প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত ছিলো দর্শনার্থীদের ভিড়। কেনাকাটা, এতিহ্যবাহী খাবার আর সেই সঙ্গে ছিল সাংস্কৃতিক আয়োজন। এই পুরো আয়োজনকে স্মরণীয় করে রেখে গেছেন নগর বাউল জেমস।

দুই যুগ ধরে হয়ে আসছে নর্থ আমেরিকান ফেস্টিভ্যাল। তবে এবারের আয়োজন নিয়ে ছিল অনেক বেশি আগ্রহ। মেলায় ছিল শতাধিক স্টল। কেনাকাটা ও ঐতিহ্যবাহী নানা রকম সুস্বাদু খাবারের স্বাদ নেবার সুযোগ পান দর্শকরা। আয়োজকদের ধারণা, টানা তিনদিনের এই মেলায় সব মিলিয়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষের সমাগম হয়েছিলো। মেলায় অংশ নিতে পেরে ও দেশীয় ঐতিহ্য কে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পেরে আনন্দিত স্টল মালিকরা ।
মেলায় মূল স্পন্সর ছিলেন এস এন এস হোম লোনের কো ফাউন্ডার নাসির সবুজ বলেন, আমি ব্যবসা করি কমিউনিটিকেন্দ্রিক। এই কমিউনিটি আমাকে সাফল্য দিয়েছে। আর আমার গ্রাহকদেরও কিছু রিটার্ন দিতে চেয়েছি। আমি নিজেও জেমসের ভক্ত, তাই মিশিগানে আমার গ্রাহকদের জেমস-এর ওপেন এয়ার কনসার্ট উপহার দিলাম।
বেলুন উড়িয়ে প্রথমদিন উদ্বোধন করার পর থেকেই জমে ওঠে মেলা। দ্বিতীয় দিনও মেলার পাশাপাশি ছিলো লোকাল শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা । সাংষ্কৃতিক আয়োজনে দর্শক মাতান নিউইর্য়ক থেকে আগত শিল্পী রিয়া ও প্রেমা।
তৃতীয় তথা শেষ দিনের আয়োজন ছিলো আরো জমকালো। জেমসের গানের পাশাপাশি ছিল বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী রিজিয়া পারভিনের গান। পুরো আয়োজনটি প্রাণবন্ত করে রাখেন দুই সঞ্চালক শারমিন সিরাজ সোনিয়া এবং জনপ্রিয় অভিনেত্রী রিচি সোলায়মান।
এই প্রথম জেমসের কনসার্ট উন্মুক্ত জায়গায় হওয়ায় এবং বাংলাদেশ যাবার আগে এটিই শেষ কনসার্ট হওয়ায় পাশের স্টেট এবং কানাডা থেকেও ভক্তরা ছুটে যান মিশিগানে। পুরো সন্ধ্যা জুড়ে বাংলা টাউনের জেইন ফিল্ড মাঠটি যেন পরিণত হয়েছিলো বাঙালির মহামিলন মেলায়। পঞ্চাশ হাজারের মত দর্শক মন ভরে উপভোগ করেছেন জেমসের কনর্সাট। একে একে ১৩টি গান পরিবেশন করেন তিনি। জেমস বারবার তার দর্শকের উদ্দেশে বলতে থাকেন ‘লাভ ইউ মিশিগান’।
এই পুরো অনুষ্ঠানের চিফ গেস্ট ছিলেন ওয়াশিংটন ইউনিভাসিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চ্যান্সেলর ও পিপলএনটেকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ। তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেবার মত মহতি উদ্যোগের জন্য। পুরো আয়োজনকে সফল করে তুলতে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন সাকের উদ্দিন সাদেক, সৈয়দ রায়হান, আকিকুল হক, শামীম. দেলোয়ার আনসার ও এজাজুল ইসলাম নাইম ।
মেলা উপলক্ষে র্যাফেল ড্র’তে উপহার হিসাবে ছিল একটি আকর্ষণীয় গাড়ি, মিশিগানের ডেট্রয়েট টু ঢাকা বিমান টিকেটসহ আকর্ষণীয় আরো মূল্যবান পুরস্কার।
২২তম এই মেলা মিশিগানবাসী তথা পুরো আমেরিকা জুরে বাঙালি কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ করা ও বাংলা সংস্কৃতি চর্চা প্রচার এবং প্রসারে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়াই উদ্দেশ্য ছিল বলে জানান আয়োজকরা।