বাংলাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির নিউইয়র্কে বিশেষ প্রতিনিধি ও সাপ্তাহিক আজকালের সহযোগী সম্পাদক হাসানুজ্জামান সাকীর ওপর হামলা হয়েছে। হামলাকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। গত ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে।
বাংলা ব্লকেড ইউএসএ নামে একটি সংগঠন বৃহস্পতিবার বিকেলে টাইম স্কয়ারে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। সেখানে প্রায় কয়েক হাজার প্রবাসী জড়ো হয়ে বাংলাদেশের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমর্থন জানিয়ে সরকার বিরোধী নানা শ্লোগান দেয়। সময় টিভির সাংবাদিক হাসানুজ্জামান সাকী সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও করতে গেলে তার ওপর হামলা চালায় একদল বিক্ষুব্ধ যুবক। বিক্ষোভকারীরা তার গায়ে পাতিল বোতল ও জুতা ছুঁড়ে মারে। বেশ কয়েকজন তাকে কিল-ঘুষিও মারে। এসময় সঙ্গে তার স্ত্রী সাদিয়া খন্দকারও ছিলেন। স্বামীর ওপর হামলা ঠেকাতে গিয়ে তিনিও নাজেহাল হন। হামলা থেকে রক্ষা পেতে সাকী পাশে অবস্থানরত পুলিশের কাছে ছুটে যান। হামলকারীরা পুলিশের সামনেও সাকীকে হেনস্তা করে। পুলিশ তাকে দ্রুত গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে চলে যায়।
বিক্ষোভকারীর দাবি- সাংবাদিক হাসানুজ্জামান সাকী আয়োজকেদের বিএনপি-জামায়াতের কর্মী বলে উল্লেখ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন একদল যুবক। একপর্যায়ে তাকে উদ্দেশ্য করে ভুয়া ভুয়া বলে চিৎকার করতে থাকে। একপর্যায়ে তিনি দ্রুত পুলিশের কাছে আশ্রয় নেয়।
সাংবাদিকের ওপর কেন হামলা করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে অন্যতম আয়োজক আব্দুল্লাহ তামজিদ জানান, সময় টিভির সাংবাদিক হাসানুজ্জামান সাকী আয়োজকদের কারো সাথে কোন কথা না বলেই ভিডিও করতে শুরু করেন। সবাইকে ঢালাওভাবে বিএনপি-জামাতকর্মী বলে উল্লেখ করেন। ফলে অনেকেই উত্তেজিত হয়ে তাকে ভুয়া ভুয়া বলে ধাওয়া করলে সে পালিয়ে গিয়ে পুলিশের কাছে আশ্রয় নেয়।
হাসানুজ্জামান সাকীর জানান, যেহেতু বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকায় ইন্টারনেটের নেই। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও লাইভ করার কোন পরিস্থিতি সেখানে ছিল না। লাইভ করতে হলে একজন ক্যামেরাম্যান অথবা ট্রাইপড লাগে। আমার ট্রাইপড গাড়িতেই ছিল। সেটা নামানো হয়নি। তাদের কাউকেই আমি বিএনপি-জামাতকর্মী উল্লেখ করিনি। আমি কোটা সংস্কারের পক্ষে, তাই আমার স্ত্রীও সেখানে গিয়েছিলেন। আমার ওপর হামলা করে ওরা এখন নানা কল্প-কাহিনী বানাচ্ছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০ সালের ১ জুন পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে নিউইয়র্কে বিক্ষোভ চলাকালে হামলার শিকার হয়েছিলেন হাসানুজ্জামান সাকী।