মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় বাল্কহেডের ধাক্কায় পিকনিকের একটি ট্রলার ডুবে গেছে। এতে ৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ৫ আগস্ট শনিবার রাত আটটার দিকে উপজেলার তালতলা-গৌরগঞ্জ খালের রসকাঠি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত ছয়জন।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আবু জাফর রিপন জানান, এখন পর্যন্ত আটজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজন অপ্রাপ্তবয়স্ক, বাকি চারজন নারী।
নিহতরা হলেন এপি, তার তিন ছেলে রাকিবুল, শাকিবুল ও সাজিদুল; পপি, মাকসুদা ও হুমায়রা। এপিকে শনাক্ত করেছেন তার ভাই রুবেল।
লৌহজং ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার কায়েস আহম্মেদ বলেন, ‘রাত আটটার দিকে আমরা ঘটনার খবর পাই। ঘটনাস্থলে আসার পর দেখি স্থানীয়রা চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। আমরা একজনের লাশ উদ্ধার করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘পিকনিকের ট্রলারে ৪৬ জন আরোহী ছিলেন।’ এখনো ছয়জন নিখোঁজ আছেন বলে জানান তিনি।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরের পর সিরাজদিখান উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের ৪৬ জন শিশু, নারী ও পুরুষ পদ্মা নদীতে ট্রলারে করে পিকনিকে যান। পিকনিক শেষে ট্রলারটি উচ্চশব্দে সাউন্ড সিস্টেম বাজিয়ে রাতে তালতলা-গৌরগঞ্জ খাল দিয়ে লতব্দী ইউনিয়নের দিকে যাচ্ছিল। বিপরীত দিক থেকে একটি বাল্কহেড বালু আনতে পদ্মা নদীর দিকে যাচ্ছিল। রাত আটটার দিকে ট্রলারটি লৌহজংয়ের রসকাঠি এলাকায় আসে। তখন বাল্কহেডটি ওই ট্রলারের ওপর উঠিয়ে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে ট্রলারটি পানিতে তলিয়ে যায়। অধিকাংশ আরোহী সাঁতরে পাড়ে উঠতে পেরেছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, উঠতি বয়সী ছেলেরা ট্রলারে করে পিকনিকে যায়। বিকট শব্দে সাউন্ড সিস্টেম বাজায়। আশপাশে কোনো কিছু তারা খেয়াল করে না। প্রত্যেক বর্ষা মৌসুমে এই খাল দিয়ে শত শত বাল্কহেড বেপরোয়াভাবে চলাচল করে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা তারা এ পথে যাতায়াত করে। এতে প্রায় সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে। গত বছর এমন একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সে সময় প্রশাসনের নজরদারিতে কিছুদিন বাল্কহেড চলাচল বন্ধ ছিল। এবার আবার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তারা। এ পথে বাল্কহেড চলাচল বন্ধ করার দাবি জানান স্থানীয়রা।
ঠিকানা/এনআই