দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘শিগগিরই উপদেষ্টা পরিষদের আকার বাড়তে পারে’। প্রতিবেদনে বলা হয়, নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা পরিষদের আকার শিগগিরই আরো বাড়তে পারে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাজে অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা উপদেষ্টা পরিষদে আসতে পারেন বলে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে একজন চিকিৎসক এবং দুজন সাবেক সচিব অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত হতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্প্রতি তৃতীয় দফা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে দ্রুত নির্বাচন কিংবা নির্বাচন কবে হবে, সেই রোডম্যাপ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো চাপ দিয়েছে। যদিও সরকারের তরফ থেকে আগেই বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের জন্য যে কমিশন গঠন করা হয়েছে তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও আলোচনার পর নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করা হবে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, সংস্কারসহ অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজ দ্রুত শেষ করতে প্রয়োজনে উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে। ফলে শিগগিরই উপদেষ্টা পরিষদে তিন-চারজন নতুন উপদেষ্টা যুক্ত হবেন।
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি) আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী দল থেকে পদত্যাগের পর আলোচনা হচ্ছে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান হতে পারেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, সরকারের উচ্চ পদে নিয়োগের বিষয়ে তিনি অনেকের কাছে শুনেছেন। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কিছু জানেন না।
তিনি বলেন, ‘আমাকে রাষ্ট্রের কোনো দায়িত্ব দেওয়া হলে পালন করতে সমস্যা নেই।’ দল থেকে পদত্যাগের বিষয়ে সোলায়মান চৌধুরী বলেন, তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেননি। এবি পার্টির চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আহ্বায়কের পদ ছেড়েছেন। আগামী ডিসেম্বরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি এবি পার্টির চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন।
নির্বাচনকে পক্ষপাতমুক্ত রাখার জন্য আহ্বায়কের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এখন কাউন্সিলররা আমাকে ভালো মনে করলে ভোট দেবেন।’ অন্তর্বর্তী সরকারের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টাসহ এই সরকারের সদস্যসংখ্যা ছিল ১৭। এরপর এক সপ্তাহের ব্যবধানে গত ১৬ আগস্ট আরো চারজন উপদেষ্টা যুক্ত করা হয়। তবে আলোচনায় ছিল গত ১৬ আগস্ট পাঁচজন উপদেষ্টা যুক্ত হচ্ছেন। এর পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকারে আরো নতুন উপদেষ্টা যুক্ত হওয়ার বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে একটা সরকার যে কাজ করে, সেটা তো করছেই। এর সঙ্গে সংস্কারের জন্য আরো কিছু উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে কাজ তো অনেক। এই চাপটা যদি আরো কয়েকজন শেয়ার করেন, তাহলে তাঁরা সহজে আরো অনেক কাজ করতে পারবেন। তাই আমার মনে হয়, সরকারে আরো কয়েকজন উপদেষ্টা যুক্ত হলে ভালোই হবে। তবে এটা প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পরিষদ ভালো বলতে পারবে।’
আলোচনায় যেসব মন্ত্রণালয়
সরকারের মন্ত্রণালয়-বিভাগ রয়েছে ৫৮টি। এসব মন্ত্রণালয়-বিভাগে সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ছিলেন ৪৫ জন। একাদশ সংসদের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী ছিলেন ৪৭ জন। ড. ফখরুদ্দীন আহমদ সরকারের আমলে উপদেষ্টার সংখ্যা ছিল ১৬। এরপর নানা কাজের সংস্কারের পরিকল্পনা নিয়ে গঠন করা সরকারে উপদেষ্টা আছেন ২১ জন। স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বর্তমান সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনেক কাজ। একই সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয়েও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। পরিকল্পনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কাজ করছেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এর মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আওয়ামী লীগের অনেক রাজনৈতিক প্রকল্পসহ নানামুখী চ্যালেঞ্জ আছে। এদিকে তিনটি করে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন অর্থ ও বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে সালেহউদ্দিন আহমেদ; আসিফ নজরুল আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। সহজে কাজ করার জন্য এসব মন্ত্রণালয়ে নতুন মুখ যুক্ত হতে পারে। আবার গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোতেও পরিবর্তন আসতে পারে।
