বহুতল ভবন থেকে একেকজনকে ফেলে দেয়া হয় নিচে। জীবন বাঁচাতে যারা ভবনের রেলিং ও পাইপ বেয়ে নামার চেষ্টা করেন, উপর থেকে তাদের লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট-পাথর, যাতে তারাও নিচে পড়ে যায়! পাথরের আঘাত খেয়েও যারা রেলিং, গ্রিল, পানি ও টয়লেটের পাইপ বেয়ে ভবনের নিচে নামেন, তাদের পেটানো হয় নির্মমভাবে। ১৬ জুলাই (মঙ্গলবার) বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রামের মুরাদপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের মাঝে এমন ঘটনা ঘটে; যার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি সময় সংবাদকে জানান, বিকেলে তার নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একটি মিছিল মুরাদপুরে যান। এ সময় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দিলে তারা পাশের ভবনে গিয়ে আশ্রয় নেন। শিবিরের ছেলেরাও ভবনে ঢুকে আটকেপড়াদের নিচে ফেলে দেয়। যারা নিচে নামার চেষ্টা করছিলেন, তাদের ওপর ইট-পাথর নিক্ষেপ করা হয়। একজনের পায়ের রগও কেটে দেয়া হয়েছে।
মুরাদপুরের সংঘর্ষে নিহত তিন জনের মধ্যে দুজনকে ভবন থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন নুরুল আজিম রনি।
ভবনের নিচে মৃতের মতো বেশ কয়েকজনকে পড়ে থাকতে দেখা গেছে ভাইরাল ভিডিওতে। এদের সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বিকেলে চট্টগ্রামের মুরাদপুরে নিহতরা হলেন: চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ও কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরাম (২৪) এবং ফার্নিচার দোকানের কর্মচারী মো. ফারুক (৩২)। এছাড়া অপরজনের পরিচয় জানা যায়নি। তার বয়স আনুমানিক ২৪। তার পিঠে গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
১৬ জুলাই (মঙ্গলবার) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে আনা হলে তাদের মৃত ঘোষণা করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন।
ঠিকানা/এএস