Thikana News
০৬ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ইসির ওপর চাপ

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ইসির ওপর চাপ



 
নিজস্ব প্রতিনিধি : চলতি বছরের প্রথম দিকেই নির্বাচন কমিশনে বিদেশি কূটনীতিকদের আনাগোনা শুরু হয়। গত ১৮ জানুয়ারি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে সম্ভাব্য নির্বাচনে ভোটের সার্বিক প্রস্তুতির খবর জানতে চায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে। ওই সময় তারা সিইসির কাছে জানতে চেয়েছিল, সব দল নির্বাচনে আসবে কি না, ইভিএমের ওপর দলগুলো আস্থা রাখছে কি না? তারও আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেলিগেশন ও রাষ্ট্রদূতরা গত বছরের জুলাইতে ইসিতে এসেছিলেন। জানুয়ারিতে ইইউকে সিইসি হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছিলেন, ইসি আশা করে, অচিরেই মতপার্থক্যটা দূর হয়ে যাবে। শেষমেশ সব দল নির্বাচনে আসবে, সে বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে সিইসি তখন বলেন, তারা নিশ্চিত, যদি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়, তাহলে চমৎকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। সেই লক্ষ্যে ইসির পুরো প্রস্তুতি রয়েছে বলেও ইইউকে জানানো হয়।
এদিকে গত ১২ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরেমি ব্রুয়ের, দেশটির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য দপ্তরের উত্তর ও দক্ষিণ এশিয়ার সহকারী সচিব (প্রথম) গ্রে কোওয়ান, সহকারী পরিচালক এলিস হেইনিঙ্গার এবং হাইকমিশনের উপপ্রধান নার্দিয়া সিম্পসন নির্বাচন কমিশনে যান। তারা সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিদল ইসির সঙ্গে আলোচনার সময় ‘আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চাই’ বলে জানায়।
অর্থাৎ দ্বাদশ নির্বাচন কেমন হবে, অংশগ্রহণমূলক হবে কি না, বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে কি না- এমন নানা বিষয় নিয়ে দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন ও বিদেশি কূটনীতিকেরা সরব। এমনকি আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও প্রতিনিয়ত নির্বাচন নিয়ে নানা মন্তব্য করছেন। ১৩ মার্চ তিনি বলেছেন, নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অনেকগুলো আন্তর্জাতিক ও দেশীয় এজেন্সি উন্মুখ হয়ে আছে। নির্বাচন যাতে অবাধ-সুষ্ঠু হয়, তার জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সংশোধনী বা সংস্কার আনা হয়েছে।
এদিকে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। আওয়ামী লীগও বর্তমান সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো নির্বাচনী প্রক্রিয়ার কথা ভাবছে না। এ অবস্থায় দেশের সম্ভাব্য জাতীয় নির্বাচন কেমন হবে, সে সম্পর্কে ধারণা নিতে বেশ তৎপরতা দেখাচ্ছেন বিশ্বের প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিকেরা। তারা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনের ওপর কার্যত চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন।
অন্যদিকে আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেছে ২১০টি সংস্থা। যাচাই-বাছাই শেষে যোগ্য হলে নিবন্ধিত সংস্থাগুলো আগামী পাঁচ বছরের জন্য সংসদ ও স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ পাবে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, গত ২ ফেব্রুয়ারি ছিল আবেদনের শেষ সময়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ১৯৯টি এবং নির্ধারিত সময়ের পর আরও ১১টি সংস্থা আবেদন করে। ইসির সংশ্লিষ্ট শাখায় গত সপ্তাহে পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে একটি সভা হয়েছে। সব আবেদনের যাচাই-বাছাইয়ে আরও প্রায় তিন সপ্তাহ লাগতে পারে। প্রাথমিক বাছাইয়ের পর দাবি-আপত্তি জানতে ১৫ দিন সময় দিয়ে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। আবেদনকারী কোনো সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে কমিশন শুনানি করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যাবে।
ইসির সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিদলের দেখা করা প্রসঙ্গে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওনারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক হবে, ট্রুথফুল হবে। আমরা প্রিপারেশনের কথা জানিয়েছি। আমরা ফুললি প্রিপেয়ার্ড। আমরাও চাচ্ছি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হোক, কনটেস্টেড হোক।’ তিনি আরো বলেন, অস্ট্রেলিয়া জানতে চেয়েছে, রাজনৈতিক সমঝোতার কোনো উদ্যোগ ইসি নেবে কি না বা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা সৃষ্টির উদ্যোগ ইসি নিতে পারে কি না? ইসি অস্ট্রেলিয়াকে জানিয়েছে, ‘এটা ইসির দায়িত্বের পরিধিভুক্ত নয়।’

কমেন্ট বক্স