হাজার হাজার ভক্ত, পূজারী আর পর্যটকদের উপস্থিতিতে দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। সরকারি ছুটি থাকায় প্রতিমা বিসর্জনের অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতি ছিল। নেয়া হয়েছিল বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই দেশের সবচেয়ে বড় বিসর্জন অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়েছে। এ বছর ২৪৫ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে।
১৩ অক্টোবর (রবিবার) দুর্গাপূজার কারণে সরকার ঘোষিত ছুটির শেষ দিন ছিল। সমুদ্রসৈকতে বিসর্জন অনুষ্ঠান দেখতে হাজার হাজার ভক্ত, পূজারী, সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাড়াও দেশি-বিদেশি পর্যটকরা আগে থেকেই ভিড় করেছিল কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে।
সমুদ্রসৈকতের লাবনী পয়েন্টে কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে দুর্গাপূজার সমাপনী ও প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এদিন দুপুর ৩টার পর থেকে সমুদ্রসৈকতের লাবনী পয়েন্টে একে একে আসতে থাকে প্রতিমাগুলো। বিকেল ৪টার পর সৈকতের লাবনী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট মানুষের ভিড় হয়ে যায়।
প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, বিশেষ অথিতির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মো. রহমতউল্লাহ, সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও বিএনপির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল, টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার আল আসাদ মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইয়ামিন হোসেন, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামিম আরা সপ্না, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র সারোয়ার কামাল, এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা জাহাঙ্গীর কাসেম, কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উদয় শংকর পাল মিঠু, কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দীপক শর্মা দিপুসহ অনেকে।
নীলফামারী থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক ফিরোজ মাহমুদ বলেন, কক্সবাজার ঘুরতে এসে দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্যটি অবলোকন করতে পারলাম, এটা আমার ও আমার পরিবারের জন্য বাড়তি পাওয়া। সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজনের পাশাপাশি রাখাইন সম্প্রদায়ের অনেককে দেখা গেছে সমুদ্রসৈকতের বিসর্জন অনুষ্ঠান।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দীপক শর্মা দিপু জানান, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের লাবনী পয়েন্টে ৪৯টি মন্ডপের ২৪৫টি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রহমতুল্লাহ বলেন, দেশের সবচেয়ে বৃহৎ এই বিসর্জন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি কক্সবাজার জেলা পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাবসহ সবগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা কাজ করেছে।
টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রেজনের পুলিশ সুপার আল আসাদ মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, সনাতন সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বৃহৎ বিসর্জন ও আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা বেশ কয়েকদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, দেশের সবচেয়ে বৃহৎ বিসর্জন কক্সবাজারে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ বৃহৎ অনুষ্ঠানটি শেষ করতে কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন। সনাতন সম্প্রদায়ের পাশাপাশি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে এই অনুষ্ঠানটি নিজেদের মনে করে সহযোগিতা করেছেন।
ঠিকানা/এএস