প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ‘১২৬ অস্ত্রধারী শনাক্ত, গ্রেপ্তার ১৯’। প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে অস্ত্র হাতে গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে যাচ্ছেন এক যুবক। পরে নিশ্চিত হওয়া যায়, ওই যুবক ঢাকা উত্তর সিটির ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ। তিনি সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাতিজা। গত ৪ আগস্ট রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছিল। সেদিন আসিফের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালিয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ঠিক এক দিন আগে গত ৪ আগস্ট মোহাম্মদপুরে এ রকম আরেকটি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। সেদিন মোহাম্মদপুরের বছিলা সড়কেও ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছোড়া হয়েছিল। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ঢাকা উত্তরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের আরেকজন সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান ওরফে রাজীব এবং সাবেক সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যক্তিগত সহকারী মাসুদুর রহমান ওরফে বিপ্লব আগ্নেয়াস্ত্র হাতে গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে যাচ্ছেন।
গত জুলাই ও আগস্টের শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকার যেসব এলাকা উত্তাল হয়ে উঠেছিল, এর মধ্যে মোহাম্মদপুর অন্যতম। এর মধ্যে ১৭–২১ জুলাই এবং ৪ আগস্ট মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বছিলা পর্যন্ত সড়কে অবস্থানকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করা হয়েছিল। আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে মোহাম্মদপুর এলাকায় দলবল নিয়ে সক্রিয় ছিলেন সাবেক দুই কাউন্সিলর আসিফ ও রাজীব এবং বিপ্লব। গত ৫ আগস্ট দুপুরের পর তাঁরা আত্মগোপনে চলে যান। এখন পর্যন্ত তাঁদের কাউকেই গ্রেপ্তার করা যায়নি।
ইত্তেফাক
শিক্ষাক্রমে ঘনঘন পরিবর্তন নিয়ে দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান সংবাদ ‘বারবার হোঁচট খাচ্ছে শিক্ষার্থীরা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষাক্রমে বারবার পরিবর্তনে বারবার হোঁচট খাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। স্বাধীনতার পর দেশে শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন এসেছে সাত বার। এই সময়ে মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তন হয়েছে তিন বার। সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন হয়েছে গত দেড় দশকে। ১৯৭৭ সালে প্রথম শিক্ষাক্রম প্রণয়নের পর ১৯৮৬ সালে পাঠ্যবইয়ে পরিমার্জন করা হয়। ১৯৯২ সালে প্রাথমিক স্তরে যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রমে রূপান্তর করা হয়, ১৯৯৫ সালে মাধ্যমিক স্তরে উদ্দেশ্যভিত্তিক শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন করা হয়। পরে ২০০২ সালে প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের কিছু পাঠ্যবইয়ের পরিমার্জন করা হয়।
এরপর ২০১২ সালে সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করা হয়। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে চলে আসছে পরীক্ষানির্ভর মূল্যায়ন পদ্ধতি। তবে এই শিক্ষাক্রম বাদ দিয়ে হুট করে ২০২৩ সাল থেকে অভিজ্ঞতানির্ভর মূল্যায়ন শুরু করেছিল সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার। এ ব্যাপারে শিক্ষাবিদদের গঠনমূলক সমলোচনা বা পরামর্শও গ্রহণ করা হয়নি। বর্তমানে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছর চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালুর মধ্য দিয়ে মাধ্যমিক পর্যন্ত সব শ্রেণিতেই তা চালুর কথা ছিল।
