দর্শনশাস্ত্রে জ্ঞান-সম্পর্কীয় মতবাদে বুদ্ধিবাদ ও অভিজ্ঞতাবাদÑদুটি মূলধারার মতবাদ পাওয়া যায়। বুদ্ধি স্রষ্টা-প্রদত্ত আর অভিজ্ঞতা মানুষ আহরণ করে। সেখানে অভিজ্ঞতা অনুপ্রেরণারই মূল্যবান উৎস। যার জীবনে অনুপ্রেরণার অভাব, সে জীবনে ভালো কিছু অর্জন করতে পারে না। বিভিন্ন গুণীজনের কথা ও কাজ অনুসরণ করে বা পরামর্শ শুনে অনেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেক কিছু অর্জন করতে পেরেছেন এবং নিজের জীবনকে উপলব্ধি ও সমৃদ্ধ করতে পেরেছেন।
আমাদের উচিত বিখ্যাত ব্যক্তিদের অনুসরণ করা। জীবন নিয়ে আমাদের আগ্রহী হয়ে ওঠা। পড়ার ও জানার অভ্যাস এবং অভিজ্ঞতা ও অনুপ্রেরণা অর্জন করা। আমার এই লেখাগুলোতে জীবন নিয়ে সুখ ও দুঃখের কিছু ভিন্ন স্বাদ পাবেন। আশা করছি, এই লেখাগুলো আপনাকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করবে। জীবনকে ভালোভাবে বুঝতে হলে ভ্রমণ করতে শিখুন। জীবনে আফসোস করো না, কেবল শিক্ষা গ্রহণ করো, সবকিছু অর্জন করতে পারবে। মানুষের জীবনে দুটি সময় থাকে, একটি হচ্ছে মূল্যবান, আরেকটি হচ্ছে মূল্যহীন। মানুষের জীবনকে যদি ফুলের সঙ্গে তুলনা করা হয়, তাহলে সেই ফুলের মধু হচ্ছে ভালোবাসা।
যারা আমাকে কোনো রূপ সাহায্য করতে সবাইকে মানা করে দিয়েছিল, আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ তাদের ‘না’ এর জন্যই আজ আমি নিজের কাজ নিজে করতে শিখেছি। জীবন খুবই কঠিন, আপনি যখন বোকা হন, তখন জীবন আরও কঠিন হয়। যারা সহজে মানুষকে অকপটে ঠকাতে পারে, তারা জীবনে সাময়িক সুখী আর বাকিরা জীবনে সাময়িক দুঃখী। জীবন চলার পথে বাধা আসতেই পারে। তাই বলে থেমে যাওয়ার কোনো অবকাশ নেই। জীবনে যেখানে বাধা আসবে, সেখান থেকেই আবার শুরু করতে হবে।
জীবন আপনাকে যেটা দেবে তার অপচয় করবেন না, সেখান থেকে জীবনকে উন্নতি করার চেষ্টা করুন। যে অন্যের জন্য বাঁচে বা জীবনকে উৎসর্গ করে, তার জীবন সার্থক। একেকজন মহান ব্যক্তির কাছে জীবন নিয়ে ভাবনা একেক রকম। যেমন হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন, জীবন খুবই বড় ব্যাপার। অন্যদিকে স্টিভ জবস বলেছেন, জীবন খুবই ছোট ব্যাপার। তবে আপনি যা বিশ^াস করবেন, আপনার জীবনে তা আসার সম্ভাবনা বেশি। তাই নিজের জীবনকে নিজে বিশ^াস করতে শিখুন এবং সামনে এগিয়ে যান এবং জীবন নিয়ে উৎসাহিত হোন।
সবার জন্য প্রযোজ্য, আমি আমার জীবনে যতবার ব্যর্থ হয়েছি এবং সে কারণেই আমি ততবার আমার জীবনে সফল হয়েছি। প্রতিদিন আমাদের এমনভাবে কাটানো উচিত, যেন আজ জীবনের শেষ দিন। স্বপ্নপূরণই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়, তাই বলে স্বপ্নকে ত্যাগ করবেন না, তাকে সঙ্গে নিয়ে চলুন, স্বপ্ন ছাড়া জীবন অর্থহীন। সুখে থাকতে সবাই চায় কিন্তু কিছু মানুষের জীবনে সুখে থাকতে চাওয়াটাই দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
আপনি আপনার জীবনে যতবার হেরেছেন, ঠিক ততবার শিক্ষা অর্জন করেছেন। জীবনে সুখী হতে হলে জীবনকে একটা লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে চলুন, তাহলে আপনি সুখী ও সফল হতে পারবেন। অর্থ ও সাফল্য মানুষকে পরিবর্তন করে না, মানুষের সবকিছু বৃদ্ধি করে। জীবনকে জীবনের গতিতে চলতে দিন, দিন আপনারও আসবে। জীবন হলো সাইকেল চালানোর মতো। আপনার ভারসাম্য বজায় রাখতে আপনাকে অবশ্যই অভ্যাসে পরিণত করে চালাতে হবে।
