জনপদ মানেই ইতিহাস, জনমানুষের জেগে ওঠার গল্প। পৃথিবীর সব জায়গারই নিজস্ব স্বকীয়তা আছে, আছে আদি ও আলাদা পরিচয়। আছে হতাশার অন্ধকার থেকে আলোকিত হওয়ার গল্প।
স্থপতি ও নগরবিদ জান গেহির উক্তি : ‘If you come to a city & see many children, itÕs a sure sign of city quality.’
যেকোনো এলাকা শিশুর জন্য নিরাপদ মানে ওই এলাকা সব লিঙ্গ, বয়স, শ্রেণি ও পেশার মানুষের জন্য নিরাপদ। এলাকার রাস্তায় আনমনে হাঁটতে থাকা কিশোর, তার আশপাশের পরিবেশ থেকেই খুঁজে পাবে তার ভবিষ্যতের লক্ষ্য।
নিউইয়র্কের বহু জাতি, বহু ভাষা, বহু ধর্ম, বহু সংস্কৃতি ও বহু বর্ণে মিলিত এক মানুষ জলপ্রপাত, যা সারা বিশ্বের জন্য আমেরিকার এক অনন্য সম্ভাবনার জীবন্ত উদাহরণ। অভিবাসীদের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য আমেরিকা, এ গল্প বর্তমান আমেরিকার। এর পেছনের গল্প অনেক যুদ্ধের, অনেক নির্যাতন ও বেদনার। আমেরিকার সমৃদ্ধ অর্থনীতি মজবুত হয়েছে আফ্রিকা থেকে জোর করে ধরে আনা কালো মানুষদের শ্রমের ওপর। বর্ণবাদ পোষণ করা যে মানুষেরা জগতের মানুষকে মানবিকতার জ্ঞান দিচ্ছে এককালে তাদের ফরসা চেহারার আড়ালে ছিল এক ভয়ংকর রূপ। আমেরিকার আজ উন্নত যা কিছু অর্জন, তা বৈচিত্র্যের ঐক্য থেকেই এসেছে। কোনো একক জাতি বা গোষ্ঠীর হাত ধরে আমেরিকা আজকের অবস্থানে আসেনি।
২০১৩ সাল-কুইন্সের যে অ্যাপার্টমেন্টে বাস করতাম, তার এক বেডরুমের ভাড়া ছিল ১৪০০ ডলার। খোঁজ নিয়ে জানলাম, ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার কন্ডোমিনিয়ামে বাসা ভাড়া কুইন্সের তুলনায় অনেকটা কম। দেখেশুনে পার্কচেস্টার কন্ডোমিনিয়ামেই বসবাসের সিদ্ধান্ত নিলাম। আত্মীয়স্বজন সকলেরই বসবাস কুইন্সে, ব্রঙ্কসে আত্মীয় বা পরিচিত কেউ তখন ছিল না। আমি ব্রঙ্কসে বসবাস করতে যাচ্ছি শুনে আমার আত্মীয়স্বজন সবাই নিষেধ করতে লাগলেন, ‘ব্রঙ্কস বসবাসের জন্য নিরাপদ জায়গা নয়।’
অবাক শিশুর মতো ব্রঙ্কসের ইতিহাস জানার আগ্রহ নিয়ে ব্রঙ্কসে বসবাস শুরু করলাম এবং ব্রঙ্কসকে ভালোবেসে ওখানেই বাড়িঘর কিনে স্থায়ী হয়ে গেলাম। ব্রঙ্কসের প্রতি আকর্ষণের আরেকটি প্রধান কারণ, ১৯২৮ সাল থেকে আমেরিকায় অভিবাসী আমার আব্বা দীর্ঘদিন ব্রঙ্কসে বসবাস করেছিলেন। ১৯৪৫ সালে Puerto Rican বংশোদ্ভূত Juanita Morales এর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ও কয়েক বছর ব্রঙ্কসেই বসবাস করেছিলেন। আমার সৎমা জুনাইতাও তখন ছিলেন ব্রঙ্কসের বাসিন্দা।
