সদ্য সমাপ্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিধস জয়ের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ডেমোক্র্যাট দলের হয়ে নিউইয়র্ক থেকে পুনর্নির্বাচিত হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ। ৮ নভেম্বর তিনি বলেছেন, নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয়ের পর দেশটি ‘ফ্যাসিজম ও কর্তৃত্ববাদের’ সময়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। নিজের এই মন্তব্য অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও সম্প্রচার করেন তিনি।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন পর্যন্ত ৩১২টি ইলেক্টোরাল ভোট পেয়েছেন, যা হোয়াইট হাউসে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০ ভোটের চেয়ে অনেক বেশি। ২০১৬ সালের নির্বাচনে তার প্রাপ্ত ইলেক্টোরাল ভোট ছিল ৩০৪টি। অন্যদিকে ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের পরিবর্তে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া কমলা হ্যারিস বর্তমানে ২২৬টি ইলেক্টোরাল ভোট পেয়েছেন। কমলা হ্যারিস ইতিমধ্যে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন।
ওকাসিও-কর্টেজ বলেন, ‘আমরা এমন একটি সময়ে এসে পৌঁছেছি, যেখানে মানুষকে ফ্যাসিজম ও কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে রক্ষা করার জন্য ব্যাপক আন্দোলনের প্রয়োজন। এটি এমন একটি যুগ, যা আমাদের সামনে রয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন নাগরিকদের বিরুদ্ধে সেনা ব্যবহারের কথা বলেছেন, যাদের তিনি তার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে গণ্য করেন। কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থায় এটি অস্বাভাবিক নয় যে রাজনৈতিক বিরোধী বা আইন পরিষদের বিরোধীদের আটক করা হয়। এটি এমন একটি বিশ্ব, যেখানে আমরা বাস্তবিকই প্রবেশ করতে চলেছি।’
উল্লেখ্য, নির্বাচনের আগে অক্টোবর মাসে ফক্স নিউজে উপস্থিত হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘ভেতর থেকে শত্রুদের’ কারণে হুমকি থাকতে পারে। সে সময় তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, বড় সমস্যা হলো ভেতর থেকে আসা শত্রু। আমাদের মধ্যে কিছু খুব খারাপ লোক, কিছু মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি এবং চরম বামপন্থী উন্মাদনা রয়েছে। প্রয়োজনে জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী বা সামরিক বাহিনী দিয়ে এগুলো সহজেই মোকাবিলা করা উচিত।’
হাউস প্রতিনিধি ওকাসিও-কর্টেজ আরও বলেন, কমলা হ্যারিসের প্রচারণার পারফরম্যান্সের সমালোচনা করা উচিত নয়। তিনি মনে করেন, কমলার পরাজয়ের কারণ হতে পারে ‘নারীবিদ্বেষ’। তিনি বলেন, কমলা হ্যারিস এমন একটি দায়িত্ব পেয়েছিলেন, যা এর আগে কেউ কখনো পাননি। ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে তাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা তৈরি করতে হয়েছে, যেখানে একটি বিশাল ফ্যাসিবাদী হুমকি বিদ্যমান ছিল।
৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দল থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ ভোট পেয়ে নিউইয়র্কের প্রতিনিধি হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ।