বাংলা ট্রাভেলস সম্প্রতি প্যারালিগ্যাল সার্ভিস চালু করেছে। এই সার্ভিসের মাধ্যমে তারা ইমিগ্রেশনের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের ফর্ম পূরণ ও তা জমাদানের ব্যবস্থা করে। নিউইয়র্কের পাশাপাশি ঢাকার বনানীতেও এই ট্রাভেল এজেন্সিটি নতুন অফিস চালু করেছে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের ট্রাভেলিং টিকিট এবং কানাডা, ভারত, সৌদি আরব, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এক থেকে দশ বছরের মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সার্ভিস ও বিভিন্ন দেশের ভিসা পাওয়ার বিষয়ে সহায়তা করে আসছে বাংলা ট্রাভেলস। মানি এক্সচেঞ্জ, ভিসা সার্ভিস, বিভিন্ন ধরনের ওমরাহ প্যাকেজ, হজ প্যাকেজ সেবাসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা রয়েছে। সৌদি আরবে ১০ বছরের মাল্টিপল এন্ট্রি সার্ভিস, ইন্ডিয়া মাল্টিপল, মেডিকেল ভিসা, কানাডায় ১০ বছরের মাল্টিপল ভিসা, ইউএস ৫ বছরের মাল্টিপল ভিসার বিভিন্ন প্যাকেজ আছে। এ ছাড়া সেনজেন ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য তারা সহায়তা করে। এই ভিসা দিয়ে ইউরোপের ২৭টি দেশ ভ্রমণ করা যাবে। বাংলা ট্রাভেলসের ওয়েবসাইট ডিজিটালওয়ানট্রাভেলস-এ গিয়েও বিভিন্ন সেবার বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।
বাংলা ট্রাভেলসের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মোহাম্মদ বি হোসেন বেলাল ঠিকানাকে বলেন, আমাদের রয়েছে হজ ও ওমরাহ প্যাকেজ। ওমরাহ প্যাকেজ ১৫৫০ ডলার দিয়ে শুরু। পাঁচতারকা মানের হোটেলে থাকলে এ জন্য রয়েছে বিশেষ প্যাকেজ। কেউ চাইলে দেশে যাওয়ার পথে ওমরাহ হজ করে যেতে পারেন। ওমরাহ প্যাকেজ, ওমরাহ ভিসা, হোটেল ও ট্রান্সপোর্ট ও মোয়াল্লেম রয়েছে। এই প্যাকেজের সময়, দিন, ক্যাটাগরি সবকিছু বিবেচনা করেই দেওয়া হয়। তিনি বলেন, অত্যন্ত ভালো ও উন্নতমানের সেবা দিয়ে আমরা ওমরাহ হজের প্যাকেজ দিয়ে থাকি। বছরে কেবল হজের সময় ছাড়া অন্য সব সময়ই আমরা ওমরাহ প্যাকেজের ব্যবস্থা করে থাকি। এখন সুপারসেল চলছে। জেএফকে থেকে ঢাকার রিটার্ন টিকিট আমরা দিচ্ছি মাত্র ৭৪৯ ডলারে। সেই সঙ্গে সামান্য কিছু সার্ভিস ফি রয়েছে। আমাদের এই সেবা আয়াটা এবং এআরসি অনুমোদিত। এমিরেটস, কুয়েত এয়ারওয়েজ, কাতার এয়ারলাইসেন্স, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স, আমেরিকান এয়ারলাইন্স, ডেল্টা এয়ারলাইন্স, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও ইতিহাদের টিকিট সেবা রয়েছে। এখন আগামী বছরের হজ প্যাকেজের রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলা ট্রাভেলস সম্প্রতি প্যারালিগ্যাল সার্ভিস চালু করেছে। এই সার্ভিসের মাধ্যমে ইমিগ্রেশনের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের ফর্ম পূরণ ও তা জমাদানের সব ব্যবস্থা করে দিই আমরা। পাশাপাশি প্যারালিগ্যালের সঙ্গে কেউ পরামর্শ করতে চাইলে সেই সুযোগও আছে। অ্যাসাইলাম, পারিবারিক পিটিশনসহ ইমিগ্রেশনে বিভিন্ন ধরনের স্ট্যাটাসেও আমরা আবেদন করতে সহায়তা করি। আমরা চাই একজন মানুষ যাতে তার পূর্ণাঙ্গ সেবা আমাদের কাছ থেকে পেতে পারে।
