মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে এক সংক্ষিপ্ত একান্ত বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ঢাকায় তার পুরোনো বন্ধুকে স্বাগত জানাতে পেরে তিনি ‘খুবই খুশি’। বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিপ্লব, ছাত্র ও জনগণের আত্মত্যাগ এবং বিগত সরকারের সংঘটিত গণহত্যা নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
প্রধান উপদেষ্টা মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর নেতাদের সঙ্গে তার দীর্ঘ সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন। দুই নেতা তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে একই গাড়িতে চড়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের ভেন্যুতে যান।
এর আগে শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুর দুইটার দিকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় আসেন।
প্রায় ১১ বছর পর মালয়েশিয়ান কোনো প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর এটি। সংক্ষিপ্ত হলেও এই সফরটি কয়েকটি দিক থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তার সফরে রাজনীতি, অর্থনীতি ও শ্রমবাজার ইস্যু গুরুত্ব পাবে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে। পাশাপাশি এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে অংশীদারত্ব আরও জোরদার হবে।
বিশ্লেষকেরা আশা করছেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। শ্রমবাজার ইস্যুতে মালয়েশিয়ার চাওয়া আর আমাদের চাওয়াও একই রকম। মালয়েশিয়ার কর্মীর প্রয়োজন, আমাদের কর্মী আছে। এই দুটোকে মিলিয়ে যেন স্বচ্ছ উপায়ে কাজে লাগানো যায়, সে ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সঙ্গে একাধিক খাতে সহযোগিতা বাড়াতে এবং কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করার ওপর জোর দিতে হবে।
ঢাকার জ্যেষ্ঠ এক কূটনীতিক জানান, সফরে বৈঠকগুলোতে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয় থাকবে। মালয়েশিয়ার সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য আরও বাড়ানোর সুযোগ আছে। মালয়েশিয়ার প্রায় ৩০০ কোম্পানি ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে আসছে। আমরা তাদের কাছ থেকে আরও বেশি বিনিয়োগ চাইতে পারি। সেটা আমাদের কর্মসংস্থানের জন্য সাহায্য করবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আনোয়ার ইব্রাহিমের ঢাকা সফরে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও শ্রমবাজার ইস্যুর পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ে আলোচনার সুযোগ আছে। বাংলাদেশের সংস্কার ইস্যু এই সফরে আলাদা গুরুত্ব পাবে। এ ব্যাপারে তারা আমাদের পাশে থাকবে বলে প্রত্যাশা। এ ছাড়া শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন, উচ্চশিক্ষা সহযোগিতা, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থের সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলো গুরুত্ব পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
ঠিকানা/এনআই