এই জন্য পররাষ্ট্র সচিব অ্যাডাপ্টেশনের জন্য প্রয়োজনীয় জলবায়ু অর্থায়নের ঘাটতি এবং অ্যাডাপ্টেশনের জন্য গৃহীত ব্যবস্থায় সীমাবদ্ধতার বিষয়সমূহের উপর আলোকপাত করেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের অব্যাহত সহায়তা কামনা করেন। পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন এইসব বিষয় অবহিত করেন ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সহযোগিতা কামনা করেন। জাতিসংঘের উচ্চ-পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠক-ছবি-জাতিসংঘে বালাদেশের স্থায়ী মিশন
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন থেকে জানানো হয়, ১৪ অক্টোবর পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মোঃ জসিম উদ্দিন এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল ফর ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স লি জুনহুয়া-এর মাঝে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্র সচিব ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লব’-এর আকাঙ্খা অনুযায়ী অন্তর্র্বর্তী সরকার কর্তৃক গৃহীত বাংলাদেশে চলমান সংস্কার কর্মসূচী সম্পর্কে আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেলকে অবহিত করেন। এই সংস্কার কার্যক্রমসমূহ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য, জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের পাঁচ দশকের সম্পর্কের ভিত্তিতে, বিশেষত জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ কর্তৃক প্রযুক্তি ও নীতিগত সহায়তা প্রদানের উপর গুরুত্বারোপ করেন পররাষ্ট্র সচিব।
বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনা সরকারের একটি শীর্ষ অগ্রাধিকার উল্লেখ করে তিনি কর ফাঁকি ও অবৈধ আর্থিক প্রবাহ রোধে জাতিসংঘ হতে সহযোগিতার আহ্বান জানান। বাংলাদেশ এলডিসি হতে উত্তরণের সময়ে এবং উত্তরণ পরবর্তী পর্যায়ে আন্তর্জাতিক সমর্থনের প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দেন তিনি। কোভিড-১৯ মহামারী এবং বৈশ্বিক সংঘাতের ফলে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বাংলাদেশসহ অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য এসডিজি অর্জন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে, পররাষ্ট্র সচিব, জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর অফিসের উন্নয়ন সহযোগিতাসহ, সামগ্রিকভাবে জাতিসংঘের অধিকতর সহযোগিতা কামনা করেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশের নেতৃত্বে সাধারণ পরিষদে ০৬ মে পল্লী উন্নয়ন দিবস সম্পর্কিত গৃহীত রেজ্যুলেশনে, জাতিসংঘের ইকোনমিক এন্ড সোস্যাল এ্যফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টকে এই দিবস পালনের বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসাবে নির্বাচন করায়, স্বাগত জানান পররাষ্ট্র সচিব।
জাতিসংঘের উচ্চ-পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠক-ছবি-জাতিসংঘে বালাদেশের স্থায়ী মিশন
আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল জুনহুয়া, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটির চলমান সভায় বাংলাদেশের সভাপতিত্বের প্রশংসা করেন এবং জাতিসংঘ সচিবালয় হতে সর্বাত্মক সমর্থনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, বিশেষত সরকারী প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা খাতে সহায়তার মাধ্যমে, জাতিসংঘের ইকোনমিক এন্ড সোস্যাল অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশকে সংস্কার প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে পারে। পরররাষ্ট্র সচিব বলেন, এলডিসি হতে উত্তরণ প্রকৃতপক্ষে একটি নতুন সূচনা এবং এলডিসি হতে উত্তরণ হওয়া দেশসমূহের জন্য অগ্রাধিকারমূলক ব্যবস্থা হতে সহায়তা অব্যাহত থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। এসডিজি বাস্তবায়নের বিষয়ে, তিনি ২০২৫ সালে স্পেনে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের গুরুত্ব তুলে ধরেন, এবং সম্মেলনে উদ্ভাবনী অর্থায়ন, টেকসই ঋণ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সংস্কারসহ বৈশ্বিক উন্নয়ন সহায়তাকে শক্তিশালী করার প্রয়াস থাকবে বলে উল্লেখ করেন আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল জুনহুয়া।এই বৈঠকের পূর্বে, পররাষ্ট্র সচিব মোঃ জসিম উদ্দিন, জাতিসংঘ মহাসচিবের ক্লাইমেট এ্যকশন ও জাস্ট ট্রানজিশন বিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা সেলউইন চার্লস হার্টের সাথেও বৈঠক করেন। বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পর্যাপ্ত জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করাসহ প্যারিস চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে বাংলাদেশের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশ অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ উল্লেখ করেন।
ঠিকানা/এসআর