Thikana News
২৭ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫


নিউ হেরিটেজ ওয়াকসহ জুনটিন্থ উদযাপন

কমিউনিটি অপ-এড
নিউ হেরিটেজ ওয়াকসহ জুনটিন্থ উদযাপন



 
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস কমিউনিটি অপ-এডে লিখেছেন, সিটির দ্বিতীয় কৃষ্ণাঙ্গ মেয়র হিসেবে আমি জুনটিন্থ উদযাপন করতে পেরে গর্বিত। এটি এমন একটি দিন যা ১৮৬৫ সালের ১৯ জুনকে স্মরণে আনে। এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রীতদাস প্রতিটি কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান চুড়ান্তভাবে মুক্ত হয়। এটি শুধুমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের জন্য নয়, সব আমেরিকানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এটি এমন একটি দিন যখন স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি চূড়ান্তভাবে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের জীবিত বাস্তবতার সাথে মিলে যায়। এটি এমন একটি দিন যখন আমেরিকা যে স্বাধীনতার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত তা অবশেষে নাগরিকদের একটি বিস্তৃত গোষ্ঠীর কাছে সহজলভ্য হয়। 
আমরা সকলেই জানি, এটি একটি দীর্ঘ সংগ্রামের শুরু মাত্র। এটি আবাসন ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে ব্যালট বাক্স ও বোর্ডরুম পর্যন্ত সমান অধিকারের জন্য সংগ্রাম যা বর্তমান দিন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। একটি ভালো ভবিষ্যত গড়ার লক্ষে জুনটিন্থ এবং আমরা বিগত শতাব্দী ও দশকে যে অগ্রগতি অর্জন করেছি তার সম্মানে, আমাদের প্রশাসন অতীতের সাথে তুলনা করার জন্য বর্তমানকে ব্যবহার করতে তার ভূমিকা পালন করতে চায়।
নিউইয়র্কবাসী প্রতিদিন ব্রুকলিনের মতো মহল্লা/পাড়া এলাকা দিয়ে হেঁটে বেড়ায়, অথচ তাদের পায়ের নিচের এবং চারপাশের ইতিহাস সম্পর্কে অজানা। সেই ইতিহাস জানাতে আমরা ‘ব্রুকের চেয়েও বেশি: ব্রুকলিন অ্যাবোলিশনিস্ট হেরিটেজ ওয়াক’ চালু করেছি। এটি একটি ইন্টারেক্টিভ অডিও ট্যুর যা ব্রুকলিনের ইতিহাসকে ন্যাশনাল অ্যাবোলিশনিস্ট মুভমেন্ট এবং আন্ডারগ্রাউন্ড রেলরোডের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে প্রমাণ করে। ৪.৫-মাইল হাঁটার যোগ্য পথটি ১৯টি স্টপকে অন্তর্ভুক্ত করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাইটকে তুলে ধরে যা বরোর সমৃদ্ধ বিলোপবাদী ইতিহাসকে ধারণ করে। পথে বিখ্যাত বিলোপবাদী সাইটগুলো দেখার পাশাপাশি, আপনি নারীব্যবসায়ী এলিজাবেথ গ্লুসেস্টার, অগ্রণী বোন ড. সুসান স্মিথ ম্যাককিনি-স্টুয়ার্ড ও শিক্ষাবিদ সারা জে টম্পকিন্স গার্নেট এবং প্লাইমাউথ চার্চের প্রচারক হেনরি ওয়ার্ড বীচার-সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারেন। ল্যান্ডমার্ক প্রিজারভেশন কমিশনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনার স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা অন্য ডিভাইসে এই ট্যুরটি অ্যাক্সেস করা যেতে পারে। এই ইন্টারেক্টিভ ট্যুরের মাধ্যমে, আমাদের শহর সেই বীরদের উদ্যাপন করতে পারে যারা তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন এবং তাদের প্রাপ্য স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন।
