আমেরিকার গ্রিনকার্ডধারী অনেকেই আছেন, যারা যুক্তরাষ্ট্রে নিয়মিত থাকেন না। তারা দেশের বাইরে থাকেন। তারা নিজের দেশে বা অন্য দেশে থেকে সেখানে কাজ করেন, গ্রিনকার্ড রক্ষার জন্য ছয় মাসে বা বছরে একবার আসেন। কয়েক দিন থেকে আবার চলে যান। যারা কেবল গ্রিনকার্ড রক্ষার জন্য এ ধরনের পদ্ধতির আশ্রয় নিয়ে থাকেন, তারা বিপদে পড়তে পারেন। তারা গ্রিনকার্ড হারাতেও পারেন। যারা বিশ্বের অন্যান্য দেশে অবস্থান করেন বা নিজের দেশে অবস্থান করেন, তারা সেখানে কোনো কাজ করলে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে অবশ্যই ট্যাক্স ফাইল করতে হবে এবং তার বিশ্বের সকল আয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ট্যাক্স পাওনা হলে তা দিতে হবে। এখানে কেউ কেউ এসে এক-দুই মাস বা তারও কম সময় থাকেন। আবার কেউ কেউ দেখান, তিনি এখানে কাজ করেন। তারা ট্যাক্স ফাইল করে সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও নেওয়ার চেষ্টা করেন ও নিয়ে থাকেন। বিশেষ করে, সন্তানের লেখাপড়া-সংক্রান্ত সরকারি সহায়তা, হেলথ ইন্স্যুরেন্স-সংক্রান্ত সহায়তাসহ বিভিন্ন সুবিধা। যারা গ্রিনকার্ড নিয়ে অন্য দেশে এক বছর থাকেন, এরপর বছরে একবার আসেন, তারা যদি এক বছরের বেশি সময় দেশের বাইরে থাকেন অনুমতি ছাড়া, তাহলে ধরেই নেওয়া হয় তিনি তার গ্রিনকার্ডটি বাতিল করেছেন। এ কারণে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার সুযোগ পাবেন না। স্বেচ্ছায় গ্রিনকার্ড বাতিল করার কারণে তাকে একটি ফর্ম দেওয়া হতে পারে, সেটি হলো আই-৪০৭। এই ফর্মটি স্বাক্ষর করার মানে হলো আপনি আপনার গ্রিনকার্ড স্বেচ্ছায় সারেন্ডার করেছেন। এই ফর্মটি স্বাক্ষর করে দেওয়ার পর তারা বিমানবন্দরেই গ্রিনকার্ডটি রেখে দেবে এবং ওই ব্যক্তিকে তার দেশে ফেরত পাঠাবে। আর যারা মনে করেন, তিনি এ দেশে আসতে চান ও এখন থেকে নিয়মিত থাকতে চান, তিনি আই-৪০৭ ফর্মটি স্বাক্ষর না করে বলতে পারেন যে তিনি ইমিগ্রেশন কোর্টের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করবেন। ইমিগ্রেশন জজের কাছে পাঠিয়ে দিয়ে ওই ব্যক্তি একজন আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন। সেখানে শুনানি করতে পারবেন। সেখানেই তার গ্রিনকার্ডের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। সে ক্ষেত্রে বিমানবন্দরেই গ্রিনকার্ডটি রেখে দেওয়া হবে। ফলে ওই ব্যক্তি গ্রিনকার্ডটি আর হাতে পাবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত ইমিগ্রেশন জজ কোনো আদেশ দেন। ইমিগ্রেশন জজ তাকে থাকার অনুমতি দিলে তিনি থাকতে পারবেন এখানে এবং গ্রিনকার্ড ফেরত পারেন। কিন্তু জজ যদি তাকে থাকার অনুমতি না দেন ও তার বিরুদ্ধে আবেদন দেন, তখন তার গ্রিনকার্ড বাতিল হয়ে যাবে এবং তাকে তার নিজ দেশে ফেরত যেতে হবে।
এদিকে যারা দেশের বাইরে থাকেন, তাদের কেউ যদি সেখানে চাকরি করেন বা অন্য কোনো পেশায় জড়িত থাকেন, তাহলে তিনি গ্রিনকার্ডধারী হলে তার বিস্তারিত তথ্য দিয়ে তিনি তার জন্য আবেদন করবেন দুই বছর বাইরে থাকার জন্য। অনুমতি পেলে তিনি দুই বছর বাইরে থাকতে পারবেন। দুই বছর মেয়াদ শেষ হলে আবার অনুমতি নিতে হবে, এর আগেই আবেদন করতে হবে। তবে কেউ গ্রিনকার্ড নেওয়ার পর যদি দিনের পর দিন একইভাবে এটি করতে থাকেন, তারা সমস্যায় পড়তে পারেন। কারণ একজন মানুষকে গ্রিনকার্ড দেওয়া হয় এ জন্য যে তিনি এই দেশে থাকবেন এবং এখানে কাজ করবেন। অর্থ আয় করবেন সেই সাথে কর দেবেন। এ দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবেন। যারা ছয় মাসে একবার আসেন, তাদের এ দেশে অবস্থানের সময়টি সিটিজেন আবেদনের সময়ে বিবেচনা করা হবে। যারা এ দেশে এক বছর বা এরও বেশি পরপর আসেন, তাদের এ দেশে অবস্থানের সময়টি সিটিজেনশিপ আবেদনের সময় বিবেচনা করা হবে না। ফলে যারা সিটিজেনশিপের জন্য আবেদন করতে চান, তারা ছয় মাসের কম যদি বাইরে থাকেন, সেই সময় গণনা করা হবে না।