যে জীবনকে উপলব্ধি করতে পারে না, সে জীবনে ভালো কিছু অর্জন করতে পারে না। জীবন নিয়ে বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তি অনেক গবেষণা ও লেখাজোকা করেছেন। তাই জীবনের জন্য অনুপ্রেরণা জোগাতে আমাদের জীবন নিয়ে উপলব্ধি থাকা উচিত এবং পড়াশোনা করা প্রয়োজন। জীবন নিয়ে যারা বেশি ভাবে, তারা জীবনকে উপভোগ করতে পারে না। তাই অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি বলেছেন জীবন নিয়ে না ভাবতে। জীবন একটা পর্বত। লক্ষ্য হলো সঠিক পথ অনুসন্ধান করা, শীর্ষে পৌঁছানো নয়। সে জীবনে জয়লাভ করেছে, যে অন্যের মন জয় করতে পেরেছে। জীবনে তারাই মহান হতে পেরেছেন, যারা জীবনে ত্যাগী ছিলেন। জীবন হলো কলমে আঁকা এক ছবির নাম, যার কোনো অংশ রাবার দিয়ে মুছে ফেলা যায় না।
জীবন নাকি দুই ভাগে বিভক্তÑএক ভাগ ঘুম, আরেক ভাগ টেনশন। মানুষের জীবন এক চমৎকার উপকথা, যা বিধাতা নিজে লিখেছেন। যে মন খুলে হাসতে পারে না, সেই ব্যক্তি পৃথিবীতে সবচেয়ে অসুখী। যদি অল্পতেই আপনার মন খারাপ হয়ে যায়, তাহলে বুঝে নেবেন পৃথিবীটা আপনার জন্য অনেক কঠিন। আপনার জীবনের একেকটি মুহূর্তের জন্য কৃতজ্ঞ থাকুন, কারণ আপনি জীবনকে উপভোগ করছেন। জীবন নিয়ে যে যত বেশি আফসোস করে, তার জীবনে তত বেশি দুঃখ।
সকল মানুষের জীবনে মানসিকভাবে শান্তি দেওয়ার জন্য কাউকে না কাউকে প্রয়োজন। তবে আপনার জীবনে মানসিকভাবে শান্তি দেওয়ার মতো মানুষের অভাব থাকলেও মানসিকভাবে দুঃখ দেওয়ার মতো মানুষের অভাব নেই। তাই সেই সকল মানুষকে এড়িয়ে চলুন, যারা আপনাকে মানসিকভাবে দুঃখ দিয়ে থাকে। আর মানসিকভাবে দুঃখ কমাতে আমার জীবন নিয়ে কিছু কথা লেখা রইল।
আপনার জীবনের সঙ্গে আপনি তিনটি জিনিস করতে পারেন। আপনি এটি নষ্ট করতে পারেন, আপনি এটি ব্যয় করতে পারেন বা আপনি এটি বিনিয়োগ করতে পারেন। আপনার জীবনের সর্বোত্তম ব্যবহার হলো এটিকে এমন কিছুতে বিনিয়োগ করা, যা পৃথিবীতে আপনার সময়ের চেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হয়। জীবনে অনেক ব্যর্থ এমন লোক, যারা হাল ছেড়ে দেওয়ার সময় বুঝতে পারেনি যে তারা সাফল্যের কতটা কাছাকাছি ছিল। সমস্ত লোকের জন্য আপনি যতটা পারেন, যতক্ষণ আপনি পারেন ততটা ভালো করুন।
মানুষের পুরো জীবনটা হচ্ছে একটা সরল অঙ্ক, যতই দিন যাচ্ছে ততই আমরা তার সমাধানের দিকে যাচ্ছি। জীবন আপনাকে যা দেয় তার জন্য স্থির হবেন না, জীবনকে আরও ভালোভাবে তৈরি করুন। জীবন আপনার ওপর এমন কিছু চাপিয়ে দেয়, যা আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। তবে আপনি কীভাবে এটির মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করবেন, তা নির্ধারণের সময় এখনো আছে। আমি যত বেশি বেঁচে থাকি, জীবন ততই সুন্দর হয়ে ওঠে। জীবন একটি পর্বত, আপনার লক্ষ্য আপনার পথটি সন্ধান করা, শীর্ষে পৌঁছানো নয়।
