Thikana News
১৮ অক্টোবর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪


 
২ হাজার ভোটারের হিসাব গড়াতে পারে আদালতে

বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন এলেই  সক্রিয় হয়ে ওঠে চিহ্নিত ‘গুটিবাজ’ চক্র

বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন এলেই  সক্রিয় হয়ে ওঠে চিহ্নিত ‘গুটিবাজ’ চক্র


বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ‘গুটিবাজ’ চক্র। ঢাল-তলোয়ার না থাকলেও নিজেদের ‘নিধিরাম সর্দার’ মনে করেন এই গুটিবাজরা। নির্বাচন ছাড়াও অন্যান্য সময় তাদের কারণে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে ভাঙাগড়ার খেলা চলে। গুটিবাজদের এই অসুস্থ চর্চার কারণে ৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটি সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছে না। হতে পারছে না সত্যিকারের আমব্রেলা সংগঠন। 
আগামী অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গত ৩০ জুন রোববার ছিল সদস্য হওয়ার শেষ দিন। কার্যকরী কমিটির দেওয়া হিসাব মতে- এদিন সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন জমা পড়ে ১৭ হাজার ১৮৭টি। সে হিসাবে বাংলাদেশ সোসাইটির সদস্য সংখ্যা দাঁড়লো ১৮ হাজার ৩৩০ জন। কিন্তু এই ভোটার করা নিয়েও গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। আর এর নেপথ্যে কাজ করছে গুটিবাজরা। তারা সংখ্যায় হাতেগোনা. ১০ থেকে ১২ জন। 
জানা গেছে, সারা বছর সোসাইটির ভালো কোনো কাজের সঙ্গে গুটিবাজদের দেখা যায় না। তারা নিজ নিজ জেলার আঞ্চলিক সংগঠনগুলো নিয়ে ভাঙাগড়ার খেলা করেন। কিন্তু নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ সোসাইটিতে সক্রিয় হয়ে নিজেদের কখনো ‘কিং মেকার’, কখনো ‘থিঙ্কট্যাঙ্ক’ পরিচয় দেন তারা। অথচ গুটিবাজি করে সবকিছু বিনষ্ট করে তারপর শান্ত হন। এর আগে তিন বছর বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন আদালতের নির্দেশে বন্ধ ছিল। এর পেছনেও গুটিবাজদের হাত ছিল। কিন্তু পরে তা আর টেকেনি। 
বাংলাদেশ সোসাইটর গুটিবাজরা বহুরূপী। তারা কেউ ব্যবসায়ী, কেউ রাজনীতিবিদ, আবার কেউ চামচা প্রকৃতির ভাদাইমা। সামান্য কিছু অর্থ প্রাপ্তির আশায় এবং সমাজে একটা পরিচয় নিয়ে বাঁচতে এই গুটিবাজরা বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনের সময় সক্রিয় হয়ে ওঠে। থিঙ্কট্যাঙ্কের নামে যত কুবুদ্ধি আছে তা ঢেলে দেয় প্রার্থী বা প্যানেলের কর্মকর্তাদের কাছে। 
নির্বাচন এলে গুটিবাজরা সক্রিয় হয়ে ওঠে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে সদ্য সমাপ্ত ভোটার কার্যক্রম শেষে। অভিযোগ উঠেছে, গুটিবাজদের প্ররোচনায় হিসাবের বাইরে দুই হাজার ভোটার ওঠানো হয়েছে। এখন বিষয়ি জটিল আকার ধারণ করছে। এর সমাধান না হলে ক্ষুব্ধ একটি অংশ আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন। আর আদালতে গেলে অক্টোবরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা ক্ষীণ হতে পারে। আসতে পারে স্থগিতাদেশ। গুটিবাজদের অনেকে এ সুযোগটি কাজে লাগাতে চায়। গুটিবাজদের একটি পক্ষ মনে করে- প্যাঁচ লাগিয়ে দিয়েছি। এখন ঠেলা সামলাও। আরেকটি অংশ মনে করে- মামলা হলেই তো ভালো। বর্তমান কমিটি দীর্ঘসময় নেতৃত্বে থাকবে। এমন অসুস্থ চিন্তাভাবনা সারাক্ষণ ঘুরতে থাকে গুটিবাজদের মাথায়। অথচ সাধারণ সদস্য ও প্রবাসীরা গুটিবাজ মুক্ত বাংলাদেশ সোসাইটি দেখতে চান, যে সংগঠন কাজ করবে কমিউনিটির কল্যাণে। 
২০০০ ভোটার করা নিয়ে অভিযোগ : বাংলাদেশ সোসাইটির ভোটারের সংখ্যা নিয়ে এবারও নানা কথা ও অভিযোগ উঠেছে। সেখানে একটি পক্ষ বলছেন- দুই হাজার ভোটার বেশি দেখানো হয়েছে। কারণ, গত ২৯ জুন শনিবার যখন ভোটার গণনা হয়, তখন সোসাইটির পক্ষ থেকে জানানো হয় ২৯ জুন শনিবার পর্যন্ত ভোটার হয়েছেন ৫ হাজার ৩০০ জন। এরপর ৩০ জুন রাতে বাংলাদেশ সোসাইটির ভোটার গণনার ও সর্বশেষ  ভোটার নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সোসাইটির কর্মকর্তাবৃন্দ এবং আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা। 
ওই বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র ও আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন এমন একজন প্রার্থী জানান, ভোটার সংখ্যা সোসাইটি থেকে ২৯ জুন বলা হয় ৫ হাজার ৩০০ ভোটার। কিন্তু ৩০ জুন রাতে যখন হিসাব দেখানো হয়, তখন বলা হয় ভোটার হয়েছে ২৯ জুন ৭ হাজার ২০০। তখন প্রার্থীদের কয়েকজন এবং ট্রাস্ট্রি বোর্ডের একজন সদস্য কমিটির কাছে জানতে চান এই ভোটের ব্যবধান কেন এবং এটা আগেভাগে কেন বলা হলো না? অতিরিক্ত দুই হাজার ভোটারের বিষয়ে তারা প্রশ্ন তোলেন। সেইসমেয় এই ভোটার হওয়ার জন্য তারা যে অর্থ দিয়েছেন এর হিসাব চাওয়া হয়। ওই সময়ে সোসাইটির কমিটির গুরুত্বপূর্ণ নেতা জানান যে এটি আগেই হয়েছে। আর ওই ভোটারের ফি কিছু অফিসে আছে। কিছু বাসায় আছে। কিছু ব্যাংকে আছে। কিন্তু এই ভোটারের সংখ্যাটি গোপন করা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। 
একজন সম্ভাব্য প্রার্থী বলেন, প্রায় দুই হাজার ভোট নিয়ে যে সংখ্যার গরমিল এটাতো করার কোন দরকার নেই। কে কবে ভোটার হয়েছেন এটা স্পষ্ট। সুতরাং এ নিয়ে  সংখ্যা হেরফের করার কিছুই নেই। কিন্তু কেন ২৯ তারিখ ৫ হাজার ৩০০ বলা হলো, এরপর ৩০ জুন বলা হলো ৭ হাজার ২০০। তাহলে প্রশ্ন হলো- এই ভোটার কারা এবং তারা কার মাধমে, কেমন করে ফি দিয়ে ভোটার হলেন?

কমেন্ট বক্স