আর্লিং হলান্ডের জোড়া গোলে ৮৫ মিনিট পর্যন্তও ২–১ ব্যবধানে পিছিয়ে ছিল রিয়াল। ইতিহাদে এর আগে কখনোই ৯০ মিনিটের মধ্যে সিটিকে হারাতে না পারা রিয়াল সেখানেই লিখল প্রত্যাবর্তনের আরেকটি গল্প।
বদলি ব্রাহিম দিয়াজ ৮৬ মিনিটে সমতায় ফেরানোর পর শেষ বাঁশি বাজার আগমুহূর্তে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের পাস থেকে জুড বেলিংহামের গোল। আর প্রথম গোলটা কিলিয়ান এমবাপ্পের। ব্যস, ত্রিফলার একত্রে জ্বলে ওঠার রাতে নিজেদের ডেরায় পুড়ে ছাড়খাড় ম্যানচেস্টার সিটি।
৩–২ গোলের জয়ে চ্যাম্পিয়নস লীগের শেষ ষোলোর পথে অনেকটা এগিয়েও গেল রিয়াল। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি প্লে–অফ পর্বের ফিরতি লেগের ম্যাচটা যে লস ব্লাঙ্কোদের ডেরা সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে।
বিরতির আগে এগিয়ে গিয়েও চ্যাম্পিয়নস লীগে ম্যানচেস্টার সিটি কোনো ম্যাচ হারল প্রায় সাত বছর পর। সর্বশেষ তারা প্রথমার্ধে গোল করেও হেরেছিল ২০১৮ সালের এপ্রিলে লিভারপুলের বিপক্ষে। এরপর থেকে এমন ৩২ ম্যাচে (২৯ জয়, ৩ ড্র) অপরাজিত ছিল পেপ গার্দিওলার দল।
আর ঘরের মাঠে দুবার এগিয়ে গিয়েও প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লীগে কোনো ম্যাচ হারল সিটি। সব ভেন্যু মিলিয়ে এভাবে হারল তৃতীয়বার, প্রত্যেকবারই প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদ।
এদিন শুরু থেকেই সিটির দাপট। ১৯ মিনিটে আর্লিং হলান্ডের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকেরা।
পিছিয়ে পড়ার পরপরই গোলের জন্য হন্যে হয়ে ওঠে রিয়াল মাদ্রিদ। ২৫ মিনিটে ভিনিসিয়ুসের শট পোস্টে লেগে ফিরলে হতাশ হতে হয়।
৩০ মিনিটে সিটির জন্য বড় ধাক্কা হয়ে আসে গ্রিলিশের চোট। দারুণ খেলতে থাকা এই উইঙ্গারকে তুলে নিতে বাধ্য হন গার্দিওলা। তাঁর জায়গায় নামেন ফিল ফোডেন।
মাঠে নামার কিছুক্ষণের মধ্যে দারুণ এক সুযোগও তৈরি করেন ফোডেন। কিন্তু তাঁর নেওয়া জোরালো শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন রিয়াল গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া। একটু পরেই সাভিনিওর পাস থেকে হলান্ডের শট কর্নারের বিনিমিয়ে বিপদমুক্ত করেন রাউল আসেনসিও।
প্রথমার্ধে রিয়াল সেরা সুযোগটা পেয়েছিল যোগ করা সময়ে। কিন্তু অরক্ষিত কিলিয়ান এমবাপ্পে সিটির গোলরক্ষক এদেরসনকে এক পেয়েও বল উড়িয়ে মারেন। বিরতির পর ম্যাচের ৫৪ মিনিটেও সহজ সুযোগ নষ্ট করেন এমবাপ্পে। রদ্রিগোর ক্রস থেকে বল পেয়ে শট নেন এদেরসনের শরীর বরাবর। কিন্তু ৬০ মিনিটে আর ভুল করেননি এমবাপ্পে। ফেদে ভালভের্দের নেওয় ফ্রি কিক সিটির এক খেলোয়াড় আটকে দিলে বল পেয়ে যান দানি সিবায়োস। তাঁর উঁচু করে বাড়ানো বলে শট নেন এমবাপ্পে। যদিও দেখে মনে হতে পারে, শটটা যেভাবে নিতে চেয়েছিলেন, সেভাবে পারেননি। কিন্তু সেটাই ছিল এদেরসনকে ফাঁকি দেওয়ার কৌশল। ম্যাচে ১–১ সমতা।
এই মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে এমবাপ্পের গোল হলো ২৪টি। ইউরোপ সেরার মঞ্চে তার মোট গোল এখন ৫২টি।
৮০তম মিনিটে হলান্ডের সফল স্পট-কিকে আবার এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ফোডেনকে বক্সে সেবাইয়োস ফাউল করায় পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি।
চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ৪৮ ম্যাচে নরওয়ের তারকা হলান্ডের গোল হলো ৪৯টি।
৮৪তম মিনিটে রদ্রিগোর বদলি নামেন ব্রাহিম। দুই মিনিটের মধ্যে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান তিনি। ভিনিসিউসের শট এদেরসন ঠেকানোর পর জালে পাঠান ব্রাহিম।
আর তিন মিনিট যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে রেয়ালকে জয়ের উল্লাসে ভাসান বেলিংহ্যাম। সিটির একটি ভুল পাস থেকে আক্রমণে ওঠে রেয়াল। ভিনিসিয়ুস বক্সের বাইরে থেকে এগিয়ে আসা এদেরসনকে ফাঁকি দিয়ে বল দেন দূরের পোস্টে, ছুটে গিয়ে স্লাইডে জালে পাঠান ইংলিশ মিডফিল্ডার।
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি হবে ফিরতি লেগ, চ্যাম্পিয়ন্নস লীগে টানা চার মৌসুমে মুখোমুখি দল দুটির আরেকটি শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ের অপেক্ষা।
ঠিকানা/এসআর