Thikana News
১৫ জানুয়ারী ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

বিতর্কে জয়ী হয়েছেন কমলা হ্যারিস

বিতর্কে জয়ী হয়েছেন কমলা হ্যারিস ছবি সংগৃহীত
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে ব্যতিক্রমী কৌশল নিয়েছিলেন ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিস। তিনি বারবার ট্রাম্পকে খোঁচা দিয়েছেন। তাতে উত্তেজিত হয়েছেন ট্রাম্প। ফিলাডেলফিয়ায় ওই বিতর্কে তিনি অসংলগ্ন কথা বলেছেন। ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক, বিভিন্ন মাধ্যমের জরিপ, বিশ্লেষণ বলছে, বিতর্কে জয়ী হয়েছেন ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিস।

বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর কমলা ডেমোক্রেট দলের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছেন ট্রাম্পের সামনে। রীতিমতো টক্কর দিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই ছাড়িয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্পকে। ফলে ডেমোক্রেট শিবিরে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে তাতে আরও গতি যোগ করেছেন কমলা। বিতর্ক শুরুর আগে কমলা-ট্রাম্প করমর্দন করলেও পরক্ষণে প্রশ্নবাণে ট্রাম্পকে ব্যতিব্যস্ত রেখেছেন কমলা। ৯০ মিনিটের অগ্নিঝরা বিতর্কে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেছেন তিনি। এতে বিচলিত হয়ে পড়েন ট্রাম্প। অনেক ইস্যুতে তিনি শুধু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তিনি ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিতে পারেননি। 

বিতর্কের পর দর্শকদের ওপর সিএনএন জরিপ করেছে। তাতে দেখা গেছে, জয়ী হয়েছেন কমলা হ্যারিস। তাকে সমর্থন করেছেন শতকরা ৬৩ ভাগ মানুষ। আর ট্রাম্পকে জয়ী মনে করছেন শতকরা ৩৭ ভাগ। আরেকটি জরিপ নিবন্ধিত ভোটারদের ওপর চালিয়েছে ইউগভ। তাতে দেখা যায়, বেশির ভাগ মানুষ কমলা হ্যারিসকে জয়ী বলে মত দিয়েছেন। ট্রাম্পকে সমর্থন করে রক্ষণশীল টেলিভিশন ফক্সনিউজ। তাদের নিউজেও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ট্রাম্পকে পরাজিত করেছেন কমলা। প্রার্থীদের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে ভোটাররা সিদ্ধান্ত পাল্টাবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়।

অনলাইন সিএনএন, বিবিসি, আল-জাজিরাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এই বিতর্কের চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। আল-জাজিরার বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, কমলা হ্যারিস কি আসলেই জিতেছেন, নাকি ট্রাম্পের দুর্বলতাই তাকে বিজয়ী করে তুলেছে? এ ব্যাপারে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ মত দিয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, ট্রাম্পের দুর্বল জায়গাগুলোতে খোঁচা দিয়ে সাফল্য পেয়েছেন কমলা হ্যারিস। আবার কেউ বলছেন, ট্রাম্পকে বিচলিত করে দেওয়ার কৌশল প্রয়োগ করেছিলেন কমলা। তা করতে গিয়ে তিনি ভোটারদের নিজের নীতিমালা কী হবে, সে সম্পর্কে খুব বেশি কিছু বলতে পারেননি।

যুক্তরাষ্ট্রের হফস্ট্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টোমেকা এম রবিনসন বলেন, বিতর্কে জিতেছেন কমলা। তিনি খুব সহজেই জিতেছেন এমন নয়। ট্রাম্প সম্পর্কে তার মত হলো, রিপাবলিকান এ নেতা বিভিন্ন বিষয়ে নিজের অবস্থানে অটল থাকতে পারেননি। তিনি মনে করেন, অবৈধ অভিবাসী এবং প্রজনন বিষয়ক (গর্ভপাতের অধিকার) একই ধরনের আক্রমণাত্মক বক্তব্য না দিয়ে ট্রাম্পের উচিত ছিল প্রেসিডেন্ট হলে তার নীতিমালা কী হবে, তা নিয়ে কথা বলা।

বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম বিষয়ক অধ্যাপক ট্যামি আর ভিজিলও বলেছেন, ট্রাম্পের দুর্বলতাগুলোকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়েছেন কমলা। তবে তিনি তার নীতিমালা সংক্রান্ত পরিকল্পনাগুলো সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি। ভিজিল বলেন, হ্যারিস বিতর্কে জিতেছেন। কারণ, তিনি ভালো করেই জানতেন যে ঠিক কোন জায়গায় খোঁচা দিলে ট্রাম্প তার চিরাচরিত রূপে নিজেকে প্রকাশ করতে শুরু করবেন। তিনি যা বলেন, তা খুব কম সময়েই সত্য হয়। তিনি চান কথাগুলোকে দর্শকরা আবেগ দিয়ে বিবেচনা করুক, যুক্তি দিয়ে নয়। মঙ্গলবার রাতেও তিনি একই কাজ করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ আবার আগের বিতর্কে ট্রাম্পের আচরণের সঙ্গে মঙ্গলবার রাতের বিতর্কে তার আচরণের তুলনা করছেন। আগের বিতর্কে ট্রাম্পের মুখোমুখি হয়েছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে ট্রাম্পের কাছে বিতর্কে ধরাশায়ী হওয়ার পর বাইডেন তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নিক বিউচ্যাম্প আল জাজিরাকে বলেন, প্রথম বিতর্কে বাইডেন নিজেই নিজের ধ্বংস ডেকে এনেছিলেন। ট্রাম্প ধৈর্যসহকারে অপেক্ষা করে, শান্ত থেকে এবং বেশির ভাগ সময় নিজের বার্তা দেওয়ার মধ্য দিয়ে কাজটি আরও সহজ করে তুলেছিলেন। 

অপরদিকে কমলা-ট্রাম্প বিতর্কে কমলা একনাগাড়ে ট্রাম্পকে খোঁচা দিচ্ছিলেন, বিদ্রূপ করছিলেন এবং ছোটখাটো অপমান করে যাচ্ছিলেন। এতে ট্রাম্প কোণঠাসা হয়ে পড়েন। তিনি ক্রমাগত রেগে যেতে থাকেন এবং অসংলগ্ন আলোচনা করতে থাকেন। কমলা সম্পর্কে বিউচ্যাম্প বলেন, তিনি (কমলা) নিজের সম্পর্কে, নিজের মূল্যবোধ সম্পর্কে খুব একটা স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেননি। বরং তিনি ট্রাম্পকে বেসামাল করে দেওয়ার চেষ্টাতেই ব্যস্ত ছিলেন।

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স