মশা কিছু নির্দিষ্ট গন্ধ ও রঙের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এই সপ্তাহে যখন তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে, তখন আপনি বাইরে যেতে আগ্রহী হতে পারেন। কিন্তু এর সাথে মশার কামড় খাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। আর আপনি যদি অনেক মশার কামড় খেয়ে থাকেন, তাহলে হয়তো এটি আপনার গন্ধ বা পোশাকের রঙের কারণে হতে পারে। তাই আপনাকে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
মশার সংবেদনশীল সিস্টেম নিয়ে গবেষণা করেন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক জেফরি রিফেল। তিনি বলেন, ‘কিছু ব্যক্তি অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি কামড় খায়। এর কারণ তার শরীরের গন্ধ ও পোশাকের রঙ।’ তার গবেষণা মতে, পুরুষ মশা ফুলের মধু পান করে শর্করা পায়, আর মেয়ে মশা ডিম পাড়ার জন্য রক্ত পান করে। মশা বিভিন্ন ধরণের গন্ধ এবং রঙের দ্বারা আকৃষ্ট হয়।
সাম্প্রতিক এই গবেষণায় দেখা গেছে, মশা কার্বন ডাই অক্সাইড, ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং অ্যামোনিয়ার মতো গন্ধের প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হয়। এই গন্ধগুলো মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর শ্বাস-প্রশ্বাস ও ঘামের মাধ্যমে নির্গত হয়।
রঙের ক্ষেত্রে মশা কালো, লাল ও নীল রঙের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এই রঙগুলো প্রায়শই ফুল এবং অন্যান্য উদ্ভিদের সাথে যুক্ত থাকে যেখানে মশা খাদ্য খেতে এবং ডিম পাড়তে পারে। তবে তারা সাদা এবং সবুজ রং অপছন্দ করে।
আপনি যদি খুব আকর্ষণীয় হন এবং তারা আপনাকে একবার কামড়ায় ও আপনার রক্ত পান করে, তাহলে তারা আপনাকে আবার খুঁজে পাবে। কারণ তারা ইতিবাচক সংযোগ শিখেছে।
ভালো খবর হলো, তারা আপনাকে এড়াতে শিখতে পারে, তাই আপনি যদি তাদের তাড়া করেন তারা এটি শিখবে এবং আপনাকে একটু এড়িয়ে চলবে।
রিফেলের গবেষণা মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন কৌশল বিকাশে সাহায্য করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বিজ্ঞানীরা মশাকে আকর্ষণ ও নিধন করে এমন গন্ধ বা রঙ ব্যবহার করে মশা প্রতিরোধক তৈরি করতে পারেন।
এই গবেষণা এও বোঝাতে পারে যে আমরা মশাকে আকর্ষণ করা এড়াতে পদক্ষেপ নিতে পারি। উদাহরণস্বরূপ, আমরা এমন পোশাক এড়িয়ে চলতে পারি যা কালো, লাল বা নীল রঙের হয়। নিয়মিত গোসল ও ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করে আমরা আমাদের ত্বক থেকে ঘামের গন্ধ কমাতে পারি। আমরা আমাদের বাড়ি ও উঠান পরিষ্কার রাখতে পারি যাতে মশার প্রজননের জন্য পানি জমে না থাকে।
রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) মশাকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে মারণ প্রাণী’ বলে অভিহিত করেছে। কারণ মশা মানুষের মধ্যে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু জ্বর, ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস এবং জিকা ভাইরাসের মতো রোগ ছড়াতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি বেড়েছে।
রিফেলের গবেষণা আমাদের এই কীটপতঙ্গগুলো সম্পর্কে আরও ভালভাবে বুঝতে এবং তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আরও কার্যকর উপায় উদ্ভাবন করতে সাহায্য করবে।


ঠিকানা রিপোর্ট