মোহাম্মদ বি হোসেন বেলাল বলেন, বাংলা ট্রাভেলসের বয়স কয়েক বছর হলেও আমার ব্যবসায়িক জীবন এই নিউইয়র্কে প্রায় ২৫ বছর। আমার ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কাস্টমারদের সর্বোচ্চ সেবা দিচ্ছি। আগে আমি ডিজিটাল ওয়ানের ব্যানারে ছিলাম, পরে বাংলা ট্রাভেলসের ব্যানারে ব্যবসা পরিচালনা করছি। ডিজিটাল ওয়োনের সঙ্গে আমি এখনো আছি। তিনি বলেন, আমাদের এখানে টিকিটের দাম তুলনামূলক অনেক কম। কারণ, আমরা বেশির ভাগ এয়ারলাইন্স থেকে সরাসরি টিকিট কিনি। তাই আমরা কম দামে ট্রাভেল টিকিট দিতে পারি। কাস্টমাররাও কম দামে টিকিট কিনে খুশি। প্রতিবছর এখান থেকে ১৫-১৬ মিলিয়ন ডলারের লেনদেন হয়ে থাকে। আমাদের বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের স্টক রয়েছে।
বাংলা ট্রাভেলসের প্রেসিডেন্ট ও সিইও বলেন, অনেকেই ওমরাহ হজের জন্য অনেক বেশি ডলারের প্যাকেজ দিয়ে থাকেন। এটা বাইরে অনেকেই ২১৯০ ডলার থেকে শুরু করে ২৫০০ ডলারও নিয়ে থাকেন। আমরা তা নিই না। আমাদের এখানে প্যাকেজ মূল্য অনেক কম। আমরা ওমরাহ হজের জন্য মাত্র ১৫৫০ ডলার নিই। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ওমরাহ ভিসা নিয়ে থাকি। এ ছাড়া ১৭৯০ ডলারে সাত দিনের জন্য ওমরাহ প্যাকেজ দিচ্ছি। এর মধ্যে রয়েছে মক্কায় ওমরাহ হজ পালন এবং মদিনায় দুই জায়গাতেই যাওয়ার সুযোগ। সেই সঙ্গে মক্কা ও মদিনায় হোটেলগুলো সরাসরি বুকিং করি। এ জন্য কম দামে হোটেল পাই। টিকিটও কম দামে পাই। আসলে সাত দিনের ওমরাহ প্যাকেজের মধ্যে সবকিছুই রেখেছি, কেবল খাওয়া ছাড়া। খাওয়ার ব্যাপারটি যাত্রীরা নিজেরাই ব্যবস্থা করবেন। আমাদের কাজের জন্য কোনো মধ্যস্বত্বভোগী নেই। ফলে আমরা সহজেই এটি করতে পারি। এ ছাড়া দিন কম হলে আরও কম টাকায় প্যাকেজ দিতে পারি। আগে ১০ বছরের জন্য বিজনেস ভিসা নেওয়া যেত। প্রায় দুই মাস হলো এটি বন্ধ হয়ে গেছে। এখন ১০ বছরের ট্যুরিস্ট ভিসা নেওয়ার সুযোগ আছে, যাদের আমেরিকান পাসপোর্ট রয়েছে। সৌদি আরবে আমাদের নিজস্ব টিম রয়েছে, যারা সেখানে সরাসরি সেবা দিয়ে থাকেন। ওই টিমে যারা আছেন, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। তারা অনেক তথ্য জানেন। আল্লাহর রহমতে আমাদের সেবা নিয়ে যারা ওমরাহ পালন করে এসেছেন, তারা অনেকেই ফিরে এসে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। আমরাও তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি আরও বলেন, আমাদের বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানির এজেন্সিশিপ রয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য গ্রাহককে সেবা দিয়ে থাকি। মানি এক্সচেঞ্জে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ ট্রানজিকশন হয়। অত্যন্ত বিশ্বস্ততা ও আস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের কাছে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রেরণ করে থাকি। ডলারের রেটও আমরা বেশি দিচ্ছি।
