Thikana News
০৪ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪

দাফনের ৯ দিন পর বাড়ি ফিরলেন তরুণী!

দাফনের ৯ দিন পর বাড়ি ফিরলেন তরুণী! ছবি সংগৃহীত
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দাফনের ৯ দিন পর বাড়ি ফিরলেন নিখোঁজ তরুণী রোকসানা আক্তার। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের রাজবল্লবপুর গ্রামে। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসীর প্রশ্ন, দাফন করা নারী তাহলে কে? অপরদিকে ফিরে আসা তরুণীকে একনজর দেখতে উৎসুক মানুষ তার বাড়িতে ভিড় করছেন। ফিরে আসা রোকসানা আক্তার ওই গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের মেয়ে। জানা গেছে, মে মাসের শেষে রোকসানা আক্তার চৌদ্দগ্রামে নিজ বাড়ি থেকে ছোট ভাই সালাহ উদ্দিনের চট্টগ্রামের ষোলশহরের বাসায় বেড়াতে যান। ১ জুন ভোরে কাউকে না জানিয়ে রোকসানা বাসা থেকে বের হয়ে যান। এরপর দীর্ঘদিন আত্মীয়স্বজনসহ সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।

গত ১৭ জুন ঈদুল আজহার দিন বিকেলে ফেনী শহরে ভাড়া বাসায় অবস্থানরত রোকসানার খালাতো বোন হাজেরা আক্তার ও খালাতো ভাই শাহজাহান খবর পান, ফেনী শহরের জিয়া মহিলা কলেজের সামনে ড্রেনে একজন নারীর লাশ পড়ে আছে। তারা সেখানে গিয়ে লাশের চেহারা রোকসানা আক্তারের চেহারার সঙ্গে মিল দেখে ভাই এবায়দুল হককে জানান। এর মধ্যে ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ লাশটির সুরতহাল শেষে উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। রাতেই এবায়দুল হক জিয়া মহিলা কলেজের ড্রেন এলাকায় পৌঁছে স্থানীয়দের রোকসানার ছবি দেখিয়ে লাশটি একই রকম কি না জিজ্ঞেস করলে সবাই ছবির সঙ্গে মিল রয়েছে বলে জানান।

পরে এবায়দুল হকসহ আত্মীয়স্বজনসহ ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে লাশ উদ্ধারকারী উপপরিদর্শক প্রতুল দাসের সঙ্গে দেখা করে বোন রোকসানার ছবি দেখান। পরে তারা রোকসানার লাশ শনাক্ত করেন। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ এবায়দুল হকের হাতে বোন রোকসানা আক্তারের লাশ হস্তান্তর করে। ওইদিন বাদ আসর গুণবতী ইউনিয়নের রাজবল্লবপুর মধ্যমপাড়ায় সামিশকরা দিঘির দক্ষিণ পাড়ে তার লাশ দাফন করা হয়।

লাশ দাফনের ৯ দিন পর গত বুধবার (২৬ জুন) বিকেলে বাড়িতে হাজির হন রোকসানা। তাৎক্ষণিক ঘটনাটি জানাজানি হলে বাড়িতে উৎসুক মানুষ তাকে দেখতে ভিড় জমায়। এ সময় এলাকাবাসী তাকে জিজ্ঞেস করলে রোকসানা বলতে থাকেন, কে বলছে আমি মারা গেছি। আমি চাকরির খোঁজে ঢাকা গেছি। শরীর খারাপ থাকায় কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি।

রোকসানা আক্তার বলেন, আমি চট্টগ্রাম ভাইয়ের বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলে ঢাকায় চলে যাই। সেখানে গিয়ে আমি একটি চাকরি পেয়েছি। যেহেতু আমি বাড়ি থেকে কোনো কাপড় নিয়ে যাইনি, তাই কাপড় নিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়িতে ফিরে আসি। বুধবার (২৬ জুন) বাড়িতে এসে দরজা নক করলে আত্মীয়স্বজনরা আমাকে দেখে হতবাক হয়েছেন। তখন আমি জানতে পারি, আমি নাকি মারা গেছি এবং আমার লাশও দাফন করা হয়ে গেছে। আমি তো জীবিত ফিরে এলাম।

রোকসানার ভাই এবায়দুল হক বলেন, ছবিতে কিছুটা মিল থাকার কারণে বোনের লাশ মনে করে পুলিশ থেকে লাশটি এনে দাফন করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে রোকসানা জীবিত বাড়ি ফিরলে ফেনী মডেল থানায় গিয়ে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু মুসা বলেন, লোক মারফতে বিষয়টি শুনেছি। তবে কার লাশ দাফন করা হয়েছে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক প্রতুল দাস বলেন, উদ্ধার করা লাশটি বিকৃত ছিল। এবায়দুল হক ও তার স্বজনরা উদ্ধারকৃত লাশটি রোকসানার বলে শনাক্ত করে আমার কাছ থেকে নিয়ে যায়। এখন যেহেতু তাদের বোন সশরীরে বাড়িতে উপস্থিত হয়েছে, তাই আমরা বিষয়টি নতুন করে তদন্ত করব।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি ত্রিনাথ সাহা বলেন, তরুণী নিখোঁজ, উদ্ধার, দাফন ও আবার ফিরে আসার বিষয়ে কেউ আমাকে অবগত করেনি। খবর নিয়ে দেখব আসলে কী ঘটেছে।

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স