সেই সময় আমেরিকা বর্ণবাদে আক্রান্ত। ইমিগ্র্যান্টদের প্রতি তাদের নাক উঁচু তুচ্ছতাচ্ছিল্য ভাব প্রকাশিত ছিল। তখনকার নিউইয়র্কে যেসব এশিয়ান বসবাস করতেন, তারা প্রথম দিকে কালো ও স্প্যানিশ অধ্যুষিত এলাকা হারলেম ও লোয়ার ইস্ট সাইডে আবাস গড়ে তুলতেন। একই স্থানে ভিন্ন ভিন্ন জাতি-বর্ণের মানুষের বসবাসের ফলে মারামারি, রাহাজানি, খুন, ছিনতাই ছিল প্রতিদিনের ঘটনা। আমার আব্বার কাছ থেকে শুনেছি, হারলেম, ব্রুকলিন, ব্রঙ্কস ছিল অপরাধপ্রবণ এলাকা। পুলিশও এসব এলাকায় ঢুকতে ভয় পেত। পকেটে ১০ ডলার নিয়ে কেউ রাস্তায় বের হওয়ার সাহস পেত না। আব্বা বলেছেন, কত দিন স্যালারি পাওয়ার পর নিজের ঘরের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে দস্যুরা ঝাপিয়ে পড়ে সব ছিনিয়ে নিত, প্রতিরোধ করলে কিল-ঘুষির সঙ্গে ধারালো ছুরি ঢুকিয়ে দিত শরীরে।
শৈশবে আব্বার মুখ থেকে শোনা বর্ণনায় আমি মন্দাক্রান্ত, দাঙ্গাক্রান্ত নিউইয়র্কের চিত্র কল্পনা করছি আর বুঝতে চেষ্টা করছি, আমার আব্বা ও ওনার মতো অন্য দেশ থেকে আসা অভিবাসীরা জীবনধারণের পাশাপাশি উন্নত আমেরিকা গড়তে কত সংগ্রাম করেছিলেন। আমার আব্বার কাছ থেকে শোনা অনেক বছর আগের অনুজ্জ্বল, বৃদ্ধ ব্রঙ্কস যেন জিয়ন কাঠির ছোঁয়ায় টগবগে যৌবনে ফিরে এসেছে।
পার্কচেস্টার এলাকা যেন একখণ্ড বাংলাদেশ। স্টার্র্লিংয়ে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ওখানে একটা রাস্তার নাম ‘বাংলাবাজার’। স্টার্লিংয়ে বাংলাদেশি অভিবাসীদের কলতানে, ধূমায়িত চায়ের কাপে বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে আমেরিকান রাজনীতি নিয়েও চলে সরগরম আলোচনা।
বিশ্বের রাজধানী বা প্রাণকেন্দ্র হিসেবে খ্যাত নিউইয়র্ক, তার পাঁচটি সন্তান, মানে পাঁচ বরো। ১২০ জাতির মানুষ, ১৬০টি ভাষা প্রচলিত আছে। সুপ্রাচীন নিউইয়র্ক সিটির আত্মার স্পর্শ পেতে আগ্রহী হলে তার শক্ত পাথুরে আভরণ সরিয়ে তার ইতিহাস জানতে হবে।
ন্যাটিভ আমেরিকান শব্দ ‘মান্নাহাট্রা’ থেকে ম্যানহাটন নামকরণ করেন রবার্ট গেট (Robert Guet)। নেদারল্যান্ডসের গভর্নর বডির সদস্য হেনরি হাডসন (Henry Hudson) স্ট্যাটেন আইল্যান্ড নাম রাখেন, নেদারল্যান্ডসের এলাকা ব্রুকলেনের নামানুসারে ব্রুকলিন ও ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লসের স্ত্রী কুইন ক্যাথেরিন ব্রাগাঞ্জার (Queen Catherine Braganza) নামানুসারে কুইন্সের নামকরণ করা হয়। অনেক মানুষ আশ্চর্য হয়ে প্রশ্ন করে অথবা অনেকেই জানে না যে নিউইয়র্কের পাঁচটি বরোর মধ্য শুধু ব্রঙ্কসের নামের আগে ‘দ্য’ ব্যবহার করা হয় কেন? এই নামকরণের পেছনে এক ঐতিহাসিক গল্প আছে।
