গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো ছাত্র আন্দোলনের ফসলকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে মন্তব্য করেছেন ব্লাস্টের (বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন। তিনি বলেছেন, এগুলো টিকবে না এবং প্রথম ধাপ পার হতে পারবে না।
শনিবার (২৪ আগস্ট) ‘সিভিল রিফর্ম গ্রুপ-বাংলাদেশ ২.০’ এর উদ্যোগে আয়োজিত এক নাগরিক সংলাপে এ কথা বলেন তিনি। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বেসিস কার্যালয়ে এ সংলাপের আয়োজন করা হয়।
জ্যেষ্ঠ এ আইনজীবী বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে নানা ধরনের মামলা দেখা যাচ্ছে। কোনোটিতে ৩০, ৪০ ও ৫০ জনের বেশি করে আসামি। অনেকের রাগ ও ক্ষোভ থাকতে পারে, কিন্তু এ ধরনের মামলা লিখলে কাজ হবে না, টিকবে না। প্রথম ধাপই পার হতে পারবে না। মামলাগুলো আন্দোলন ও আন্দোলনের ফসলকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এটা বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই মামলা কি পুলিশ করছে? সৎভাবে করছে? বুঝে করছে? মামলার এজাহার ক্ষোভ ঝাড়ার জায়গা নয়।’
ব্রিটিশ আমলের মানহানি আইনে এখনো মামলা হচ্ছে এবং তা আবার দেখা যাচ্ছে উল্লেখ করে সারা হোসেন বলেন, ‘নতুন স্বাধীনতায় ব্রিটিশ আমলের আইন টেনে আনা হচ্ছে। এটা দুঃখজনক।’
রিমান্ডে সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৫ বছর ধরে রিমান্ডে কী কথা হয়েছে, তা সূত্র দিয়ে গণমাধ্যমে আসছে। রিমান্ডে কী বলা হয়েছে বা না হয়েছে, তা কিন্তু কেউ জানে না। কিন্তু গণমাধ্যমে তা প্রকাশ হচ্ছে। এটার জন্য কাউকে জবাবদিহি করা হয়নি।’
রিমান্ডের বক্তব্য প্রকাশ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইনকে নিজের মতো চলতে দিন। অনেক ক্ষোভ, রাগ আছে। আপনারা এটা ফেস (মুখোমুখি হওয়া) করেছেন বলে অন্য কাউকে এটার মধ্য দিয়ে নেবেন না।’
কোটা সংস্কার আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অন্তত ৮০ শিশু নিহত হওয়ার তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, এই শিশুদের নিহত হওয়ার ভিডিও ফুটেজ যদি কারও কাছে থাকে, সেগুলো সংগ্রহ করে মামলায় সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে এগোতে হবে। আদালতকে সুযোগ দিতে হবে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য। পাশাপাশি দ্রুত বিচার আইন ছাড়া এ অভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তিদের বিচারের মামলা কার্যক্রম যেন সঙ্গে সঙ্গে পরিচালনার জন্য আদালত থেকে নির্দেশ আসতে হবে। তাহলে নিঃশ্বাস ফেলা যাবে এবং দেশ গঠনের কাজে নামা যাবে।
ঠিকানা/এনআই