Thikana News
২৯ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
ডাকাতির মহামারি ►কিংস পার্টিতে আহাজারি 

আইনি গ্যাঁড়াকলে রাজনীতি-রণাঙ্গন

আইনি গ্যাঁড়াকলে রাজনীতি-রণাঙ্গন



 
চুরি-ডাকাতির মহামারী লেগেছে দেশে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। তা প্রতিরোধে সরকারপক্ষও ঝটিকা উদ্যোগ নিয়েছে। রাত তিনটায় সাংবাদিক সম্মেলন করে ইতিহাস গড়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর চাপে ডিসেম্বরেই চলছে নির্বাচনী প্রস্তুতি। কিংস পার্টি গঠন প্রক্রিয়াও চূড়ান্ত পর্যায়ে। উপদেষ্টা পদে ইস্তফা দিয়ে নতুন দলের আহ্বায়ক এখন নহিদ ইসলাম। অন্যদিকে নির্বাচনী প্রতিবন্ধকতায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জামায়াতে ইসলামীও নির্বাচন ও প্রতীক বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় পায়নি। ফলে দ্রুত নির্বাচনের দাবি নিয়ে প্রধান দল দুটি এখন সংশয়ে। 
এদিকে বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের মামলা জটিলতা কমেছে। ওয়ান ইলেভেন ও আওয়ামী লীগ আমলে ৮৩টি মামলা হয়। ৭৯টি মামলা ইতোমধ্যে স্থগিত/বাতিল হয়ে গেছে। সম্পদের তথ্যগোপন ও অর্থপাচার বিষয়ক চারটি মামলা চূড়ান্ত পর্যায়ে। সমাধান হলেই তিনি দেশে ফিরতে পারবেন। 
বিএনপিকে গঠনমূলক প্রক্রিয়ায় এগিয়ে নিতে তারেক রহমান চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু বিরোধী পক্ষ সেই অগ্রগতি ঠেকাতে নানা প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। 
এদিকে জামায়াতে ইসলামীও এখন বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। ২০১৮-তে বিএনপির প্রতীক ‘ধানের শীষ’ নিয়ে ভোট করেছিলো। আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ৩০০ আসনে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে। এ নিয়ে বিএনপি নেতারা ‘টপ টু বটম’ জামায়াতের সমালেচনায় নেমেছে। 
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রশক্তির ‘কিংস পার্টি’ও তারেক-বিরোধী। ইতোমধ্যে তারেক রহমানকে ঠেকানোর পরোক্ষ ঘোষণাও এসেছে। কিন্তু বিএনপির সবাই তারেক রহমানকে নেতৃত্বে দেখতে চান। দল যদি তাকে রাজনীতিতে চায়, তাহলে ঠেকায় কে?
নির্বাচনী-নিবন্ধন ও প্রতীক বিষয়ে এখনও অনিশ্চয়তায় জামায়াত
জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী-নিবন্ধন ও প্রতীক বাতিল হয় ২০১৩ সালে। আওয়ামী লীগ শাসনামলের সেই অমানিশা এখনও কাটেনি। হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টও বিষয়টি বহাল রেখেছিলো। অবশেষে ২০২৪-এর ১ আগস্ট আওয়ামী লীগ ঠুকে শেষ পেরেক। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু প্রবল প্রতিরোধে ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়। ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। দ্রুততার সাথে জামায়াত ও শিবিরের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু নির্বাচনী নিবন্ধনের বিষয়টি আদালতে এখনো পর্যন্ত ঝুলেই আছে। 
সরকারপক্ষ বলছে, বিষয়টি উচ্চাদালতের অধীন। সেখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ সমীচীন হবে না। সুপ্রিম কোর্টের ফুল বেঞ্চ না বসলে সমাধানও আসবে না। গত জানুয়ারিতে বিষয়টি নিয়ে আইনগত নড়াচড়া ছিলো। তবে কবে সমাধানে পৌঁছানো যাবে- কোন 
নিশ্চয়তা নেই। 

