ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা। এরপর দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে রাজনৈতিক দাবি উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানালে ভারত কী করবে—প্রশ্নে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে কথা বলেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। তিনি বলেছেন, অল্প সময়ের নোটিশে শেখ হাসিনা নিরাপত্তার স্বার্থে ভারতের কাছে আশ্রয় চেয়েছিলেন। সে অনুযায়ী তাকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এখন তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রশ্ন অনুমাননির্ভর। এ বিষয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই।
প্রতিবেশী দেশে অশান্তির কারণে উন্নয়ন প্রকল্পের দ্বিপাক্ষিক কাজ থমকে আছে উল্লেখ করে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, দ্বিপাক্ষিক প্রকল্পগুলো বাংলাদেশের অস্থিরতার কারণে প্রভাবিত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে কিছু প্রকল্পের কাজ থমকে আছে। পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়ে গেলে এবং স্বাভাবিকতা পুনরুদ্ধার করা হলে, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে পরামর্শে আবার কাজ শুরু হবে এবং কীভাবে তাদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় এবং আমরা তাদের সাথে কী ধরণের বোঝাপড়া করতে পারি তা দেখব।
জয়সওয়াল বলেন, হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। সে সময় ঢাকায় ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে হামলা ও ভাঙচুর হয়। যদিও বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ‘তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিল’, ভারত সিদ্ধান্ত নিয়েছে—ঢাকার হাইকমিশন থেকে সমস্ত অপ্রয়োজনীয় কর্মী এবং পরিবারগুলোকে সরিয়ে নেওয়ার।
কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল হয়ে যাওয়ায় শেখ হাসিনা আইনগতভাবে ৪৫ দিন ভারতে থাকতে পারবেন। ইতোমধ্যেই তিন সপ্তাহের বেশি সময় দেশটিতে পার করে ফেলেছেন তিনি। তবে ৪৫ দিন পার হলে কীসের ভিত্তিতে তাকে ভারতে রাখা হবে বা এর আগেই তৃতীয় কোনো দেশে শেখ হাসিনাকে পাঠানো হবে কি না, সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার পেছনে ভারতের দায়ী থাকার বিষয়টি ফের নাচক করে জয়সওয়াল জানান, বাংলাদেশে বন্যার কারণ ভারী বৃষ্টি। এতে তাদের কোনো হাত নেই। তবে বন্যা ঠেকাতে বাংলাদেশের নতুন প্রস্তাব বিবেচনার ইঙ্গিত দেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র।
ঠিকানা/এসআর