ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে জাতিসংঘ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি দেবে বিএনপি।
শনিবার (১০ আগস্ট) রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনে সরকার তার বাহিনী দিয়ে যে নৃশংসভাবে গণহত্যা করেছে, সেই গণহত্যার ব্যাপারে আমরা প্রথম থেকেই কথা বলছি। এ নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ ছিল সবচেয়ে বেশি। আমরা জাতিসংঘের কাছে এ বিষয়ে একটা নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে চিঠি পাঠাব। এ ছাড়া আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকেও চিঠি দেব। একই সঙ্গে ইউএই যেখানে আমাদের প্রায় ৫০ জন শ্রমিককে বন্দী করা হয়েছে এই আন্দোলন সমর্থন জানানোর জন্য, আমরা তাদের মুক্তির জন্যও এই সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য চিঠি দেব।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তারা আন্তরিকতার সঙ্গে তাদের কাজ শুরু করেছেন। প্রথমে যেটা শুরু করেছেন যেটা নিঃসন্দেহে পুরো জাতির কাছে আশা সৃষ্টি করেছে। ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ছয়জন বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন। নতুন একজনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এটা মনে করি গণতন্ত্রের জন্য সুখবর। যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল বিচার বিভাগে, সেটা অনেকাংশে মুক্ত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। দেশে ও বিদেশে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিভ্রান্তিকর খবর পরিবেশন করা হচ্ছে। সেখানে বিভিন্নভাবে সংখ্যালঘু সস্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি… এই বিষয়গুলো তুলে ধরা হচ্ছে। আমরা মনে করি, এই তথ্য একেবারেই সঠিক নয়। কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে, যা সম্প্রদায়গতভাবে নয়, রাজনৈতিক ঘটনা।
তিনি বলেন, সংখ্যালঘু সস্প্রদায়ের ওপর হামলায় বিএনপিকে জড়িয়ে খবর পরিবেশনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এর তীব্র নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে বিএনপি তো জড়িত নয়ই, বাংলাদেশের সুস্থ, স্বাভাবিক কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে না। এটা একটা চক্রান্ত, যে চক্রান্ত বাংলাদেশের অর্জিত নতুন স্বাধীনতা নস্যাৎ করার।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, জয়নাল আবেদীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল ও সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
ঠিকানা/এনআই