Thikana News
১৩ জানুয়ারী ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে শুরু হচ্ছে ট্যাক্স ফাইল

জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে শুরু হচ্ছে ট্যাক্স ফাইল সংগৃহীত
ট্যাক্স ফাইলিং শুরু হচ্ছে চলতি জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে। শেষ হবে ১৫ এপ্রিল। এই সময়ের মধ্যে যারা ট্যাক্স ফাইল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদেরকে একটি কথা খুবই গুরুত্বসহকারে মনে রাখতে হবে। তা হলো একটি পরিবারের সকল সদস্যের আয় এবং বিনিয়োগ-সংক্রান্ত সব তথ্য দিয়ে ফাইল করতে হবে। 
একটি পরিবারে একাধিক সদস্য থাকতে পারেন। যারা সিঙ্গেল, তাদের যদি স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের চেয়ে বেশি অর্থ ইনকাম থাকে, তাহলে তাদেরকে ট্যাক্স ফাইল করতে হবে। সে ক্ষেত্রে ফেডারেল ও স্টেট, কেউ সিটিতে থাকলে তার সেই সব ট্যাক্সেবল কোনো ইনকাম থেকে থাকলে তার জন্য তাকে নির্ধারিত কর দিতে হবে। কিন্তু এমন অনেকেই আছেন, যিনি সিঙ্গেল কিন্তু স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের চেয়ে কম তার ইনকাম, তাহলে তিনি ফাইল না করলেও কোনো সমস্যা নেই। কারণ তার কাছে সরকার কোনো কর পায় না। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, যারা স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের চেয়ে কম ইনকাম করেন, তারাও ট্যাক্স ফাইল করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তারা আয় করার সময়ে যে কর দিয়েছেন, সেই কর ফেরত পেতে পারেন। এই রিফান্ড পাওয়ার জন্য তাকে ট্যাক্স ফাইল করতে হবে। আরও বলা প্রয়োজন, যারা কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট, তাদের অনেক সময় ফাফসা আবেদন করার জন্য ট্যাক্স ফাইল করার প্রয়োজন হবে। যার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের চেয়ে বেশি ইনকাম আছে, তাকে ট্যাক্স ফাইল করতে হবে এবং ফাফসা ফাইল করার সময় তার আবেদনে আইআরএস থেকে তার তথ্য নেওয়ার ব্যাপারে অনুমতি দিতে হবে। যারা ট্যাক্স ফাইল করার উপযুক্ত নন, তারা আবেদন করার সময় লিখবেন যে তিনি ফাইল করেননি। আর কেউ ফাইল করে থাকলে তিনি আইআরএস থেকে তথ্য নেওয়ার জন্য অনুমতি দেবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিঙ্গেল ব্যক্তিদের অনেকেই অনেক অর্থ ইনকাম করেন। ব্যাচেলর, মাস্টার্স পাস করার পর চাকরি করেন। সেখানে তারা উচ্চ বেতন পান। কেউ কেউ এক লাখ ডলার বা এর বেশিও বেতন পান। অনেকেই আছেন ৩০-৪০ বছর কিংবা এর বেশি বয়সেও বিয়ে করেন না। কিন্তু তারা অনেক বড় চাকরি করেন ও অনেক অর্থ ইনকাম করেন। তাদেরকে তার আয় অনুযায়ী ট্যাক্স দিতে হবে। অনেক সিঙ্গেলের বাসা-বাড়ি রয়েছে। আবার বিভিন্ন ধরনের ইনভেস্টন্টে রয়েছে। সেখান থেকেও ভালো অর্থ আয় করেন। সে কারণেই তাদেরকে ওইসব