তিনি বলেন, নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় আমাদের অফিস। এই অফিসে ১৫ জনের বেশি স্টাফ কাজ করেন। এ ছাড়া মদিনায় দুজন ও মক্কায় দুজন স্টাফ রয়েছেন। বাংলাদেশেও আমরা নতুন অফিস করেছি। ঢাকায় বনানী বাজারের কাছে আমাদের অফিস। ঢাকা অফিস থেকে আমরা ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস দিয়ে থাকি। ঢাকার কেউ ভিসা, টিকিটিংয়ের সেবা নিতে চাইলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবেন। তবে বাংলাদেশি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ভিসার মেয়াদ এক রকম আর আমেরিকান পাসপোর্টের জন্য ভিসার মেয়াদ ভিন্ন। কারণ আমেরিকান পাসপোর্টধারীরা বিভিন্ন দেশে ইন্টারভিউ ছাড়াই ১০ বছরের ভিসা পেয়ে থাকেন।
বাংলা ট্রাভেলসের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মোহাম্মদ বি হোসেন বেলাল জানান, তাদের মাল্টি সার্ভিসের বিভিন্ন সেবা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বাংলাদেশ ও আমেরিকার পাসপোর্টের জন্য আবেদন, রিনিউ এবং নো ভিসার আবেদন ফরম পূরণ, জন্মসনদ, পাওয়ার অব অ্যাটর্নিসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা। এ জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়ে আসতে হবে। এখানে পাসপোর্ট দ্রুত পাওয়ার জন্য এক্সপিডায়েট আবেদন করা হয়। কেউ সময়মতো পাসপোর্ট পাচ্ছেন না কিন্তু তার জরুরি ভ্রমণ করা দরকার। আমরা দ্রুত পাসপোর্ট পেতে তাদের সহায়তা করি। কানাডার ভিসাও প্রসেসিং করে থাকি। কারও যদি আমেরিকার ভিসা থাকে, তিনি চাইলে কানাডার ভিসা নিতে পারেন। এরপর কানাডা ও আমেরিকা দুই দেশেই তারা আসা-যাওয়া করতে পারবেন। কানাডা ছাড়াও আমরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং ভারত, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের ভিসা পেতে আবেদন করতে সহায়তা করি। বাংলা ট্রাভেলসের মোবাইল কর্নারে রয়েছে সেল ফোন কেনার সুবিধা। কাস্টমাররা তাদের পছন্দমতো যেকোনো ধরনের সেল ফোন কিনতে পারেন। এই সেল ফোনের ওপরও আমরা বিশেষ সুবিধা দিয়ে থাকি। আমরা অনেক কম দামে মোবাইল ফোন বিক্রি করছি। এ ছাড়া রয়েছে মোবাইল ফোনের বিভিন্ন এক্সেসরিজ। আমরা ডিএমভিতে আইডির জন্য, লার্নার পারমিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স রিনিউয়ের আবেদন এবং বিভিন্ন ধরনের আইডির জন্য আবেদন করতে সহায়তা করি। বাসায় ইন্টারনেট সুবিধা নেওয়ার আবেদন কীভাবে করতে হয়, সে বিষয়েও আমরা সহায়তা করে থাকি। তিনি বলেন, নিউইয়র্কে একই আমব্রেলার নিচে যাতে কাস্টমাররা আসতে পারেন, আমরা সেই চেষ্টা করছি। যারা নিউইয়র্কে আছেন, তারা সরাসরি এসে সেবা নিতে পারেন। অনলাইনে প্রয়োজনীয় সব নথিপত্র এবং পেমেন্ট দিয়েও সেবা নেওয়া যাবে। আশা করছি, কাস্টমাররা আমাদের সেবা নেবেন। আমরা সব সময় কাস্টমারদের সঙ্গে আছি।