ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু তার মন্ত্রিসভা থেকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্তের পর দশ হাজারেরও বেশি প্রতিবাদকারী বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। ইয়োআভ গালান্ত সম্প্রতি দেশটির বিচার ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর বিতর্কিত পরিকল্পনার বিরুদ্ধে তার বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন।
জেরুজালেমে নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের দমনে পুলিশ ও সৈন্যরা এ সময় জলকামান ব্যবহার করে। নতুন আইনের প্রতিবাদে ইতোমধ্যে সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভ প্রদর্শনের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েল সরকারের বিচার বিভাগ সংস্কারের এই পরিকল্পনায় সরকারকে বিচারক নিয়োগকারী কমিটির ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রদান করবে।
এছাড়া এই আইন প্রধানমন্ত্রীর পদে অনুপযুক্ত কোনো নেতাকে সরিয়ে দিতে আদালতের ক্ষমতাকেও কঠিন করে তুলবে। আর এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই কেননা ধারণা করা হচ্ছে দুর্নীতির অভিযোগে বিচারের সম্মুখীন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে রক্ষা করতেই আইনটি করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের বাইরে প্রতিবাদ জানানোর পর বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলের পতাকা উড়িয়ে ও হাতে থালাবাসনের শব্দ করে পুলিশের বাধা এড়িয়ে দেশটির পার্লামেন্ট নেসেটের দিকে যেতে থাকে। এসময় একজন বিক্ষোভকারী গণমাধ্যম বিবিসিকে বলেন, ‘নেতানিয়াহু গণতান্ত্রিক দেশের সব সীমা অতিক্রম করেছেন।’
সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গালান্ত ছিলেন একজন সাবেক সেনাসদস্য এবং প্রস্তাবিত আইন পরিবর্তনের বিষয়ে যিনি ছিলেন বিরোধী অবস্থানে। শনিবার তিনি আইনটির বিরুদ্ধে কথা বলেন ও জানান যে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী নতুন আইনের বিষয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশ।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এই বক্তব্যের সময় নেতানিয়াহু দেশের বাইরে ছিলেন এবং এই ঘটনার পর তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে গালান্তের ওপর আস্থা রাখতে পারেননি। নেতানিয়াহু চান এই সপ্তাহের শেষ নাগাদ পার্লামেন্টের মাধ্যমে আইনপ্রণয়ন হোক।
গালান্ত এবং নেতানিয়াহু দুজনই লিকুদ পার্টির সদস্য। আর বরখাস্ত হওয়ার পর গালান্ত তার টুইটারে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমার জীবনের লক্ষ্যই হলো ইসরায়েল রাষ্ট্রের নিরাপত্তা।’
এদিকে দেশটির বিরোধী দলের নেতা ইয়াইর লাপিদ গালান্তের বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে সরকারের এক ধরনের ‘পতন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘নেতানিয়াহু গালান্তকে বরখাস্ত করতে পারেন, তবে তিনি বাস্তবতাকে এড়াতে পারেন না, তিনি পারেন না কোয়ালিশন সরকারের পাগলামিকে ঠেকাতে এগিয়ে আসা জনতাকে থামিয়ে দিতে।’