অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯তম শাহাদাতবার্ষিকী ও শোক দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে অস্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয় রাজধানী ভিয়েনার হেলবেরকটাসে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান শ্যামল।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি, অস্ট্রিয়াপ্রবাসী লেখক, মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক এম নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন অস্ট্রিয়া চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মি. কমার এরনস্ট গ্রাফট।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অস্ট্রিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি রবিন মোহাম্মদ আলী, অস্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রুহী দাস সাহা, সামছুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম জসিম, এমরান হোসেন, মনোয়ার পারভেজ, শফিকুর রহমান বাবুল, মাহমুদ রাজ্জাক তুলি, মিছবাহুল আরিফ বাবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব খান শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম কাঞ্চন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইমরুল কায়েস, ছাত্রলীগ নেতা ফকীর রাসেল আহমেদ প্রমুখ।
আলোচনা সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সভায় এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তার আদর্শ সদা জীবন্ত। তিনি বেঁচে থাকলে আজকের বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যেত।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাবার আদর্শের পতাকা বহন করে তাঁর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। কিন্তু অপশক্তির তা সহ্য হচ্ছিল না। তারা সাম্প্রতিক বাংলাদেশে অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, লুটতরাজ, মন্দির-গির্জা ভাঙচুর, সংখ্যালঘুদেরকে হত্যা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের হত্যা, আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা, সংসদ ভবন, গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসে হামলা করে ব্যাপক ক্ষতিসাধনের মধ্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। সরকারপ্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জোর করে দেশত্যাগ করতে বাধ্য করে।’
এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকে বাংলাদেশ থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি। এ বাড়িটি বাঙালির জাতিসত্তার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মুক্তির ঠিকানা। এ বাড়ি থেকেই বাঙালি জাতি পেয়েছিল মুক্তির দিকনির্দেশনা ও স্বাধীনতার ঘোষণা। এ বাড়ি থেকেই বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে এনে দিয়েছিলেন স্বাধীন-সার্বভৌম ভূখণ্ড ও লাল-সবুজের পতাকা। গত ৫ আগস্ট ঐতিহাসিক এই বাড়িটি পুড়িয়ে দিয়েছে অপশক্তি। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা অতীতের মতো এবারও সকল ষড়যন্ত্র বাতাসে মিইয়ে দিয়ে স্বদেশে ফিরে অপশক্তির হাত থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করবেন। তিনি আমাদের পৌঁছে দেবেন সেই বাংলাদেশে, যে দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
অস্ট্রিয়া চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মি. কমার এরনস্ট গ্রাফট বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তোমাদেরকে বাংলাদেশ দিয়েছেন। তিনি তোমাদের জাতির পিতা। আর তোমরা তাঁকে হত্যা করলে। শেখ হাসিনা তোমাদের দেশটাকে উন্নত করতে ছিল। তোমরা তাঁকে জোর করে ক্ষমতাচ্যুত করলে।’
সভাপতির বক্তব্যে খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, ‘প্রবাসে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে অপশক্তির দোসরদের মোকাবিলা করব। প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করব।’
সভায় আলোচনা পর্ব শেষে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুসহ নিহত সব শহীদ এবং সাম্প্রতিক সময়ে দেশে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের মধ্যে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে ভিয়েনার রাস্তায় শোক র্যালি করা হয়।
ঠিকানা/এনআই



ঠিকানা অনলাইন