যুদ্ধপরাধী আজহারুল ইসলামের মুক্তির ইস্যু : মাঠগরমে জামায়াতের বিকল্প উদ্যোগ
জামায়াতের নীতি-নির্ধারকেরা রায় না পাওয়ায় বিচলিত। কিন্তু আদালতের স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনে যেতে পারছে না। অবশেষে ‘এটিএম আজাহারুল ইসলাম ইস্যুতে’ মাঠ গরমের সিদ্ধান্ত নেয়। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তিনি এখনও কারাগারে। জামায়াতের এই কেন্দ্রীয় নেতার পৈতৃকবাস বৃহত্তর রংপুর। ২৫ ফেব্রুয়ারি অভিনব কর্মসূচি নিয়েছিলো ‘জামায়াত’। কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান স্বেচ্ছায় গ্রেফতার হওয়ার ঘোষণা দেন। সেক্ষেত্রে ঢাকার আদালত প্রাঙ্গনে ছিলো জমায়েত। দুপুর দুটোয় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের অফিস ঘেরাও। সারাদেশের প্রায় লক্ষাধিক সাথী-সদস্য ঢাকায় জমায়েত হতে থাকেন। অনেকটা ‘ঢাকা অচল’ করার প্রস্তুতি চলছিলো। 
অস্থিরতা দমাতে প্রধান উপদেষ্টা বিশেষভাবে উদ্যোগী হন। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে জামায়াত আমিরকে অফিসে ডেকে নেন। দাবি-দাওয়া মেনে নেয়ার বিষয়ে আশ্বাস দেন। অবশেষে, ২৫ ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি স্থগিত হয়। তবে রাজধানীর বাইরে নেয়া হয়েছে আন্দোলনমুখর কর্মসূচি। কারাবন্দি আজহারুল ইসলামের বৃহত্তর রংপুর-দিনাজপুরে সভ-সমাবেশ। ২৬ ফেব্রুয়ারিতেই যোগ দিচ্ছেন স্বয়ং আমির ডা. শফিক। যুদ্ধাপরাধী আজহারুলকে মুক্ত করতে চলছে মিছিল, শ্লোগান, পথসভা। 

রাজনৈতিক ও সামরিক দ্বন্দ্ব বন্ধে সেনাপ্রধানের হুঁশিয়ারি 
খুন, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি বহুগুণে বেড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সামরিক বাহিনী নামানো হয়েছে। অন্যদিকে বিডিআর হত্যাকান্ড স্মরণে ‘সেনা শহীদ দিবস’ পালিত হলো। ২০০৯-এর ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্মম হত্যাকান্ড ঘটে। ৫৯ জন চৌকষ সামরিক অফিসারকে হত্যা করা হয়। ভারতের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ সরকার এটি ঘটায় বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত সামরিক অফিসারদের একাংশ সরব। নানাজনের বিরুদ্ধে আনীত হচ্ছে আভিযোগমালা। ফলে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হতে পারে বলেও দাবি উঠেছে। সেনাপ্রধান জে. ওয়াকারুজ্জামান দ্বন্দ্ব-বিবাদ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। বিডিআর হত্যাকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারসমূহের সাথে ছিলো মতবিনিময়। তাতে উচ্চকণ্ঠে সেনাপ্রধান বলেন, এনাফ ইজ এনাফ। প্রচলিত মামলার মাধ্যমেই অপরাধের বিচার হোক। বিডিআর বাহিনীই সেনা অফিসারদের হত্যা করেছে। এ নিয়ে নতুন কথাবার্তা বা দোষারোপের প্রয়োজন নেই। এত দ্বিধা-দ্বন্দ্বের কারণে অপরাধীচক্র সুযোগ পাচ্ছে। তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। নিজেদের বিভেদ না কমালে ড. ইউনূসের সরকার সফল হবে না। 
 

কমেন্ট বক্স