নতুন শিক্ষাক্রমে শিখন, শেখানোর পন্থা, মূল্যায়ন ব্যবস্থাসহ শিক্ষার প্রচলিত পদ্ধতিই বদলে ফেলা হয়েছিল। সাধারণ ধারার স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেড় কোটির বেশি শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনের এ পরিবর্তন অভিভাবকরা মেনে নিতে পারেননি। অভিভাবক মহলে তুমুল সমালোচিত নতুন শিক্ষাক্রম থেকে গত ১ সেপ্টেম্বর মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। শিক্ষকদের প্রস্তুতির ঘাটতি, পাঠ্য বিষয়, মূল্যায়ন নিয়ে অস্পষ্টতা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাবকে দায় দিয়ে এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
পাঠ্যপুস্তক নিয়ে রাজনীতির খেলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষাবিদরা বলেন, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে একের পর এক শিক্ষাক্রম পরিবর্তনে পালটে যায় শ্রেণিকক্ষের পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। কোনো কোনো সময় শিক্ষকরাও সুস্পষ্টভাবে বুঝে উঠতে পারেন না—কীভাবে নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের অভ্যস্ত করে তুলবেন। সেই সঙ্গে বিভ্রান্ত হচ্ছেন অভিভাবকরাও। এ কারণে যথাযথ পাইলটিং ও গবেষণা করে শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনতে হবে।
যুগান্তর
‘সম্পদ থেকে আয় ১৮ বছরে সর্বনিম্নে’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে দেশের ব্যাংক খাতের ওপর দিয়ে বলতে গেলে সুনামি বয়ে গেছে। ব্যাংক লুটপাটের পাশাপাশি ব্যাংক দখল হয়েছে। দখল করেই লুটপাটকারীরা ক্ষান্ত হয়নি, ঋণের নামে আমানতকারীদের টাকা আত্মসাতের পাশাপাশি বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
বিতরণ করা ঋণ ও ঋণের বিপরীতে আরোপিত সুদ তো আদায় হচ্ছেই না, উলটো সুদ মওকুফ করা হচ্ছে। এতে ব্যাংকগুলোর আয় কমে গেছে। ব্যাংকগুলোর মোট আয়ের সিংহভাগই আসে বিতরণ করা ঋণ ও অন্যান্য সম্পদ থেকে। এ খাতে আয় গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে চলে গেছে। এমন কি গত ১৮ বছরের মধ্যেও এ খাতের আয় এখন সর্বনিম্নে। এছাড়া মূলধন থেকেও আয় কমেছে।
ব্যাংকের ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে মূলধন রাখার হারও কমেছে। সব মিলে ব্যাংক খাতের স্বাস্থ্য অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে। কয়েকটি ব্যাংক লুটপাটের কারণে তারল্য সংকটে পড়ে এখন আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না।
সূত্র জানায়, ব্যাংকগুলোর আয়ের সিংহভাগই আসে সম্পদ থেকে। সম্পদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিতরণ করা ঋণ, বিনিয়োগ, ধার দেওয়া অর্থ, বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবসা। এছাড়াও ভাড়া ও অন্যান্য সম্পদ থেকে সীমিত পরিমাণে আয় হয়। ব্যাংকের যে মূলধন থাকে সেগুলোও বিনিয়োগ করা হয়। সেখান থেকেও কিছুটা আয় আসে। তবে তা সম্পদের তুলনায় একেবারেই নগণ্য। তবে ব্যাংকগুলোর আয়ের প্রধান অংশই আসে সুদ বা মুনাফা খাত থেকে।
সমকাল
দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম ‘দখল চাঁদাবাজির উৎপাত একই চেহারায় ফুটপাত’। খবরে বলা হয়, আরামে হাঁটার জন্য রাজধানী ঢাকার মোটামুটি সব সড়কের পাশেই আছে ফুটপাত। তবে কোনো সরকারের আমলেই হেঁটে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেননি রাজধানীবাসী। হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ঢাকার ফুটপাতের 'চাবি' ছিল আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতে। সেখানকার অবৈধ দোকানের ভাড়ার টাকা গুনতেন সরকারদলীয় নেতারা।
এমনকি টাকার ভাগ যেত পুলিশের পকেটেও। শক্তি হারিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা যে যার মতো পালালেও ফুটপাতজুড়ে এখনও আছে সারি সারি দোকান, আছে নানা স্থাপনা। তবে এখনকার দখলবাজ কারা? এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে সমকাল।
