পাকিস্তানের করাচি থেকে পণ্যবাহী একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছিল গত ১১ নভেম্বর (সোমবার)। এটি ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের পর করাচি থেকে সরাসরি চট্টগ্রামে নোঙর করা প্রথম কোনও জাহাজ। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো দুই দেশের মধ্যে নৌপথে সরাসরি যোগাযোগ শুরু হলো।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, পানামার পতাকাবাহী (YUAN XIANG FA ZHAN) নামের কনটেইনার জাহাজটি দুবাই থেকে করাচি হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে গত ১১ নভেম্বর (সোমবার)। এতে ৩৭০ একক কনটেইনার পণ্য ছিল। পরদিন জাহাজটি পণ্য খালাস করে ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশ্যে বন্দর ছেড়ে যায়। তবে ওসব কনটেইনারে কী ধরনের পণ্য আছে, তা এখনও জানা যায়নি। পণ্যের আমদানিকারকরা কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি জমা দিলে খালাসের সময় জানা যাবে, কী ধরনের পণ্য করাচি থেকে আমদানি করা হয়েছে।
কী ধরনের পণ্য পাকিস্তান থেকে আমদানি হয়েছে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি জমা পড়লে এটি জানা যাবে। করাচি থেকে কনটেইনারবাহী প্রথম জাহাজ চট্টগ্রামে আসার পরদিন ছেড়ে গেছে। জাহাজটি দুবাই থেকে করাচি হয়ে চট্টগ্রাম পৌঁছে গত ১১ নভেম্বর। এটি থেকে ৩১৭টি পণ্যবাহী কনটেইনার চট্টগ্রামের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে খালাস করা হয়। এরপর ১২ নভেম্বর ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় জাহাজটি।’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে নৌপথে করাচির নতুন পথ চালু হয়েছে। ইতোমধ্যে এই পথে আসা প্রথম জাহাজ বন্দর ঘুরে গেছে। ১৯৭১ সালের পর এই প্রথম করাচি থেকে পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এলো। যেসব কনটেইনার খালাস হয়েছে, সবকটি পাকিস্তান থেকে আনা হয়নি। কিছু কনটেইনার দুবাই বন্দর থেকেও এসেছে। এগুলোতে কী ধরনের পণ্য আছে, তা আমাদের জানার উপায় নেই। আমদানিকারক যখন পণ্য খালাস নিতে কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করবেন, তখন জানা যাবে কনটেইনারে কী আছে।’ তবে এ নিয়ে অভিজ্ঞমহলে এক ধরনের কৌতুল সৃষ্টি হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জাহাজটি দুবাই থেকে করাচি হয়ে চট্টগ্রাম এসেছিল। চট্টগ্রাম থেকে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া হয়ে আবার দুবাই যাবে। আশা করি, এই পথে জাহাজটি নিয়মিত চলবে।
গত ১৩ নভেম্বর ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, করাচি থেকে সারাসরি পণ্যবাহী একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে, যা দুই দেশের মধ্যে প্রথম সরাসরি সামুদ্রিক সংযোগ।
এতে আরও বলা হয়েছে, এই সরাসরি রুটটি সরবরাহ শৃঙ্খলা আরও সহজ করবে। পণ্য পরিবহনে সময় কমাবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রায় দুই হাজার ৩০০টি কনটেইনার ধারণক্ষমতার জাহাজটি বিভিন্ন ধরনের পণ্য বহন করে এনেছে। যা দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বাণিজ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রতিফলন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ এটিকে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি এই অঞ্চলে আরও সমন্বিত বাণিজ্য নেটওয়ার্ক জোরদারের একটি বড় পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন।
ঠিকানা/এসআর