কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে পুত্রবধূকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় পারুল আক্তার (৪৯) নামের এক নারীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মো. হাবিবুল্লাহ এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পারুল করিমগঞ্জ উপজেলার উলুখলা গ্রামের আনোয়ারুল হকের স্ত্রী। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার দুই আসামি নিহত গৃহবধূর স্বামী আসিকুল হক ও ফুফুশাশুড়ি বিবি হাওয়া আক্তারকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। মামলার অন্য আসামি মাসিকুল হক শিশু হওয়ায় শিশু আদালতে তার বিচার চলমান। এ ছাড়া মামলার আরেক আসামি নিহত গৃহবধূর শ্বশুর আনোয়ারুল হক খোকন বিচার চলাকালীন মারা গেছেন।
আদালতের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি এম এ আফজল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার নথির বরাতে আফজাল জানান, ২০১৩ সালে করিমগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ উলুখলা গ্রামের আসিকুল হকের সঙ্গে মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের নাজির মিয়ার মেয়ে পাপিয়া আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই শ্বশুর, শাশুড়ি, দেবর ও ফুফুশাশুড়ির পরামর্শে স্বামী আসিকুল হক দুই লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করে তাকে অত্যাচার-নির্যাতন করতেন। এর মধ্যে পাপিয়া অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তারা অত্যাচার বাড়িয়ে দেন। ২০১৫ সালের ২ মে যৌতুকের জন্য মারপিট করে পাপিয়ার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ৭ মে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত পাপিয়ার ভাই সিরাজুল ইসলাম পাপিয়ার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, দেবর ও ফুফুশাশুড়িকে আসামি করে মামলা করেন। ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর এসআই এসএম জহিরুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত বৃহস্পতিবার রায় দেন।
ঠিকানা/এনআই