আমরা দিনের শুরুতে অনেকেই চা পান করি। কেউ খালি পেটে পান করি, আবার কেউ নাশতার সময় পান করি। আমরা সবাই প্রতিদিন এভাবেই দিনের সকালটা শুরু করি।
আমরা জানি, যে কোনো খাবার অতিরিক্ত খেলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অথচ চা প্রতিদিন খাওয়া হয়— সে এক কাপ হোক কিংবা তিন-চার কাপ। কেউ সেই এক কাপ চা খায় দিনের শুরুতে, আবার কেউ সন্ধ্যাবেলা। চলুন আমরা জেনে নিই প্রতিদিন সকালে বাসি মুখে চা খেলে লাভ হয় নাকি ক্ষতি?
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের মতে, চা ও কফি দুটোতেই ক্যাফেইন নামের একটি যৌগ রয়েছে। এটি দেহের সেন্টাল নার্ভাস সিস্টেমকে স্টিমুলেট করে। তাই চা-কফি খাওয়া যেন নেশায় পরিণত হয়। দিনে আপনি ৩০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করতে পারেন। এটা শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর। এক কাপ ১৫০ মিলি চায়ের মধ্যে ৩০-৬৫ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। সুতরাং এক কাপ চা খাওয়ায় কোনো ক্ষতি নেই। কিন্তু দিনে দুই কাপের বেশি চা না খাওয়াই ভালো।
দিনে এক কাপ চা খেলে কোনো ক্ষতি নেই। কিন্তু ক্ষতি হতে পারে যদি চায়ের সঙ্গে ‘টা’ থাকে। অনেকেই চায়ের সঙ্গে বিস্কুট, পকোড়া, মুড়িসহ অন্যান্য স্ন্যাকস খান। সেগুলো খাওয়া চলবে না। এতে দেহে বেশি পরিমাণ ক্যালোরি প্রবেশ করে। যখন চায়ের সঙ্গে ৪-৫টা বিস্কুট খান, দৈনিক চাহিদার বেশি পরিমাণ ক্যালোরি শরীরে প্রবেশ করে। বেশিরভাগ স্ন্যাকসেই ৩০০-৪০০ ক্যালোরি থাকে। সুতরাং যখনই আপনি চায়ের সঙ্গে ‘টা’ খাবেন, দেহে একাধিক রোগের ঝুঁকি বাড়বে। সুগার লেভেল বেড়ে যাবে এবং ওজনও বাড়তে থাকবে।
এক কাপ চা খাওয়ায় কোনো ক্ষতি হবে না শরীরের। কিন্তু সঠিক সময় এবং সঠিক উপায়ে চা খেতে হবে। অন্যথায় চায়ের উপকারিতা মিলবে না, উল্টো শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেবে।
খালি পেটে চা নয়
অনেকেই দিনের শুরুটাই করেন 'বেড টি' দিয়ে। খালি পেটে ক্যাফেইন গ্রহণ করলে দেহে কর্টিসল (স্ট্রেস হরমোন) হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। এর জেরে আপনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। অর্থাৎ মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। তা ছাড়া খালি পেটে চা খেলে অ্যাসিডিটি হতে পারে। ভারি খাবার খাওয়ার পর চা খাওয়া চলবে না। চায়ের অ্যাসিডিক বৈশিষ্ট্য এবং এতে থাকা ট্যানিন খাবার থেকে আয়রন শোষণে বাধা তৈরি করে। পাশাপাশি বিকাল ৪টার পর চা খাবেন না। এতে রাতে ঘুমের সমস্যা হবে।
কখন চা খাবেন?
দুটো ভারি খাবারের মাঝে চা খেতে পারেন। কিংবা ভারি খাবার খাওয়ার ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা পর চা খেতে পারেন। চায়ের সঙ্গে চিনি-দুধ মেশাবেন না। লাল চা খেতে পারেন। অর্থাৎ লিকার চা। এ ছাড়া বাজারে বিভিন্ন ধরনের ফ্লেভার, ফুলের তৈরি চা খাওয়া যায়, সেগুলো খেতে পারেন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ১০ ঘণ্টা আগে শেষ চা-কফি খান। এতে ঘুমের মান উন্নত হবে, লিভার থেকে টক্সিন বেরিয়ে যাবে এবং স্ট্রেস লেভেল কমবে। এমনকি হজমেরও সমস্যা হবে না।
ঠিকানা/এএস