দেশের নির্বাচনী কাঠামো, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনিক কাঠামোর সংস্কার সাধনের পরই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতারা।
শনিবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেন জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতারা।
দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মনিরুল ইসলাম মিলন ও মাশরুর মাওলা।
প্রায় ৪৫ মিনিটের বৈঠকের পরে বেরিয়ে এসে মো. মুজিবুল হক চুন্নু সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বর্তমানে যে পরিস্থিতি তা নিয়ে সার্বিকভাবে আলোচনা হয়েছে। দেশ ও জাতির প্রয়োজনে বিচার বিভাগ, প্রশাসন ও সংবিধানসহ যেসব বিষয়ে আশু সংস্কার দরকার, তা এ সরকার করতে পারবে বলে আমাদের আস্থা রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে যে উপদেষ্টা পরিষদ রয়েছে, তারা কিন্তু স্থায়ীভাবে থাকার জন্য ক্ষমতায় আসেননি। তারা আসছেন দেশের প্রয়োজনে, দেশের স্বার্থে। দেশের প্রয়োজনে তারা কাজ করছেন। এখন তারা যতটুকু সময় প্রয়োজন, সেটুকুতে আমরা (জাপা) সমর্থন দেব। নির্বাচন কবে হবে পরে সরকার সময় হিসাব করে সিদ্ধান্ত নেবে। জনগণের পক্ষ থেকে যেসব সংস্কার দাবি করা হয়েছে, সেসব সংস্কার করে নির্বাচনের বিষয়ে সরকার চিন্তা করতে পারে।’
আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানে ১৫তম সংশোধনী এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার-ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। জাতীয় পার্টির নেতারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে এই সংশোধনী বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
মুজিবুল হক বলেন, আমরা বিচার বিভাগকে রিফর্ম করা, বিশেষ করে উচ্চ আদালতের বিষয়ে বলেছি। পাশাপাশি জাতীয় সংসদ, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনার কথা বলেছি। একই ব্যক্তি যাতে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী না হন এবং একই ব্যক্তি যাতে দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন, সে বিষয়ে কথা বলেছি।’
দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। চুন্নু জানান, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও পুলিশকে আরও বেশি সক্রিয় করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
গত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিতর্কিত হয়েছে জাতীয় পার্টি। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাপার মহাসচিব বলেন, ‘তখনকার প্রেক্ষাপটে নির্বাচন করেছি। সংবিধান অনুযায়ী যখন নির্বাচন হয়, আমরা প্রতিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। দেশ স্বাধীনের পর থেকে অনেক রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় গেছে, আমরাও ক্ষমতায় ছিলাম। সবারই কম-বেশি ভুল ত্রুটি আছে। তাই আমরা বলছি, আমরা ইচ্ছা করলেই যেন ভুল-ত্রুটি করতে না পারি, সে জন্য এই সরকারকে সংস্কারমূলক কাজ করতে দিতে হবে। নির্বাচনের সময় তারা নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রাখবে, এটা এই সরকারের পক্ষেই করা সম্ভব।’
ঠিকানা/এনআই