Thikana News
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বয়কট ও বিক্ষোভের মাঝে মার্কিন কংগ্রেসে নেতানিয়াহুর ভাষণ

বয়কট ও বিক্ষোভের মাঝে মার্কিন কংগ্রেসে নেতানিয়াহুর ভাষণ


মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সেখানে তিনি গাজা যুদ্ধে ইসরাইলের প্রতি মার্কিন সমর্থনের প্রশংসা করেন। তবে কংগ্রেসে নেতানিয়াহুর ভাষণের বিরোধিতা করেছেন বেশ কয়েকজন ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতা। এছাড়া মার্কিন ক্যাপিটলের বাইরে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জড়ো হয়েছিল হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য গার্ডিয়ান। 

এতে বলা হয়, কংগ্রেসে নেতানিয়াহু যে ভাষণ দিয়েছেন তাতে আশাহত হয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক দলের আইনপ্রণেতাদের অনেকে। শুধু তারাই নন হাজার হাজার মার্কিন নাগরিককে হতাশ করেছেন নেতানিয়াহু। কেননা তারা আশা করেছিলেন নেতানিয়াহু তার ভাষণে গত ৯ মাস ধরে চলা যুদ্ধের অবসানের ক্ষেত্রে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির বিষয়ে ভাষণ দেবেন কিন্তু তিনি তা না করায় ক্যাপিটল হলের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মার্কিন নাগরিক। এছাড়া কংগ্রেসের ভিতরেও ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের বিরোধীতার মুখে পড়ে নেতানিয়াহু। নেতানিয়াহু তার ভাষণে গত নয় মাসের আগ্রাসনকে ‘বিজয়’ হিসেবে চিহ্নিত করার পর অনেকেই তার বক্তব্য বয়কট করেছেন। 

মার্কিন কংগ্রেসের ভাষণে নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমরা শুধু নিজেদের রক্ষা করছি না। আমরা আপনাদেরও রক্ষা করছি... আমাদের শত্রু আপনাদেরও শত্রু, আমাদের লড়াই আপনাদের লড়াই এবং আমাদের বিজয় আপনাদের বিজয়।’ নেতানিয়াহুর এ ভাষণকে সাধুবাদ জানিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানরা।
 
তবে তার বক্তব্য কংগ্রেসের ভিতরে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের কারো কারো মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এছাড়া কংগ্রেসের বাইরেও জড়ো হওয়া জনতা নেতানিয়াহুর বক্তব্যের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের দমনে মার্কিন পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয়। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের বাইরে বিক্ষোভকারীদের ওপর মরিচের স্প্রে ব্যবহার করে। এসময় বিক্ষোভকারীদের ‘নেতানিয়াহু আপনি পালাতে পারবেন না’ বলে স্লোগান দিতে শোনা যায়। ওয়াশিংটনের ডাউনটাউন এলাকার সড়কগুলোতে বিক্ষোভকারীদের উপস্থিতিতে জটলার সৃষ্টি হয়। তবে নিউইয়র্ক পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে তাদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন বলে গার্ডিয়ান তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।
কংগ্রেস হাউসের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি সহ কংগ্রেসের কয়েক ডজন ডেমোক্র্যাটিক সদস্য- তারা গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরাইলের বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। তারা নেতানিয়াহুর ভাষণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। 
মার্কিন গণমাধ্যম এক্সিওস জানিয়েছে, কংগ্রেসে নেতানিয়াহুর ভাষণ অনুষ্ঠানে ডেমোক্র্যাটদের অর্ধেকের বেশি আইনপ্রণেতা অনুপস্থিত ছিলেন। তারা মনে করেন যেখানে ইসরাইল প্রায় ৩৯ হাজার বেসামরিক লোকজনকে নিহত করেছে সেখানে নেতানিয়াহুর এমন বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। নেতানিয়াহুর ভাষণের পর কংগ্রেসের সাবেক স্পিকার পেলোসি তার এক এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ভাষণ দেয়ার বিশেষাধিকারে আমন্ত্রিত এবং সম্মানিত যে কোনো বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে নেতানিয়াহুর ভাষণ সবচেয়ে বাজে উপস্থাপনা ছিল।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘জিম্মি পরিবারগুলো যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন, এই যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে তারা তাদের পরিবারের লোকজনকে ফেরত পাওয়ার আশা করছেন। সুতরাং আমি মনে করি নেতানিয়াহুকে সেই লক্ষ্য অর্জনে সময় ব্যয় করা উচিৎ।’
কংগ্রেসের আরেক আইনপ্রণেতা বার্নি স্যান্ডার্স নেতানিয়াহুর ভাষণের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটাই প্রথম ঘটনা যেখানে একজন ‘যুদ্ধাপরাধীকে’ কংগ্রেসে ভাষণ দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) এর আগে নেতানিয়াহুকে গাজায় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র আদালতের ওই আবেদনের স্বীকৃতি দেয়নি। নেতানিয়াহুর পাশাপাশি ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান এবং হামাসের প্রধানের বিরুদ্ধেও ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করেন আইসিসির প্রসিকিউটর করিম খান।
কংগ্রেসের ভাষণে ফিলিস্তিনের গাজায় চালানো গণহত্যার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেছেন নেতানিয়াহু। গত ৯ মাস ধরে গাজায় যে পরিমাণ নৃশংসতা চালিয়েছে নেতানিয়াহুর বাহিনী তাতে বিশ্বের সকল মানবাধিকার সংস্থা এবং ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের নেতারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।  এছাড়া ইসরাইলকে বিনা প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের আকুণ্ঠ সমর্থনেরও সমালোচনা করেছেন বিশ্বের অনেক দেশ। গাজার বিরুদ্ধে ইসরাইলকে যতরকম সহায়তা প্রয়োজন তা করতে পিছ পা হননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। নিজের ভাষণে নেতানিয়াহু এ বিষয়টি উল্লেখ করে বাইডেনের গভীর প্রশংসা করেন। পাশাপাশি নেতানিয়াহু ডনাল্ড ট্রাম্পেরও প্রশংসা করেছেন।

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স