নিউইয়র্কের পাঁচটি বরোর মধ্যে ব্রঙ্কসই শুধু মেইনল্যান্ড, বাকি চারটি আইল্যান্ড। ৫৭ স্কয়ার মাইল এরিয়া নিয়ে (৪২ বর্গমাইল স্থলভাগ ও ১৫ বর্গমাইল জলভাগ) ব্রঙ্কস নদীর নামানুসারে বরোর নাম ব্রঙ্কস হয়েছে। ব্রঙ্কস নদী ও বরোর নামকরণ হয়েছে সুইডেনে জন্মগ্রহণকারী এবং পরে আমেরিকান অভিবাসী জোনস ব্রঙ্ক (Jonas Bronck) নামক ব্যক্তির নামে।
দ্য ব্রঙ্কসের একটি ডাকনামও আছে ‘Boogie Down BronxÑHip-HOP’ (হিপ-হপ) মিউজিকের জন্মস্থান হিসেবে ব্রঙ্কস বরোর নাম উল্লেখ আছে। ঘন ও বারুচ কলেজ অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে যখন ব্রঙ্কসের বাসিন্দাদের একটি ডাকনাম নির্ধারণ করতে পোল পরিচালনা করে, তখন বেশির ভাগ মানুষ ‘বুগি ডাউন’ ব্রঙ্কসের পক্ষে সায় দেয়। এর আগে এলাকাটি ‘রানাকোয়া’ বা শেষ স্থান নামে পরিচিত ছিল। রানাকোয়া পরবর্তী সময়ে ব্রঙ্কসল্যান্ড নামে পরিচিতি লাভ করে এবং আগের ‘আকুয়াহং’ নদী ব্রঙ্কস রিভার নামে অভিহিত হয়।
নিউইয়র্কের অন্য বরোগুলো যখন হিপ-হপ সংস্কৃতি থেকে নিজেদের দূরে রাখছিল, তখন Do or die (ডু অর ডাই) স্লোগান নিয়ে ব্রঙ্কসবাসী উল্লসিত এবং গর্ব অনুভব করছিল।
১৬৩৯ সালে জোনস ব্রঙ্কস নিউ আমস্টারডামের ডাচ বসতিতে আসেন এবং স্থানীয় ন্যাটিভ আমেরিকানদের কাছ থেকে হারলেম নদীর পূর্ব দিকে ১৫০ স্ট্রিট লাইনের নিচের দিকের ৫০০ একর জমি ক্রয় করেন। ১৯৩৯ সালে ব্রঙ্কসে ইউরোপীয় উপনিবেশ শুরু হয়। ব্রঙ্কস কাউন্টি হওয়ার আগে ইস্ট ব্রঙ্কস ও ওয়েস্ট ব্রঙ্কস নামে ব্রঙ্কসকে দুটি বড় অংশে ভাগ করে দেওয়া হয়। জোনাস ব্রঙ্কস ব্রঙ্কসে তার ক্রয় করা জমিতে শুধু তামাক চাষ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। ১৬৪৩ সালে জোনাস ব্রঙ্কস মারা যান। সে সময় নিম্ন হাডসন উপত্যকায় ডাচ ও ন্যাটিভ আমেরিকানদের মধ্য দ্বন্দ্ব চলছিল। জোনাস ব্রঙ্কসের বিধবা স্ত্রী আবার বিয়ে করেন এবং তার নতুন স্বামীর সঙ্গে বর্তমান আলবেনির পাশে শান্তিপূর্ণ জায়গায় চলে যান। তাতে জোনাস ব্রঙ্কসের তামাক চাষে নিয়োজিতরা এবং ভাড়াটেরা হতাশ হয়ে পড়েন এবং বেশির ভাগই নতুন কাজের সন্ধানে খামার এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যান।
Bronx is Burning-নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে একটি অন্ধকার সময়ের নির্যাতনের বেদনার স্মৃতি। ব্রঙ্কসের দাবানল ইতিহাসের এক ন্যক্কারজনক বহুমুখী অংশ। ১৯৭০ সালে ব্রঙ্কসের কিছু অংশ অগ্নিসংযোগে জর্জরিত হয়েছিল। এটি নিঃসন্দেহে এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের বেঁচে থাকার এবং ভয়ানক পরিস্থিতি মোকাবিলার লড়াই ছিল। ব্রঙ্কসের বাসিন্দারা মৌলিকভাবে বর্ণবাদী এবং শ্রেণিবৈষম্যের শিকার ছিল।
