নিউইয়র্কে সিডিপ্যাপের মাধ্যমে হোম কেয়ার সেবার বিষয়টি অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই খাতে জালিয়াতি হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠায় নিউইয়র্কের গভর্নর জালিয়াতি বন্ধের লক্ষ্যে একে একটি কোম্পানির তত্ত্বাবধানে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পিপিএল নামের ওই কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে সাউথ এশিয়ান সিডিপ্যাপ হোম কেয়ারের মালিকরা ও বাংলাদেশি কমিউনিটির হোম কেয়ারের মালিকরা আশঙ্কা করছেন, সিডিপ্যাপের হোম কেয়ারের সেবার বিষয়টি পিপিএল কোম্পানির হাতে গেলে মানুষের সেবার মান ব্যাহত হবে। গভর্নরের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সাউথ এশিয়ান হোম কেয়ার সেবাদাতারা মোশনে যাচ্ছেন। হোম কেয়ারগুলোর পক্ষে ১৩-১৪টি হোম কেয়ারের মালিকরা মোশন করার জন্য ইতিমধ্যে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছেন। আইনজীবী মোশন ও আরজি তৈরি করার পর আদালতে মামলা দায়ের করা হবে। এ ব্যাপারে বারী হোম কেয়ারের চেয়ারম্যান আসেফ বারী টুটুল বলেন, সিডিপ্যাপের কোনো দুর্নীতি ও জালিয়াতি থেকে থাকলে তা বন্ধ হোক, সেটা আমরাও চাই। যদি অর্থ সেভ করতে পারেন, সেটাতেও আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু একটি কোম্পানির হাতে সকল কোম্পানির নজরদারি ও তত্ত্বাবধান করার যে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তাতে আমাদের আপত্তি আছে।
তিনি বলেন, এখন আমাদের কমিউনিটির মানুষ যেভাবে সেবা পাচ্ছেন, একটি কোম্পানির মাধ্যমে হলে সেই সেবা অবশ্যই ব্যাহত হবে। কারণ আমরা একজন রোগীকে কেবল হোম কেয়ার সেবাই দিই না, তার মেডিকেইড রিনিউ করা, ডাক্তারের কাছে যাওয়া, ওষুধের বিষয়ে সহায়তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা করে থাকি। বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষেরা আমাদের কাছে এলে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারেন। আমাদের অভিজ্ঞ কাস্টমার কেয়ার এজেন্টরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। এখানে ভাষাগত কোনো সমস্যা হয় না। আমাদের কাস্টমার কেয়ারগুলোতে সরাসরি ফোন করলেই যে কেউ কথা বলতে পারছেন। যখন একটি কোম্পানির কাছে নিয়ন্ত্রণ থাকবে, তখন সেবাগ্রহীতারা প্রথমেই ভাষাগত সমস্যায় পড়বেন। কারণ বয়স্ক যারা হোম কেয়ার নেন, তাদের অনেকেই ইংরেজি বলতে বা বুঝতে পারেন না। তাই পিপিএলের হাতে এই খাতের নিয়ন্ত্রণ গেলে মানুষ কাক্সিক্ষত সেবা পাবে না।
আসেফ বারী টুটুল আরও বলেন, সিডিপ্যাপকে একটি কোম্পানির হাতে নিয়ন্ত্রণ দেওয়া নিয়ে আমরা মোশন করতে যাচ্ছি। পাশাপাশি আগামী ১৪ মে এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করব। আমরা গভর্নরের অফিসে গিয়েও আমাদের দাবিদাওয়া ও যুক্তিগুলো তুলে ধরব। আশা করছি, তিনি বিষয়টি বুঝতে সক্ষম হবেন। সব মিলিয়ে আমরা চাই, এখন যেভাবে এই সেবা চলছে, সেভাবেই চলুক। তবে কোনো দুর্নীতি ও জালিয়াতি থাকলে তা বন্ধ করা হোক।
এদিকে ‘কল টু অ্যাকশন’ শিরোনামে হোম কেয়ার সমিতির সদস্যদের লেখা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, সিডিপ্যাপের হোমকেয়ার মালিকরা ১৪ মে এই শিল্পকে প্রভাবিত করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি ব্যক্তিগত বৈঠক করবেন। বৈঠকে সাম্প্রতিক বাজেটের ফলে সিডিপ্যাপ প্রোগ্রামে আইনি পরিবর্তনগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে। আরও বলা হয়েছে, গভর্নরের বাজেট আইনের ফলে একটি ‘একক আর্থিক মধ্যস্থতাকারী’ হিসেবে বর্তমানে পরিচালিত বেশির ভাগ এফআইএসকে একটি উল্লেখযোগ্য একত্রীকরণ এবং নির্মূল করার শঙ্কা রয়েছে। আইনটি যদি অপরিবর্তিত রাখা হয়, তবে বেশির ভাগ এফআইএসকে ব্যবসার বাইরে রাখবে না এবং ভোক্তাদের জন্য যত্নের একটি বিপজ্জনক ত্রুটি তৈরি করবে। এ কারণে আমরা একটি জোট গঠন করেছি সেভ আওয়ার কনজিউমার ডাইরেক্টেড হোম কেয়ার প্রোগ্রাম (SOCDP) নামে। এটি নতুন আইনের বিরোধিতা করবে। ১৬ মে আমরা নন-অ্যাসোসিয়েশন সদস্যদের জন্য একটি বৈঠকের আয়োজন করব। লিটলারের নিউইয়র্ক সিটি অফিসে (৯০০ থার্ড অ্যাভিনিউ, ৫৩ ও ৫৪তম স্ট্রিটের মধ্যে) ওই ব্যক্তিগত বৈঠকে আমাদের প্রস্তাবিত বিষয়ে এগিয়ে যাওয়ার কৌশল এবং বিবেচনাগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে। সেখানে নতুন সিডিপ্যাপ আইনের আইনি চ্যালেঞ্জের বিষয়গুলোও আলোচনা হবে। বৈঠকে একাধিক প্রতিনিধি ছাড়াও নিউইয়র্ক সিটি থেকে তাদের দুই অংশীদার উপস্থিত থাকবেন। তারা হলেন নিউইয়র্ক ডিপার্টমেন্ট অব লেবারের প্রাক্তন অ্যাটর্নি পল পিকিগালো এবং ডিপার্টমেন্ট অব লেবারের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত জেনারেল কাউন্সেল মাইকেল পাগলিয়ালোঙ্গা। তারা আমাদের এ বিষয়ে পরামর্শ ও সহযোগিতা করবেন। তাই যা বেশি এফআইএস এসওসিডিপিতে যোগ দেবেন, আইনকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষেত্রে আমাদের সম্ভাব্য যুক্তি তত শক্তিশালী হবে।
বৈঠকের আয়োজকেরা বলেছেন, এখনো যারা বৈঠকে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেননি, তারা ১৪ মে সকাল ১১টায় ব্রুকলিনে হেল্পিং হ্যান্ডস, ৪১০৭ ১৩ অ্যাভিনিউ, ব্রুকলিন, নিউইয়র্কে মিটিংয়ে যোগ দেওয়ার জন্য আরএসভিপি করুন।


ঠিকানা রিপোর্ট


