প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানসহ আমার পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি বিচার পর্যন্ত চাইতে পারিনি। কারণ তখন ক্ষমতায় ছিল যুদ্ধাপরাধীরা। কিন্তু নিজের জীবনের কথা চিন্তা না করে দেশে ফিরেছি লাখো শহীদের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য।
শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭২ সালে সংবিধান দেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের উচ্চ আদালত প্রতিষ্ঠা করার পর এ জায়গায় বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিয়েছিলেন। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে ৫০ বছর পর এ জায়গায় দাঁড়িয়ে আমি বক্তব্য দেওয়ার সংযোগ পেয়েছি।
আজ ২৮ জুলাই (শুক্রবার) বেলা ১১টা সুপ্রিমকোর্টে ‘স্মৃতি চিরঞ্জীব’ নামের এ স্তম্ভের উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
স্মারকসৌধ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, স্বাগত বক্তব্য দেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। আরও বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঞ্চম সংশোধনীর রায় দিয়ে বিচারকরা গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ায় জাতির পক্ষ থেকে আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর হত্যার রায়, যুদ্ধাপরাধীদের রায়, পঞ্চম সংশোধনীর রায়, ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় এবং অবৈধ দখলদার যেন ক্ষমতায় আসতে না পারেন সেজন্য আপনারা রায় দিয়েছেন সেজন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আরও দক্ষতা তৈরি করতে আমরা পৃথক আইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবো। এখানে আইনমন্ত্রী আছেন, আমি বলবো, এ বিষয়ে দ্রুত কাজ করা দরকার। এটি আমরা করে দেবো। বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উঠে এসেছে। সেজন্য তারা (আইন পেশার মানুষ) যেন দক্ষ হয়ে উঠতে পারে, বিশ্বমানের সেবা দিতে পারে সেজন্য আমরা আইন বিশ্ববিদ্যালয় করে দেবো, কথা দিচ্ছি। আইনজীবী ভবনও করে দিতে পারবো, কিন্তু এখনই নয়। তবে আবার সরকারে এলে এটি করে দেবো। এ মুহূর্তে সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা। প্রতিটি ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হচ্ছি, মিতব্যয়ী হচ্ছি। তারপরও মানুষের চাহিদা পূরণ করছি।
এ সময় আবেগাপ্লুত প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে এটি আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। আপনারা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে এ স্মারক স্তম্ভ করেছেন। আজকে আমাকে এখানে আমন্ত্রণ করেছেন। পরবর্তী প্রজন্ম এ থেকে তার (বঙ্গবন্ধু) ইতিহাস জানবে। এক সময় তো জাতির পিতার স্মৃতিচারণও নিষিদ্ধ ছিল। আমরা সে পথ প্রশস্ত করেছি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
ঠিকানা/এসআর