মানুষের সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা তার বাড়ি। জীবনযাপনের একপর্যায়ে নিরাপদ জেনেও যেকোনো মুহূর্তে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে সেই বাড়ি। দুর্ভাগ্যবশত দক্ষিণ ব্রঙ্কসের বাসিন্দারা ১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে এমন নিষ্ঠুর বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছিল। P B.S ডকুমেন্টারি Decade of fire-এ সাউথ ব্রঙ্কসের জ্বলন্ত ভবনগুলোতে আগুন লাগার পেছনের গল্প উন্মোচিত হয়েছে। ১৯৭০ সালে দক্ষিণ ব্রঙ্কসের প্রায় ৮০ শতাংশ আবাসিক ভবন আগুনে ধ্বংস হয়ে যায় এবং প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছিল। তখনকার মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছিল, সেই ভয়াবহ আগুন লাগার জন্য ভবনের বাসিন্দারাই দায়ী। ভিভিয়ান Vazquez Irizarry, যিনি সেই সময় ব্রঙ্কসেই বড় হয়েছেন। তিনি ওই ডকুমেন্টারিতে ব্রঙ্কসের আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডের পেছনের বাস্তব ইতিহাস তুলে ধরতে চেষ্টা করেছেন।
ইরেজারির গল্প শুরু-যখন তার দাদা-দাদি চাকরির সুযোগের জন্য পুয়ের্তোরিকো থেকে ব্রঙ্কসের কেন্দ্রস্থলে বসবাস শুরু করেন। ১৯৫০ সালে আমেরিকা জাতিগত ও বর্ণবিদ্বেষে জর্জরিত ছিল। দক্ষিণ ব্রঙ্কস আমেরিকার বা নিউইয়র্কের সবচেয়ে সাংস্কৃতিকভাবে সমন্বিত এলাকাগুলোর মধ্যে ছিল একটি। সংগীতযুদ্ধ নামে বৈচিত্র্যময় ভঙ্গির যে সংগীত তারা তৈরি করেছিল, যা ছিল মানুষের উপভোগের, প্রতিবাদের এবং নিজেদের নিমজ্জিত রাখার কৌশল। Red Lineing-রেড লাইনিং, যা ১৯৩০ সালের দিকে চালু ছিল। তা দিয়ে ৫ থেকে ১০ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ বা পুয়ের্তোরিকান জনসংখ্যা অধ্যুষিত এলাকাকে ক্ষতিকারক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। মানচিত্রে এই জায়গাগুলোতে লাল রেখা আঁকা হতো, যার অর্থ ওই লাল দাগ দেওয়া এলাকার লোকেরা ঋণ, গৃহবিমা ও অগ্নিবিমা পাওয়ার যোগ্য নয়। রেড লাইন করা এলাকার আবাসিক ভবনগুলোকে জীর্ণ ও পুরোনো আখ্যা দিয়ে সেখানে বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করা হতো। যার ফলে এলাকাগুলোর বসবাসের অবস্থাকে একেবারেই শোচনীয় করে দেওয়া হয়েছিল।
