বাংলাদেশি আমেরিকান তরুণ চিত্রশিল্পী জিহান ওয়াজেদের আঁকা ম্যুরাল উপলক্ষে জমাজমাট আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় তার আঁকা বেশ কয়েকটি ম্যুরাল ইতোমধ্যেই প্রবাসী ও বিদেশিদের কাছে বেশ প্রশংসিত হয়েছে। তার এই ম্যুরাল অঙ্কনকে সামনে রেখে গত ২ আগস্ট কমিউনিটি ম্যুরাল পেইন্ট পার্টির আয়োজন করে কুইন্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের মূল ভবন চত্বরে দুপুর ১২টা থেকে ৩ পর্যন্ত পার্টি ছিলো সবার জন্য উন্মুক্ত।
গত এপ্রিল মাসে নিউইয়র্ক সিটির হেলথ অ্যান্ড হসপিটাল বিভাগ তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন কুইন্স জেনারেল হাসপাতালের ম্যুরাল আঁকার জন্য মনোনিত করে জিহানকে। বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যামাইকার এই হাসপাতালের দু’টি দেয়ালে বিশালকায় দু’টি ম্যুরাল আঁকবেন জিহান ওয়াজেদ। এজন্য প্রাথমিক চুক্তিপত্র সম্পন্ন হয়েছে এবং প্রস্তাবিত ডিজাইন দেয়া হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এ সপ্তাহেই ম্যুরাল আঁকা শুরু করবেন জিহান।
শিল্পী জিহানের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে হাসপাতালের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন। তাৎক্ষণিকভাবে তারা টেবিলে বিছানো ক্যানভাসে পেইন্ট করেন এবং তাদের মতামত তুলে ধরেন নির্দিষ্ট তালিকাপত্রে। এ সময় কুইন্স হাসপাতালের সিইও নেইল জি ম্যুর-সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা সবাইকে অভ্যর্থনা জানান। 
জিহানের বাবা ডা. ওয়াজেদ খান ও মা পারভীন আকতার এই পার্টিতে অংশ নেন। কুইন্স হাসপাতালে বাংলাদেশি চিকিৎসক ডা. জুন্নুন চৌধুরী, ডা. ইউসুফ আল মামুন ও কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনসহ অংশ নেন অন্যান্যদের সাথে অনেক বাংলাদেশি।
উল্লেখ্য, জিহান চিত্রাঙ্কন ছাড়াও ভাস্কর্য, কোরিওগ্রাফি এবং সৃজনশীল নতুন মিডিয়ার সঙ্গে জড়িত। তিনি সিটির জ্যামাইকায় বেড়ে উঠেন। তার শিল্পকর্ম দেয়াল চিত্র ও নৃত্য দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং তিনিই প্রথম অগ্রবর্তী বাস্তববাদী শিল্পী, যাকে হেলথ এন্ড হসপিটালস কমিউনিটি ম্যুরাল প্রকল্পের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। 
কমিউনিটি ম্যুরাল প্রকল্প সিটির হাসপাতালের নান্দনিক সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশেও অবদান রাখে বলে প্রকল্পটি ইতোমধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। 
উল্লেখ্য, সিটির হেলথ এন্ড হসপিটালস নিউইয়র্ক সিটির সবচেয়ে বৃহৎ শিল্প সংগ্রাহক হিসেবেও সমাদৃত। শিল্পকর্ম সংগ্রহের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো এই কাজগুলো এক নিরাময় পরিবেশ সৃষ্টি করে, দৃষ্টিসুখের সৃষ্টি করে। হাসপাতালের রোগী, তাদের পরিবার এবং কর্মীদের নিরাময় সংস্কৃতিতে উৎসাহিত করতে ইতিবাচক ভুমিকা রাখে।
উল্লেখ্য, জিহান ওয়াজেদের স্টুডিও ম্যানহাটানের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে। তার অন্যতম শিল্পকর্মের মধ্যে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ভবন, নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক স্পোর্টস কমপ্লেক্স বিলি জিন কিং ন্যাশনাল টেনিস সেন্টার, এস্টোরিয়ায় ১৭৭ ফিট দীর্ঘ ম্যুরাল ‘ওয়েলকাম এস্টোরিয়া’ মুর্যালটি অন্যতম। এছাড়া নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন বরোতে বড় বড় মুরাল্য অঙ্কণ করেছেন জিহান ওয়াজেদ। মুর্যাল ছাড়াও নিউইয়র্কে ম্যানহাটানস্থ গ্যালারিতে তার বেশ কয়েকটি একক চিত্র প্রদর্শনী ব্যাপক সাড়া জাগায় মূলধারার দর্শকের মাঝে। স্টুডিওতে ছবি আঁকার পাশাপাশি তার নিজস্ব স্টাইলে ম্যুরাল আঁকছেন দেয়ালে। তার ম্যুরালের রয়েছে নিজস্ব ও নূতন ধারা। 
সম্প্রতি বাংলাদেশি-আমেরিকান ব্যবসায়ীদের প্রাণকেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় জিহানের আঁকা বাংলাদেশ ম্যুরাল ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে কমিউনিটিতে। ডাইভারসিটি প্লাজার দক্ষিণের ভবনটির প্রশস্থ দেয়ালে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ ম্যুরাল। পাল্টে গেছে স্থানটির চেহারা। গত ১৯ মে বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ম্যুরাল উদ্বোধন করেন সিটি কাউন্সিল মেম্বার শেখর কৃষ্ণান।
                           
                           
                            
                       
     
  
 

 ঠিকানা রিপোর্ট
 ঠিকানা রিপোর্ট  
                                
 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                