অনুসন্ধান বলছে, রাজধানী ঢাকার ফুটপাতে দখল, চাঁদাবাজি, উৎপাত- সবই আছে আগের মতো। শুধু বদলেছে কুশীলব। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধেই মিলেছে বেশির ভাগ দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ। তবে বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে দখল-চাঁদাবাজির বিষয়ে নেওয়া হয়েছে শূন্য সহনশীল নীতি। এসব অপকর্মে জড়িত থাকলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে কয়েকজন স্থানীয় নেতাকে বহিষ্কারও করেছে দলটি। তবু অনেক এলাকায় ফুটপাত দখল-চাঁদাবাজিতে জড়িয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মী। রাজধানীর প্রায় সব এলাকায় ফুটপাতের দখল ও নিয়ন্ত্রণ হাতবদল হয়েছে। নতুনভাবে ভাগাভাগিতে ব্যস্ত নতুন দখলদাররা। তবে দলটির শীর্ষ নেতাদের হুঁশিয়ারিতে কিছু কিছু এলাকা এখনও চাঁদামুক্ত আছে বলে মনে করেন ফুটপাত দোকানিরা।
নয়া দিগন্ত
মুখ থুবড়ে পড়েছে ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ কার্যক্রম-এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, মুখ থুবড়ে পড়েছে ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’-এর কার্যক্রম। বিগত সরকারের গৃহীত এ স্কিম এখন গ্রাহকদের অভাবে অনেকটা খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। এক সময় প্রতিদিন যেখানে সর্বজনীন পেনশন স্কিম ৪-৫ হাজার মানুষ এনরলমেন্ট বা নিবন্ধন করত, এখন এক বছরে ব্যবধানে তা কমে দাঁড়িয়েছে চার-পাঁচ জনে। এমনকি কোনো কোনো দিন একজন গ্রাহকও এ স্কিমের সাথে যুক্ত হচ্ছেন না।
আবার যারা মাসে মাসে কিস্তির টাকা দিতেন, আগ্রহ হারিয়ে ফেলে তাদের অধিকাংশই আর চাঁদাও দিচ্ছেন না। এ চাঁদা না দেয়ার হার অনেক বলে জানা গেছে। এর অন্যতম কারণ এ স্কিমে সাথে সরকারি, স্বায়ত্তশাষিত এবং বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যুক্ত হওয়ার বাধ্যবাধকতা তুলে নেয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য নির্ধারিত ‘প্রত্যয়’ স্কিমটি ব্যাপক সমালোচনা ও অন্দোলনের মুখে পতিত সরকার গত আগস্ট মাসে সার্কুলার জারি করে প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে পুরো স্কিম এখন বেসরকারি খাত-নির্ভর হয়ে পড়েছে। এ কারণে স্কিমের সফলতাও এখন প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
অনেকে বিদ্যমান প্রেক্ষাপটে প্রশ্নবিদ্ধ এ স্কিমটি চালিয়ে যাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। কারণ এ স্কিমটি চালানোর জন্য সরকারকে প্রতি মাসে একটা মোটা অঙ্কের অর্থব্যয় করতে হচ্ছে।
আজকের পত্রিকা
‘হাজত থেকে ফেসবুক লাইভে চেয়ারম্যান’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আতাউর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৯-এর শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের সদস্যরা। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা ৫০ মিনিটের দিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলার রেল ক্রসিং এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব-৯-এর শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ডিএডি মুমেন বলেন, গ্রেপ্তার ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তাঁকে গতকাল শনিবার ভোর ৪টার দিকে মৌলভীবাজার সদর থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁর বাড়ি রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের তারাপাশা গ্রামে।
এদিকে গ্রেপ্তারের ১০ ঘণ্টা পর গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ফেসবুক আইডিতে লাইভে এসে গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন চেয়ারম্যান আতাউর রহমান। সেই সঙ্গে কামারচাক ইউনিয়নবাসীর কাছে দোয়া চান তিনি। লাইভের সময় তিনি যে কক্ষে ছিলেন, তার দেয়ালে সরকারি কিছু লেখা ছিল, যেগুলো থানায় থাকে। পরে অবশ্য ফেসবুক আইডি থেকে লাইভের ভিডিও মুছে দেওয়া হয়। তবে ভিডিওটি অনেকেই ডাউনলোড করে রেখেছেন।
দেশ রূপান্তর
দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘এক কলেজ অনুমোদনেই দুই কোটি’। খবরে বলা হয়, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান ডা. আ ফ ম রুহুল হক। শপথ নিয়েই বলেছিলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিন্ডিকেট ভাঙতে চান তিনি। তবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি তা বেমালুম ভুলে গিয়ে নিজেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। আওয়ামীপন্থি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) তখনকার সভাপতি মন্ত্রী হয়ে সিন্ডিকেট ভাঙার বদলে নিজেই ঘনিষ্ঠজনদের নিয়ে গড়ে তোলেন সিন্ডিকেট।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে রুহুল হকের আমলে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা একাধিক উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেছেন, ওই সময় এক একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অনুমোদনের জন্য দুই কোটি টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন মন্ত্রী। এ ছাড়া কলেজের আসন বাড়াতে তাকে দিতে হতো আসনপ্রতি ২০ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর রুহুল হক, প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির ও উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর মধ্যে নানা বিরোধ দানা বাঁধে। এই বিরোধের নেপথ্যে ছিল বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অনুমোদন, চিকিৎসকদের পদায়ন ও পদোন্নতি, স্বাস্থ্যের কেনাকাটা। তাদের তিনজনের দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে অন্য দুজনকে দল থেকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হলে একক রাজত্ব শুরু হয় রুহুল হকের।
ডেইলি স্টার
দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম ‘Age Limit for Govt Job: 35 Yrs For Men, 37 For Women’ অর্থাৎ ‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা: পুরুষের জন্য ৩৫ আর নারীর জন্য ৩৭’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা নির্ধারণে যে কমিটি করা হয়েছিল, সেই কমিটি পুরুষদের জন্য চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ ও নারীর জন্য ৩৭ বছর প্রস্তাব করেছে।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশে যৌক্তিক বয়সসীমা নির্ধারণে আগেই ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। গত সপ্তাহে প্রধান উপদেষ্টার কাছে বয়সসীমা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে এই কমিটি।
সূত্রের বরাত দিয়ে ডেইলি স্টারের খবরে বলা হয়, ‘বিয়ে কিংবা সন্তানধারণ নিয়ে নারীর পড়াশোনায় নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয় বলে নারীর ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩৭ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আলী ইমাম মজুমদার ডেইলি স্টারকে রিপোর্ট জমার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘পর্যালোচনা শেষে এই বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
বণিক বার্তা
‘বন্যায় অবহেলিত ময়মনসিংহের তিন জেলা, যাননি কোনো উপদেষ্টা’-এটি দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনার বেশ কয়েকটি উপজেলা। এরই মধ্যে নামতে শুরু করেছে সেই পানি। ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন। আকস্মিক এ বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০ জন। পানিতে তলিয়ে গেছে লক্ষাধিক হেক্টর জমির আমন ধান, পচে গেছে সবজিখেতের ফসল। ভেসে গেছে খামারের মাছ। বিধ্বস্ত হয়েছে প্রচুর ঘরবাড়ি। পানির তোড়ে ভেঙে গেছে প্লাবিত গ্রামগুলোর অধিকাংশ সড়ক। দেখা দিয়েছে গোখাদ্যের সংকটও।
বন্যায় এ অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও সরকারের কোনো উপদেষ্টা পরিদর্শনে না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বন্যার্তরা। প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা অবশ্য দাবি করেন, সবার কাছেই ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা। তবে যোগাযোগ সমস্যার কারণে কিছু এলাকায় যেতে সমস্যা হচ্ছে।
পুকুর ভাড়া নিয়ে মাছের খামার করেছিলেন আনোয়ার হোসেন। বিনিয়োগের প্রায় পুরোটাই ছিল ব্যাংক ঋণ। আশ্বিনের বৃষ্টি আর উজানি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় মুহূর্তের মধ্যেই ভেসে গেছে তার সব মাছ। ঋণ শোধ আর সংসারের খরচ এখন কীভাবে চালাবেন, তা নিয়েই আছেন চরম দুশ্চিন্তায়। আনোয়ার হোসেনের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দার আমতৈল গ্রামে।
আকস্মিক বন্যায় ২৫ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন এ মৎস্যচাষী। তার মতো অনেক পরিবারই ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বন্যার পানি কমায় সে ক্ষতি দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।
ঠিকানা/এসআর