১৯৬৪ সালে ওই ভবনগুলোতে কয়েকটি ভয়াবহ দাবানলের পরও ফায়ার ডিপার্টমেন্টের কোনো সেবা পর্যন্ত ছিল না। কখনো কখনো ভবনগুলো আগুনে ধ্বংস হওয়ার পর ফায়ার ডিপার্টমেন্টের মানুষ আসত। ১২টি ফায়ার কোম্পানি ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত ব্রঙ্কসে বন্ধ ছিল। তারপর ১৯৭৭ সালের Blackout-এ পুরো এলাকা ভেঙে পড়েছিল। ১৯৭০ সালে সাউথ ব্রঙ্কসের প্রায় প্রতিটি ভবন আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিল। তখন বাড়িওয়ালারা তাদের ভবনগুলো ফটকাবাজদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিল। এক লাখেরও বেশি বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছিল। ফলে সাউথ ব্রঙ্কসে বসবাসকারীরা বাস্তুচ্যুত বা বাস্তুহারা হয়ে পড়েছিল। জেমস বাল্ডউইনের ভাষায়Ñএই আগুন ছিল ক্ষমতাশীলদের ‘নিগ্রো অপসারণ প্রকল্প’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে দীর্ঘস্থায়ী মন্দার কারণে ব্রঙ্কস মাঝারি আয়ের এলাকা থেকে নিম্ন আয়ের এলাকায় পরিণত হয়। দারিদ্র্যের কারণে কিছু এলাকায় সহিংস অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ১৯৮০ এর দশকে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত অবকাঠামো পুনরুদ্ধার করার চেষ্টায় অভিবাসীদের সাশ্রয়ী মূল্যে আবাসন সরবরাহকল্পে বহুসংখ্যক অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করে এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্র্যান্ড নেইম শপিং কমপ্লেক্স খোলা হয়। আবাসিক সমস্যার সমাধান ও কাজের সংস্থান হওয়ায় দক্ষিণ ব্রঙ্কস পুনরুজ্জীবিত হতে শুরু করে। ১৯৯৭ সালে ন্যাশনাল সিভিক লিগ ব্রঙ্কসকে অল আমেরিকা সিটি হিসেবে মনোনীত করে, যা ব্রঙ্কসকে পতন থেকে পুনরুদ্ধারের স্বীকৃতি দেয়।
বর্তমানে সমৃদ্ধ ব্রঙ্কসে অপরাধ কমে গেছে। বাড়ির মালিকেরা তাদের সম্পত্তির উচ্চ মূল্যের জন্য একতাবদ্ধ হচ্ছেন। ব্রঙ্কসজুড়ে বাড়ি ও জমির চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রঙ্কস এখন আর আগের মতো ভয়ংকর বা অনিরাপদ বরো নয়। অন্যান্য বরোর মতো সীমিত সংখ্যক অপরাধ দমনে নিউইয়র্ক পুলিশের তৎপরতা প্রশংসনীয়।
Edgar Allan Poe (Writer & Poet), Jennifer Lopez (Singer), Stanley Kubrick (Filmmaker) ইয়াঙ্কি স্টেডিয়াম, ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, সিটি আইল্যান্ড, ওরচার্ড বিচের মতো ব্রঙ্কসে আছে দুর্দান্ত সুন্দর অনেক জায়গা।
১, ২, ৪, ৫, ৬, ই, উ ও মেট্রো নর্থ নামের ট্রেন পাথুরে রাস্তায় অগণিত যাত্রী ধারণ করে রাতদিন বিরামহীন ঝমঝমিয়ে চলছে। জলপথে ম্যানহাটনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য নিউইয়র্ক ফেরি সার্ভিস একটি চমৎকার, আনন্দদায়ক এবং দ্রুতগামী পরিবহন।
এত দমন নীতির পরও ব্রঙ্কস আক্ষরিক অর্থে পোড়া ছাই থেকে ফিনিক্স পাখির মতো উন্নত অবস্থানে আরোহণ করে আমেরিকান ড্রিমের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
-নিউইয়র্ক