Thikana News
০৪ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪

বাদামি চাল খাওয়ার ভালো-মন্দ

বাদামি চাল খাওয়ার ভালো-মন্দ
কার্বোহাইড্রেইট বেশি গ্রহণ করা হয়ে যাবে বলে ভাত খাওয়া অনেকেই ছাড়েন ওজন কমাতে গিয়ে। তবে বাদামি চালের ক্ষেত্রে বিষয়টা ভিন্ন। কারণ এই চাল হল অপরিশোধিত পূর্ণ শস্য। এই বিষয়ে ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট ভিত্তিক পুষ্টিবিদ মেলিসা মিট্রি বলেন, “মানে হল বাদামি চালে শস্যের তিন উপাদানই থাকে। ভুষি যা কিনা আঁশ, পুষ্টিকর অঙ্কুর এবং কার্ব সমৃদ্ধ এন্ডোস্পার্ম।”

এসব উপাদান সুষম খাদ্যাভ্যাসের জন্য প্রযোজ্য, যোগায় পুষ্টি- যা সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আবার কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো বিরূপ প্রভাবও ফেলতে পারে। এই পুষ্টিবিদ বলেন, ‘সাধারণভাবে চাল বা ভাতে গ্লুটেন থাকে না। তবে কিছু চালে থাকতে পারে যা অ্যালার্জির কারণ হয়ে যায়। এছাড়া কোনো কোনো চালে ক্ষতিকর আর্সেনিক থাকে। যে কারণে খাওয়ার পরিমাণ রাখতে হয় সীমিত।’তবে সার্বিকভাবে বাদামি বা লাল চালের ভাত দেহে উপকারী প্রভাব রাখে।

সাদা চালের তুলনায় বাদামি বা লাল চালে আঁশের পরিমাণ বেশি থাকে। এক কাপ লাল চাল থেকে মিলবে প্রায় ৩ গ্রাম আঁশ। অন্যদিকে একই পরিমাণ সাদা চালে থাকে ০.৫ থেকে ১ গ্রামের মতো আঁশ।
তাই সবজি ও ফলের পাশাপাশি বাদামি চাল খাওয়ার অভ্যাসে আঁশ গ্রহণের পরিমাণ বাড়বে। ফলে হজমে সুবিধা, ওজন ব্যবস্থাপনা, রক্তে শর্করার মাত্র নিয়ন্ত্রণ, কোলেস্টেরল কম রাখাসহ নানান উপকার পাওয়া সম্ভব হয়।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট’য়ের উৎস
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ থাকে বাদামি চাল। এই উপাদান কোষের ক্ষতি কমিয়ে, প্রতিরক্ষা করে স্বাস্থ্যকর বয়স ধরে রাখতে সাহায্য করে। দেহে বিষাক্ত পদার্থের মাত্রা কমিয়ে ‘অক্সিডেটিভ’ চাপ কমাতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন অন্ত্রের কাজে ভারসাম্য রক্ষা করতেও কার্যকর ভূমিকা রাখে।

ওজন কমানোতে সহায়ক
শস্যের সব উপাদান থাকে বলে বাদামি চাল খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা অনুভূতি দিতে পারে। বিশেষ করে এতে থাকা আঁশ এই ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। যে কারণে বিভিন্ন গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, বাদামি চাল না খাওয়াদের তুলনায় যারা খায় তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ হয় দ্রুত।

হৃদস্বাস্থ্য ভালো রাখতে
যে কোনো ধরনের পূর্ণ শস্য খাওয়া, যেমন- বাদামি চাল হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। কারণ এটা কোলেস্টরলের মাত্রা কম রাখতে সাহায্য করে।কিছু গবেষণায় দেখা গেছে বাদামি চালে উচ্চ মাত্রায় এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরল থাকে। কম থাকে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল।

রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে পারে
যদিও বাদামি চালে কার্বোহাইড্রেইট থাকে। তবে আঁশের পরিমাণ বেশি থাকায় ধীরে হজম হয়। ফলে রক্তে শর্করা মেশে দেরি করে। ফলে সার্বিকভাবে কার্বোহাইড্রেইট দেহে শোষিত হয় কম। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায় না। একারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীসহ সবাইকে বাদামি চাল বা পাস্তা খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

কিছু অপকারিতা
যাদের ‘সিলিয়াক’ রোগ রয়েছে তাদের হজমে সমস্যা হতে পারে বাদামি চাল খেলে। এই রোগের কারণে গ্লুটেন হজম করতে সমস্যা হয় বা অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেয়।
যদিও বাদামি চালে প্রাকৃতিকভাবে গ্লুটেন থাকে না। তবে রয়েছে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ‘অর্জিনিন’, এটা এক প্রকার গ্লুটেন।
মিট্রি বলেন, ‘সিলিয়াক’ রোগীদের মাঝে যদিও খু্ব কম ক্ষেত্রে এই প্রভাব লক্ষ করা যায়। তারপরও সাবধান থাকা উচিত।
এছাড়া সাদা চালের তুলনায় বাদামি চালে দেড়গুণ বেশি আর্সেনিক থাকতে পারে। তবে বেশি মাত্রায় বাদামি চাল গ্রহণ এই বিষাক্ত পদার্থ শরীরে ক্ষতি করতে পারে।
সার্বিকভাবে আর্সেনিক এড়ানোর দরকার নেই। আর কোনো কোনো খাবারে এই পদার্থ থাকতে পারে।
পরামর্শ দিতে গিয়ে মিট্রি বলেন, তাই যারা মা হতে চলেছেন তাদের ক্ষেত্রে সাবধান হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ আর্সেনিক গর্ভপাত ও মৃতসন্তান প্রসবের ঝুঁকি বাড়ায়।
আবার বাদামি চালে রয়েছে ‘ফাইটিক অ্যাসিড’ যা লৌহ, ক্যালসিয়াম ও জিঙ্ক- এই খনিজগুলো দেহে শোষণের মাত্রা কমায়।
তবে মনে রাখতে হবে যেসব খাবারে এই খনিজগুলো রয়েছে সেসবের সঙ্গে খেলে ‘ফাইটিক অ্যাসিড’ শোষণের মাত্রা কমায়। আগে পরে খেলে সমস্যা নেই।
তবে ভালো খবর হল, বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের বাদামি চাল পাওয়া যায় যেগুলোতে নেতিবাচক প্রভাব কম।

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স