মানুষকে ঠকাতে যাদের বুক কাঁপে, বিবেকে বাধে, তাদের জীবনে কখনো সুখ হয় না, দুঃখই সারা জীবন তাদের আড়াল করে রাখে। জীবনে যে পরিমাণ ভালোবাসা পেয়েছি, তা দিয়ে কয়েক হাজার বছর বেঁচে থাকা সম্ভব কিন্তু। জীবনে গুটি কয়েকজন মানুষের কাছ থেকে যে পরিমাণ অবহেলা পেয়েছি, তা নিয়ে এক দিনও বেঁচে থাকা সম্ভব না। মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন হলো একটি অভিশাপের নাম, জন্ম থেকেই যাদের জীবন কাটে মানিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে। একটি সফল জীবনের সম্পূর্ণ রহস্য হলো, একজনের ভাগ্য কী তা খুঁজে বের করা এবং তারপরে তা করা।
সবাই বিখ্যাত হতে চায়, কিন্তু কেউ কাজ করতে চায় না। দিনের শেষে, আপনি সমস্ত কাজ করেন এবং অবশেষে এটি হবে। এটি এক বছরের মধ্যে হতে পারে, এটি ৩০ বছরেও হতে পারে। অবশেষে, আপনার কঠোর পরিশ্রম প্রতিফল হবেই। জীবন কখনোই সহজ নয়। কাজ করতে হবে এবং বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে হবে সত্য, ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতার বাধ্যবাধকতা। জীবন একটি মুদ্রার মতো। আপনি এটি আপনার ইচ্ছামতো ব্যয় করতে পারেন, কিন্তু আপনি এটিকে শুধু একবার ব্যয় করতে পারবেন। জীবন দুঃখজনক হবে, যদি এটি মজার না হয়। অপরীক্ষিত জীবন বেঁচে থাকার যোগ্য নয়। জীবন হলো পাঠের ধারাবাহিকতা, যা বোঝার জন্য বেঁচে থাকতে হবে। ভালো বন্ধু, ভালো বই এবং একটি ঘুমন্ত বিবেক, এটিই আদর্শ জীবন। জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ হলো ভালোবাসা। জীবনের ট্র্যাজেডি হলো যেমন আমরা খুব তাড়াতাড়ি বুড়ো হয়ে যাই এবং অনেক দেরিতে জ্ঞানী হই। আপনি যদি সেরা কাজটি করতে পারেন এবং সুখী হতে পারেন, তবে আপনি বেশির ভাগ মানুষের চেয়ে জীবনে আরও এগিয়ে আছেন।
নিজেকে সীমাবদ্ধ করবেন না। অনেক লোক নিজেদেরকে সীমাবদ্ধ রাখে, তারা যা করতে পারে বলে মনে করে। আপনি যতদূর যেতে পারেন আপনার মন আপনাকে দেয়। আপনি যা বিশ^াস করেন, মনে রাখবেন, আপনি অর্জন করতে পারেন। জীবন হচ্ছে মৃত্যুর ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। জীবন মজার না হলে করুণ হয়ে উঠত। জীবনে ভালো সময় ও খারাপ সময় থাকবেই, তাই বলে মাঠ ছেড়ে চলে যাবেন। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত জীবনযুদ্ধে লড়াই করে যাবেন। আপনি বিলম্ব করতে পারেন, কিন্তু সময় হবে না। সময় অর্থের চেয়ে বেশি মূল্যবান। আপনি আরও টাকা পেতে পারেন, কিন্তু আপনি বেশি সময় পেতে পারেন না। কিন্তু সমস্যা হলো, আপনি মনে করেন আপনার কাছে সময় আছে। হয় আপনি দিন চালান, না হয় দিন আপনাকে চালাবে। আপনি সময়কে ঠকাবেন তো একদিন সময় আপনাকে ঠকাবে। আপনি আজ যা করতে পারেন, তা কখনোই আগামীকাল পর্যন্ত রেখে দেবেন না। নির্দেশের অভাব, সময়ের অভাব নয়, সমস্যা। আমাদের সবারই চব্বিশ ঘণ্টার দিন আছে। একটি লক্ষ্য একটি সময়সীমাসহ একটি স্বপ্ন। ঘড়ি দেখবেন না; এটি যা করে তা করুণ, চলতে থাকা। সমস্ত মহান অর্জনের জন্য সময়ের প্রয়োজন। সাহস সহসাই চাপের মধ্যেও অনুগ্রহ তৈরি করে। সৎ এবং সত্যবাদী হওয়া সব সময় সেরা। আমাদের যা আছে তার সর্বাধিক ব্যবহার করা উচিত। সাধারণ আনন্দে খুশি হওয়া এবং যখন কিছু ভুল হয়ে যায় তখন সাহস রাখুন। কিছুই অসম্ভব নয়, শব্দটি নিজেই বলে, ‘আমার দ্বারাই সম্ভব! যতক্ষণ আপনি থামেন না ততক্ষণ আপনি কতটা ধীরে যান, তা বিবেচ্য নয়। দোষ খুঁজবেন না, একটি প্রতিকার খুঁজুন যে কাউকেই অভিযোগ করা যায়, তবে সমাধান খোঁজাটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।