শহরের অ্যাবোলিশনিস্ট (বিলুপ্তিবাদী) ইতিহাস পাঁচটি বরোজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। স্টেটেন আইল্যান্ডের ওকউড হাইটসে আমরা ফ্রেডারিক ডগলাস মেমোরিয়াল পার্ককে গুরুত্বপূর্র্ণ হিসেবে মনোনীত করে আমাদের ভাগ করা ইতিহাসকে স্মরণ করছি। ফ্রেডারিক ডগলাস মেমোরিয়াল পার্ক হলো নিউইয়র্ক সিটির ব্ল্যাক কমিউনিটি প্রতিষ্ঠিত একমাত্র অসাম্প্রদায়িক কবরস্থান। মেমোরিয়াল পার্কটি ১৯৩৫ সালে চালু হয় এবং ব্ল্যাক নিউইয়র্কবাসীকে একটি মর্যাদাপূর্ণ কবরস্থান দেয়। ঐ সময় বৈষম্য এবং বিচ্ছিন্নতা ব্ল্যাকদের অন্যান্য সমাধিস্থল থেকে বাদ দিয়েছিল এবং নিম্নমানের সুযোগ-সুবিধা ও পরিষেবাগুলোতে সীমাবদ্ধ রেখেছিল। যখন অন্যরা ব্ল্যাক নিউইয়র্কারদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, এমন একটি সময়ে এই পার্কটি তার দরজা খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৪.৮৮ একরের সমাধিস্থলটি ব্ল্যাক ঐতিহ্যকে স্মরণ করে এবং সেখানে সমাহিত ব্ল্যাক আমেরিকানদের প্রজন্মকে সম্মান করে। যারা মারা গেছেন তাদের সম্মান জানাতে ফ্রেডারিক ডগলাস মেমোরিয়াল পার্ক কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের জন্য একটি মর্যাদাপূর্ণ এবং উৎসর্গীকৃত স্থান। তবে জুনটিন্থের আমাদের স্মরণ শুধু প্রতীকী হতে পারে না, বরং তাৎপর্যপূর্ণ। 
গত জানুয়ারিতে শ্বেতাঙ্গ নিউইয়র্কবাসীর তুলনায় ব্ল্যাক নিউইয়র্কবাসীর বেকার হওয়ার সম্ভাবনা ছিল চারগুণ বেশি। কিন্তু আমাদের প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ, আমরা এই ব্যবধান কমাতে সক্ষম হয়েছি এবং এখন ব্ল্যাক নিউইয়র্কবাসীর বেকারত্বের হার অর্ধ দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। ২০১৯ সালের পর এই প্রথমবারের মতো নিউইয়র্ক সিটিতে কৃষ্ণাঙ্গ বেকারত্বের হার ৮ শতাংশের নিচে রয়েছে। ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ১ এপ্রিলের মধ্যে পাঁচটি বরোতে কৃষ্ণাঙ্গ বেকারত্বের হার ১০.৭ শতাংশ থেকে ৭.৯ শতাংশে নেমে এসেছে- যা ২৬ শতাংশ হ্রাস। যদিও আমাদের কাজ কখনো করা হয় না, আমাদের শহর অর্থনৈতিক ইক্যুইটি প্রদানে প্রকৃত অগ্রগতি অর্জন করছে।
এই জুনটিন্থে আমি সমস্ত নিউইয়র্কবাসীকে আমাদের শহর ও জাতির অনুপ্রেরণাদায়ক ও সমস্যাযুক্ত অতীত সম্পর্কে জানতে ও সম্মান করতে এবং আমরা যে অগ্রগতি অর্জন করেছি তার উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যত গড়ে তোলার আহ্বান জানাই। আসুন আমরা একসাথে আমেরিকান আদর্শ, আমেরিকান স্বাধীনতা এবং আমেরিকান সম্ভাবনা উদযাপন করি। আসুন এখানেই শুরু করি। পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় এই শহরে, এটি এমন একটি জায়গা যেখানে জীবনের সকল স্তরের লোকেরা পাশাপাশি বাস করে, নিজেদেরকে এক নামে ‘নিউইয়র্কবাসী’ ডাকতে পেরে গর্ব বোধ করে।

কমেন্ট বক্স