যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ৯ হাজার ৭০০ কর্মীকে ছাঁটাই করার পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। চারটি সূত্র ৬ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। 
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির ১০ হাজারের মতো কর্মী রয়েছে। তবে সংস্থাটি মাত্র ২৯৪ জন কর্মীকে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে আফ্রিকা ব্যুরোতে ১২ জন এবং এশিয়া ব্যুরোতে মাত্র আটজন থাকবে।
এদিকে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইউএসএআইডির (ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট) মার্কিন কর্মকর্তারা তাদের শেষ কর্মদিবস পার করেছেন ৬ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার)। মার্কিন সময় অনুযায়ী শুক্রবারের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।  
এনিয়ে সংস্থাটির সাবেক প্রধান জে ব্রায়ান অ্যাটউড বলেন, এটা জঘন্য। অনেক মানুষ এতে বিপদে পড়বে। তবে এ নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোনো মন্তব্য পায়নি রয়টার্স। এর আগে গত সপ্তাহে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইলন মাস্ক ইউএসএআইডির কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ইউএসএআইডি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। 
ইলন মাস্ক বলেন, মার্কিন জনগণের করের অর্থ দিয়ে জৈব অস্ত্র গবেষণায় অর্থায়ন করেছে ইউএসএআইডি। সেইসঙ্গে সংস্থাটি প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর জন্য অর্থ ব্যয় করেছে। তাই সময় হয়েছে সংস্থাটির 'মরে যাওয়া'। এরপরেই সংস্থাটির কর্মী ছাটাইয়ের খবর প্রকাশ্যে এলো। এ ছাড়া গত ১ ফেব্রুয়ারি ইউএসএআইডির ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে সেখানে ‘সার্ভার আইপি ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়নি’ বলে একটি বার্তা ভেসে উঠে। 
সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দেয়। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী কয়েক বিলিয়ন ডলারের এ ধরনের বৈদেশিক সহায়তা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং করদাতাদের অর্থের অপচয় কি না, তা নিশ্চিত হতে পর্যালোচনা করে দেখা হবে।  
ঢাকা ছাড়ছেন ইউএসএআইডির কর্মকর্তারা
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইউএসএআইডির (ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট) মার্কিন কর্মকর্তারা তাদের শেষ কর্মদিবস পার করেছেন ৬ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার)। মার্কিন সময় অনুযায়ী শুক্রবারের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।  
 
২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির তহবিল স্থগিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার প্রশাসন সংস্থাটিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা করছে। ইতোমধ্যে ওয়াশিংটনে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে কর্মীদের না যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং ইউএসএআইডির ওয়েবসাইটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।  
বৃহস্পতিবার ঢাকায় ইউএসএআইডির মার্কিন কর্মকর্তাদের শেষ কর্মদিবস ছিল। দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করায় স্থানীয় কর্মীদের সঙ্গে একধরনের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, যা কর্মীদের বিদায়ের সময় আবেগঘন পরিবেশ তৈরি করে। তবে তহবিল স্থগিতের ফলে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।  
ঢাকায় ৬০-৭০ জন মার্কিন কর্মকর্তা ইউএসএআইডিতে কাজ করতেন। এক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, তহবিল স্থগিতের ঘোষণার পরপরই প্রথমে সংস্থার ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে যেসব মার্কিন কর্মকর্তার জরুরি চিকিৎসা বা সন্তানদের পড়াশোনা সংক্রান্ত বিশেষ পরিস্থিতি রয়েছে, তাদের কিছুটা সময় বাড়ানোর সুযোগ দেওয়া হবে। বাকিদের শুক্রবারের মধ্যে দেশ ছাড়তে হবে। এছাড়া ঢাকায় ২৫০-৩০০ জন বাংলাদেশি কর্মকর্তা ইউএসএআইডির বিভিন্ন প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন। তাদের চাকরি থাকবে কি না, নতুন করে কোথায় কাজ পাবেন—সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। সংস্থার কর্মকাণ্ড চালু থাকলেও অপেক্ষাকৃত কম খরচে পরিচালনার সম্ভাবনা রয়েছে।  
ইউএসএআইডির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এত বড় একটি সংস্থা হুট করে পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। আপাতত ৯০ দিনের জন্য কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে যদি বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করতে হয়, তাহলে মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন নিয়ে বিল পাস করতে হবে।  
ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর বিদেশে সরকারি ব্যয় কমানোর নীতিতে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সেই নীতির অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা সহায়তা ব্যতীত বাংলাদেশে ইউএসএআইডির অন্যান্য কার্যক্রম আপাতত তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
ঠিকানা/এসআর
                           
                           
                            
                       
     
  
 

 ঠিকানা অনলাইন
 ঠিকানা অনলাইন  
                                
 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                
