Thikana News
১৮ অক্টোবর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪


 

মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় মোদি

মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় মোদি


অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় আছে ভারতের বিজেপি সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিজেপির জনপ্রিয়তা, জনসমর্থন কাড়ার মূল কেন্দ্রে। সেই মোদির নেতৃত্ব, তার জনপ্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় দলটির টনক নাড়িয়ে দিয়েছে। কূটনৈতিক মহল মনে করেন, নির্বাচন সামনে রেখে ভারতের মোদিবিরোধী পশ্চিমা মদদপুষ্ট প্রচারণা এবং বিজেপি ও মোদির বিপরীতে সংগ্রাম ও রাহুল গান্ধীকে সামনে টানার নাটকীয়তার পেছনে পশ্চিমাদের হাত রয়েছে। বিশেষ কিছু উদ্দেশ্যও রয়েছে। নরেন্দ্র মোদিকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় পেছনে ফেলার নানা কৌশলী চেষ্টা ছিল বাইডেন প্রশাসনের। অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক এবং অনেক সামরিক ক্ষেত্রে ভারত চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী। সামরিক, বিশেষ করে নৌশক্তিতে চীনের অবস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্র চিন্তিত এবং অনেক ক্ষেত্রে বিচলিত। যুক্তরাষ্ট্র ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তার একচেটিয়া কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এ ক্ষেত্রে ভারত তাদের কিছু ক্ষেত্রে সহযোগীর ভূমিকা রাখতে অনাগ্রহী না হলেও প্রতিবেশী চীনকে আঘাত, তাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে বা তাদেরকে হুমকির মধ্যে ফেলে এমন কোনো ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পক্ষে নয়। ইতিপূর্বে আলাদা দুই পক্ষেরই নমনীয়তায় পরে তার প্রশমন ঘটে এবং সম্পর্কে উন্নতি ঘটে। আগামী বছরই ভারতের নির্বাচন। কয়েকটি রাজ্যে চীনের প্রভাব হালকা করে দেখার মতো নয়। তা ছাড়া নির্বাচন সামনে রেখে কোনো প্রতিবেশীর সঙ্গেই নয়াদিল্লির অনাস্থাশীল সম্পর্ক সৃষ্টি হতে দেওয়ার পক্ষে নয়। এশিয়া, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়াকে ঘিরে সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থ প্রতিষ্ঠার নানামুখী কার্যক্রম যেভাবে বেড়ে উঠছে, বাংলাদেশের মতো ভারতও তাতে চিন্তিত। এ ক্ষেত্রে ভারত বাংলাদেশকে সঙ্গে করেই অগ্রসর হতে চায়। চীনের সঙ্গে ভুল-বোঝাবুঝির অবসান ঘটানো, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক স্বার্থে কাজ করার ক্ষেত্রে চীনকে প্রভাবিত করতে ভারত বাংলাদেশকে ব্যবহার করে আসছে। যাতে চীন ও তার সরকারপ্রধান অত্যন্ত সন্তুষ্ট বলেই কূটনেতিক মহল মনে করে।
বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন প্রশ্নে ভারত ও চীন অনেক কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে বলে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন। বিশেষ করে, বিদেশে অবস্থানরত বিএনপির নেতৃত্ব এবং অভ্যন্তরীণভাবে দলটির দুর্বল নেতৃত্ব প্রশ্নে দুটি দেশই প্রায় অভিন্ন অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ ও আগামী নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অতিমাত্রিক তৎপরতাকে তারা কেউই সহজভাবে নিচ্ছে না। ভারতের আশঙ্কা আগামী বছর তাদের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্নমুখী তৎপরতা চালাতে পারে, যা দেশটির ভবিষ্যতের জন্য সুখকর না-ও হতে পারে এবং সুদূরপ্রসারী বিরূপ প্রতিক্রিয়া বয়ে আনতে পারে। মণিপুরের সহিংসতা সম্পর্কে ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য ভারতীয়দের অসন্তুষ্ট করেছে। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় মার্কিন মদদ থাকার বিষয়ও সেখানে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করে যুক্তরাষ্ট্র। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফর ভারতের সঙ্গে অধিকতর উন্নত অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক ও সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিমূলক জোরদার সম্পর্ক গড়ে তোলার কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়। ভারত মহাসাগরে মার্কিন আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা ও ভারতের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার তাগিদ দেওয়া হয়। কূটনৈতিক সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশের অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিকট প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের সহযোগিতা প্রত্যাশা করা হয়। এ ব্যাপারে ভারতকে কিছু দায়িত্বও দেওয়া হয় বলে আভাস পাওয়া যায়।



 

কমেন্ট বক্স