Thikana News
০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সিলেটে রিসোর্টে আটক করে বিয়ে দেওয়া হলো ৮ তরুণ-তরুণীকে

সিলেটে রিসোর্টে আটক করে বিয়ে দেওয়া হলো ৮ তরুণ-তরুণীকে ছবি সংগৃহীত
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকার রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ১৬ জন তরুণ-তরুণীকে আটকের পর ৮ জনকে তাৎক্ষণিক বিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাকি ৮ জনকে পরিবারের সদস্যদের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। বিয়ে দেওয়া ছেলেমেয়েরা সিলেটের বিশ্বনাথ, মোগলাবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা এলাকার বাসিন্দা।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) উপজেলার সিলাম এলাকার রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টে এ ঘটনা ঘটে। পরে রিসোর্টে আগুনও লাগানো হয়। আটক তরুণ-তরুণীদের পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইলে স্থানীয় প্রভাবশালীরা দেননি।

স্থানীয়রা জানান, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলাম এলাকার রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টে অসামাজিকতা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। পার্কে বেশ কয়েকটি বিশ্রাম কক্ষ রয়েছে। স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও প্রেমিক-প্রেমিকারা এসব কক্ষ ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ করে। এ সুযোগে পার্ক কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে। রোববার ছেলেমেয়েরা কয়েকটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কার্যক্রম চালাচ্ছে এমন খবর পেয়ে বেলা দুইটার দিকে স্থানীয়রা পার্কে এসে তাদের আটক করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় মোগলাবাজার থানা পুলিশ। কিন্তু আটকদের পুলিশের কাছে না দিয়ে এলাকার মুরব্বিরা তাদের অভিভাবকদের খবর দেন।

জানা যায়, বিএনপি নেতা তাজরুল ইসলাম তাজুলসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা আটক ছেলে-মেয়েদের পুলিশের কাছে না দিয়ে প্রত্যেকের অভিভাবককে ডেকে আনেন। এরপর ৮ জনকে বিয়ে দেওয়া হয়, অন্যদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ রিসোর্টটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পক্ষে-বিপক্ষে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

স্থানীয় কাজী আব্দুল বারী বলেন, ‘অসামাজিক কার্যকলাপের কারণে এলাকাবাসী ছেলেমেয়েদের আটক করেন। তারপর আমাকে খবর দিয়ে নেওয়া হয়। তখন এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে চার ছেলে ও চার মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময় আরও চার ছেলে ও চার মেয়েকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনটি বিয়ের দেনমোহর ১০ লাখ টাকা আর একটি বিয়ের দেনমোহর ১২ লাখ টাকা করা হয়েছে। এ সময় সময় বিএনপি নেতা তাজরুল ইসলাম তাজুল, ফজলু মিয়া ও শাহজাহান মিয়াসহ এলাকার অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সিলেট জেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব তাজরুল ইসলাম তাজুল বলেন, ‘অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে আটক করার খবর শুনে এলাকার প্রায় ২ হাজার মানুষ এসেছিলেন রিসোর্টে। আমরা চেষ্টা করেছি যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এ জন্য রিসোর্টের ফটক বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু অনেকে দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করেন। রিসোর্টে আগুন জেনারেটর থেকে লেগেছিল, তবে কোনো রুমে আগুন লাগেনি। অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ১৬ জন ছেলেমেয়েকে আটক করেছিলেন এলাকাবাসী। এর মধ্যে ৮ জনের বিয়ে ও বাকি ৮ জনকে পরিবারের সদস্যদের কাছে দেওয়া হয়েছে। তবে রিসোর্টে ছেলেমেয়ে আরও বেশি ছিল, তারা স্থানীয়রা আসার আগে চলে গেছে।’

মোগলাবাজার থানার ওসি মো. খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সকালে স্থানীয় লোকজন অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে রিসোর্টের ভেতরে যান। এ সময় কে বা কারা আগুন দিয়েছে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আগুন নেভান। বিয়ের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এলাকার জনগণ তাদের আটক করছে, আমাদের কাছে দেয়নি।’ 

দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঊর্মি রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি অবগত নন বলে জানান।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কেউ অপরাধ করলে পুলিশ তাকে ধরবে। আদালত বিচার করবে। কিন্তু আটক করে বিয়ে পড়ানোর কোনো আইন নেই। কীভাবে এটি করা হলো খোঁজ নিচ্ছি।’

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স