আয়সহ সব ধরনের আয়ের রিপোর্ট করতে হবে। কেউ যদি একাধিক কাজ করেন, তাহলে একাধিক ডব্লিউ-২ থাকতে পারে অথবা ১০৯৯ থাকতে পারে। সে রকম সবগুলোর নথি পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারও বাসা-বাড়ি থাকলে তিনি ব্যাংকে ঋণ পরিশোধ করলে এ জন্য যে ইন্টারেস্ট দিয়েছেন, সেই ইন্টারেস্ট ও বাড়ির কিংবা বাসার ট্যাক্স পরিশোধ করে থাকলে সেই ট্যাক্সের অর্থ তিনি দেখাতে পারবেন এবং ক্রেডিটও পাবেন। তবে কতখানি ক্রেডিট পাবেন, এটা নির্ভর করবে তার অ্যাসেটটি কী ধরনের এবং কত পরিমাণ ট্যাক্স দিয়েছেন। কেউ দুই পরিবারের বাড়ি কিনলে সেখান থেকে ২৫ হাজার ডলার পর্যন্ত লোকসানও নিতে পারেন। সবকিছুুর নথিপত্র প্রমাণ হিসেবে রাখতে হবে।
যারা হেড অব হাউসহোল্ড হিসেবে ফাইল করবেন, তাদেরকেও সব ধরনের ইনকাম ও বিনিয়োগের নথিপত্র সংগ্রহ করতে হবে। একক মালিকানার ব্যবসা থাকলে সেটিও উল্লেখ করতে হবে। যারা ম্যারিড ফাইলিং জয়েন্টলি ফাইল করবেন, তাদেরও ফাইল করার জন্য কাজ করা সব প্রতিষ্ঠান থেকে আয়ের নথিপত্র ডব্লিউ-২ বা ১০৯৯ লাগবে। কেউ যদি একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, তাহলে একটি ডব্লিউ-২ হবে। কেউ একাধিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে একাধিক ডব্লিউ-২ কিংবা ১০৯৯ থাকবে। সে ক্ষেত্রে যার যার অবস্থান ও আয় অনুযায়ী তিনি নথি পাবেন। কারও বাড়ি থাকলে তিনি যে লোন পরিশোধ করেছেন, এ জন্য ব্যাংক বা মর্টগ্রেজ কোম্পানির কাছ থেকে নথি পাবেন। সেখানে বলা থাকবে, তিনি কত ডলার ইন্টারেস্ট পেমেন্ট করেছেন। অনেকেই বাড়ির জন্য ট্যাক্স পরিশোধ করে থাকেন, সেখান থেকেও নথি আসবে। যারা বাড়িতে থাকেন না, কন্ডো কিংবা কো-অপে থাকেন, তারাও রেশিও অনুযায়ী ট্যাক্স পেমেন্ট করে থাকেন। তারাও তাদের পরিশোধিত ট্যাক্সের জন্য নথি পাবেন। এ ছাড়া ম্যারিড ফাইলিং জয়েন্টলি ব্যক্তিদের ডিপেন্ডেন্ট সন্তান থাকে। তাদের জন্য তারা আর্নড ইনকাম ক্রেডিট, চাইল্ড ট্যাক্স ক্রেডিটসহ বিভিন্ন ট্যাক্স ক্রেডিট পাবেন। ফাইল করার সময়ে যথাযথ ও সত্য তথ্য দিয়ে সন্তানদের কেউ ডিপেন্ডেন্ট থাকলে তাকে ক্লেম করতে হবে। মনে রাখতে হবে, ম্যারিড ফাইলিং জয়েন্টলি হলে সবকিছ্ ুএকই ফাইলে হবে। কিন্তু অনেকেই আছেন, যারা ম্যারিড ফাইলিং সেপারেটলি করেন। তাদের সন্তান থাকলে যেকোনো একজন একটি সন্তানকে ডিপেন্ডেন্ট ক্লেম করতে পারেন। দুজন সন্তান হলে দুজনে দুজনকে ক্লেম করতে পারেন বা একজনও করতে পারেন। সন্তানের সংখ্যা যা-ই হোক না কেন, একবারই একজনের ক্লেম করা যাবে। কোনো একটি সন্তানকে বাবা কিংবা মা আলাদা করে একাধিকবার ক্লেম করতে পারবেন না। কোনোভাবেই একই সন্তানকে দুজন আলাদা আলাদা ক্লেম করে ক্রেডিট নিতে পারবেন না। চাইল্ড ট্যাক্স ক্রেডিট ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত সন্তানের জন্য পাওয়া যায়। আর আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পড়ালেখার জন্য ক্রেডিট কেবল ২৪ বছর পর্যন্ত ফুল টাইম স্টুডেন্ট হলে তাদের জন্য পাওয়া যাবে। আমেরিকান অপরচ্যুনিটি ক্রেডিট ও আর্নড ইনকাম পাওয়া যায় ২৪ বছর বয়সী পর্যন্ত ডিপেন্ডেন্ট সন্তানের জন্য। মনে রাখতে হবে, কেউ যদি তার সন্তানকে তার ডিপেন্ডেন্ট ক্লেম করেন, সে জন্য স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের নথি প্রমাণ লাগবে। অনেক সময় দেখা যায়, কোনো কোনো সন্তান কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করার সময় টিউশন ফির চেয়ে স্কলারশিপ বেশি পেয়ে থাকে। এমন হলে সকল খরচ বাদে ওই বাড়তি অর্থ বাবা-মায়ের ইনকাম হিসেবে বিবেচিত হবে। এ ক্ষেত্রে ওই বাড়তি অর্থের ট্যাক্স দিতে হবে। কেউ যদি রুম অ্যান্ড বোর্ডের জন্য অর্থ পান, তা যদি সব খরচের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে তার জন্য আমেরিকান অপরচ্যুনিটি ক্রেডিট পাওয়া যাবে না। এটি একজন স্টুডেন্ট কিংবা তার বাবা-মা দেখবেন তার সন্তানের জন্য প্রতিবছর কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি ১০৯৮ ইস্যু করে থাকে। সেখানে লেখা থাকে, তিনি কী পরিমাণ স্কলারশিপ ও গ্র্যান্ট পেয়েছেন আর তার কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি কত পরিমাণ অর্থ টিউশন ফি দিয়েছেন। যদি দেখা যায়, তিনি যে পরিমাণ অর্থ স্কলারশিপ ও গ্র্যান্ট পেয়েছেন, তা সমান সমান, তাহলে কিছু করতে হবে না। কিন্তু যদি বেশি হয়, তাহলে আমেরিকান অপরচ্যুনিটি ক্রেডিট দাবি করা যাবে না। যদি কম হয়, তাহলে দাবি করা যাবে। সমান হলেও যাবে।
এ বিষয়ে জাকির সিপিএ পিএলএলসির প্রেসিডেন্ট ও সিইও সিপিএ জাকির চৌধুরী বলেন, দেখতে দেখতে ট্যাক্স সিজন চলে এল। ট্যাক্স সিজনের ফাইল করার জন্য এ মাস থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে প্রায় সব সব ধরনের ট্যাক্স-সংক্রান্ত নথিপত্র পেয়ে যাবেন। যাদের বিনিয়োগ আছে, তাদের নথিপত্র পেতে ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লাগে। অন্যরা ৩১ জানুয়ারির মধ্যেই পেয়ে যান। ফলে যাদের বাসা-বাড়ি, ব্যবসা, কোনো বিনিয়োগ নেই; তারা ফেব্রুয়ারি মাসেই ট্যাক্স ফাইল করতে পারবেন। আর যাদের এসব খাতে বিনিয়োগ রয়েছে, তারা ফেব্রুয়ারির শেষ দিক থেকে মার্চে ফাইল করতে পারবেন। এবার ট্যাক্স ফাইলের পদ্ধতিতে তেমন কোনো বড় পরিবর্তন আসছে না। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহেই ট্যাক্স ফাইল শুরু হওয়ার কথা। হতে পারে সেটি ২৭ জানুয়ারি। ২৭ জানুয়ারি ফাইল শুরু হলেও সঙ্গে সঙ্গেই হয়তো সবাই ফাইল করতে পারবেন না সব নথিপত্র হাতে না পাওয়ার কারণে। তাই বলব, যাদের বাসা-বাড়ি আছে এবং বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগ রয়েছে, তাদেরকে কয়েকটি দিন অপেক্ষা করতে হবে।

কমেন্ট বক্স