Thikana News
১৮ অক্টোবর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪


 

ইইউ মিশন সফল নাকি ব্যর্থ? 

ইইউ মিশন সফল নাকি ব্যর্থ? 


নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে দুই সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল। দলটিকে বলা হচ্ছে মূলত প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। কারণ, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে ইইউ পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না আর পাঠালে কত জনবল বা কী কী দরকার পড়বে, সে বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেবে প্রতিনিধি দলটি।
১৫ জুলাই আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী ও এবি পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেছে ইইউর  প্রতিনিধি দলটি। বৈঠকে আওয়ামী লীগ বলেছে, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে যেভাবে সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, সেভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করে এবারও নির্বাচন হবে। বিএনপি জানিয়ে দিয়েছে, তারা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। এদিকে যদি সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, তাহলে তাদের প্রতিনিধি পাঠিয়ে অসম্মান না হতে অনুরোধ জানায় জামায়াত। জাতীয় পার্টি বলেছে, বর্তমানে যে রাজনৈতিক বিরোধ চলছে, এটির অবসানে সংলাপ প্রয়োজন, এ জন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এবি পার্টি বলেছে, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার আবশ্যক।
রাজনৈতিক এমন বিরোধে ইইউ মিশন সফল হবে নাকি ব্যর্থ হবে, সে প্রশ্ন উঠেছে? যদি এ দফায় মিশন সফল না হয়, কিছু সময় পর্যবেক্ষণ শেষে ইইউর আরও একটি দল আসবে জাতীয় নির্বাচনের আগে। এ দফায় যে শুভ কিছু আসছে না, অনেকেই তা মনে করছেন। আবার শেষ সময়ে এসে বিদেশিরা যদি নিজেদের অস্তিত্ব প্রকাশ করতে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে, তাহলে তার পুরো খারাপ অবস্থা শুধু রাজনীতিতে নয়, দেশের সব জনগণকে দায় নিতে হবে বলেও বিশেষ পাড়াগুলো থেকে গুঞ্জন উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিরোধ নব্বইয়ের দশক থেকেই। এরপর মাঝখানে জাতীয় সংসদের চারটি নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হলেও বাকিগুলো অনুষ্ঠিত হয় দলীয় সরকারের অধীনে।
সর্বশেষ ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে একাদশে হওয়া সংলাপ ব্যর্থ হওয়ায় বিরোধী রাজনীতিতে যারা রয়েছেন, তাদের কেউ সংলাপে ঢুকতে চাচ্ছেন না। আন্দোলন সংঘাতেই মনোযোগী হচ্ছেন। ইইউর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরাও বাংলাদেশে আসেন। গত ১৩ জুলাই ঢাকায় দিনভর প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন পর্যায়ে একাধিক বৈঠক শেষে যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার-বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সংলাপ সমর্থন করে। সংলাপের তাগিদ দেওয়া হয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে। এর মধ্যে ঢাকায় মহড়া দিয়ে বড় রাজনৈতিক দলগুলো এক দফা দেয়। বিএনপি বলেছে, সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আর আওয়ামী লীগ বলেছে, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখেই নির্বাচন হবে। এ পরিস্থিতিতে বিদেশি উদ্যোগ কতটা সফল হবে, এ নিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন রয়েই গেল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলো ইইউ প্রতিনিধি দলকে যার যার নিজস্ব অবস্থান তুলে ধরেছে। আদতে সব দলই ইইউর সমর্থন চাইছে। দলগুলো যদি নিজস্ব অবস্থানে অনড় থাকে, তাহলে পরবর্তী পরিস্থিতি কী হতে পারে, তা এখন বলা না গেলেও সেটি যে দেশের মানুষের মঙ্গল বয়ে আনবে না, তার আগাম ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বড় দুটি দল সংবিধানকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার প্রতিযোগিতা করছে। কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছে না। আওয়ামী লীগ বলছে, সংবিধানের বাইরে যাবে না। বিএনপির কেউ কেউ বলছেন, সংবিধানের মধ্যে থেকেই সরকারের পদত্যাগে নির্বাচন সম্ভব। এ পরিস্থিতিতে আলোচনার টেবিলে বসে সংকট সমাধানের প্রয়োজন। না হলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংঘাতের দিকে চলে যাবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বিদেশিরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষেও বলছে না, বিপক্ষেও বলছে না। তারা (বিদেশিরা) বলছে সমঝোতার কথা। বিদেশিরা হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তারা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। তারা চায়, আমরা আলোচনার মাধ্যমে আমাদের সমস্যার সমাধান করি।

কমেন্ট বক্স