শতাংশ এগিয়ে।
চট্টগ্রাম বিভাগে বিএনপি ৪৭.৮ শতাংশ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২৭.৩ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ১১.১ শতাংশ, ছাত্র সমর্থিত পার্টি ৭.৪ শতাংশ এগিয়ে।
সিলেট বিভাগে বিএনপি ৫১ শতাংশ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২৬ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ১৪.৯ শতাংশ, ছাত্র সমর্থিত পার্টি ২.৬ শতাংশ এগিয়ে।
খুলনা বিভাগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৪৬.৩ শতাংশ, বিএনপি ৩৮.৩ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ৯ শতাংশ, ছাত্র সমর্থিত পার্টি ৩ শতাংশ এগিয়ে।
রাজশাহী বিভাগে বিএনপি ৪২.৭ শতাংশ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৩৫.৫ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ১২.৯ শতাংশ, ছাত্র সমর্থিত পার্টি ৬.৬ শতাংশ এগিয়ে।
রংপুর বিভাগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৪৪.৯ শতাংশ, বিএনপি ২১.৭ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ৯.২ শতাংশ, ছাত্র সমর্থিত পার্টি ৩.৮ শতাংশ এগিয়ে।
বরিশাল বিভাগে বিএনপি ৩৯.৭ শতাংশ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২২.৯ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ২৪.৬ শতাংশ, ছাত্র সমর্থিত পার্টি ৬.২ শতাংশ এগিয়ে।
ময়মনসিংহ বিভাগে বিএনপি ৪৪.৬ শতাংশ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ১৮.৩ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ১৮.৩ শতাংশ, ছাত্র সমর্থিত পার্টি ৬.৪ শতাংশ এগিয়ে।
উন্নয়ন গবেষণা ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা সংস্থা ইনোভিশন কনসাল্টিং বাংলাদেশের ৮টি বিভাগে চালানো জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে সহযোগিতায় ছিল ব্রেন (BRAIN) এবং মুক্তচিন্তার প্ল্যাটফরম ‘ভয়েস ফর রিফর্ম’।
চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত সারা দেশের ৮টি বিভাগের ৬৪টি জেলার ১০ হাজার ৬৯৬ জনের মধ্যে এই জরিপ চালানো হয়।
এতে আরও উঠে এসেছে, এলাকাভিত্তিক নমুনায় গ্রামীণ ৭১ শতাংশ এবং শহর ২৯ শতাংশ। লিঙ্গভিত্তিক নমুনায় পুরুষ ৫৫ শতাংশ ও নারী ৪৫ শতাংশ।
নমুনায় বয়সভিত্তিক প্রতিনিধিত্ব জেন-জি (১৮ থেকে ২১ বছর) ৩৬ শতাংশ, মিলেনিয়ালস (২৯ থেকে ৪৪ বছর) ৩৪ শতাংশ, জেন এক্স (৪৫ থেকে ৬০ বছর) ১৮ শতাংশ এবং ষাটোর্ধ্ব ১২ শতাংশ।
জরিপের ফল আরও বলছে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২.৬ শতাংশ, জাতীয় পার্টি ১ শতাংশ, গণ অধিকার পরিষদ শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ, গণসংগতি আন্দোলন শূন্য দশমিক ২ শতাংশ এবং অন্যান্য দল ৩.৩ শতাংশ ভোট পাবে।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ইনোভিশন কনসাল্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রুবাইয়াৎ সরওয়ার জরিপের বিস্তারিত ফলাফল তুলে ধরেন।
ঠিকানা/এনআই