বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে তার দেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী।’ চট্টগ্রামের কাছে কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (কেইপিজেড) পরিদর্শনের সময় ২৮ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিসিএবি) সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।
বেশি পরিমাণে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য বাংলাদেশে আরও উন্নত ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়ে পার্ক ইয়ং-সিক বলেন, ‘কোরিয়া ঢাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে প্রস্তুত, যেমনটি আমরা ইতোমধ্যে আরএমজি সেক্টরে করেছি।’
পার্ক বলেন, ‘আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য ব্যবসা-বান্ধব, পূর্বাভাসযোগ্য এবং স্থিতিশীল পরিবেশের উন্নতি অন্তর্বর্তী সরকারের কাজগুলোর মধ্যে শীর্ষ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। ঢাকায় কোরীয় দূতাবাস বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আরও আলোচনা করতে আগ্রহী।’
গত ২০ বছর ধরে বাংলাদেশের পাঁচ শতাংশ হারে স্থিতিশীল বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার উল্লেখ করে পার্ক দেশটির শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাও তুলে ধরেন। তিনি আশা করে বলেন, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে বাংলাদেশের আসন্ন উত্তরণ টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় বিদেশি পুঁজি আকর্ষণে সহায়তা করবে।
রাষ্ট্রদূত দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) সংক্রান্ত চলমান আলোচনার তাৎপর্যও তুলে ধরেন। এই ইপিএ কোরিয়া বর্তমানে বাংলাদেশকে যে জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স (জিএসপি) সুবিধা প্রদান করছে তা শুধু প্রসারিত করবে না বরং পারস্পরিক সুবিধার জন্য দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াবে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল, কোরীয় সরকারের কাছ থেকে সফট লোন বা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মেকানিজমের মাধ্যমে অনেক প্রকল্প নিয়ে আলোচনা চলছে।
কোরীয় দূতাবাস আশা করে, চলমান প্রকল্পগুলোর মসৃণ অগ্রগতি হবে এবং বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কোরীয় কোম্পানিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো প্রকল্পে বিলম্ব করে না বা ইচ্ছাকৃতভাবে প্রকল্পের খরচ বাড়ায় না এবং তারা সময়মতো শেষ করার দিকে মনোনিবেশ করে। উভয় দেশ পাদুকা, হালকা শিল্প, আইসিটি, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ নির্মাণ, নীল অর্থনীতি ও গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা, কৃষি ও কৃষি যন্ত্রপাতি, গ্রিন হাউস এবং কার্বন ট্রেডিং প্রকল্পের মতো নতুন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা এগিয়ে নিতে পারে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কোরীয় কোম্পানির নতুন প্রযুক্তি রয়েছে, অন্যদিকে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো নতুন ব্যবসা শুরু করতে পারে। দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে আলোকপাত করে কেইপিজেডের সভাপতি জাহাঙ্গীর সাদাত এবং ডিসিএবি সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিবও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
ঠিকানা/এএস