উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ লোকসভা আসন ধুবড়ী। বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার সঙ্গে প্রায় আড়াইশ’ কিলামিটার সীমান্ত ভাগ করেছে ভারতের অন্যতম মুসলিম বসবাসকারী সংসদীয় এলাকাটি। ১৯৭১ সালের পর থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কংগ্রেস অঞ্চলটিতে সমর্থন পেলেও, এখন তাদের অস্তিত্ব চরম সংকটে। পাশাপাশি বিজেপিও ধর্মীয় মেররুকরণের সুবিধা পায়নি সেখানে।
৫৪৩ লোকসভা আসনের ভারতে ১৫টি এমন আসন আছে যেখানে ভোটের ফল নির্ধারণ করেন দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম ভোটারা। আসামের ধুবড়ী সেরকমই একটি সংসদীয় এলাকা। ২৫ লাখ মানুষের মধ্যে ৭৫ শতাংশই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। মুসলিম জনসংখ্যার নিরিখে ভারতের অন্যতম শীর্ষ ঘনত্বপূর্ণ সংসদীয় আসনও এটি।
সংসদীয় এলাকায় রাজ্য বিধানসভার ১০ আসনের প্রত্যেক আসনে নির্বাচিত মুসলিম জনপ্রতিনিধি। পৌরসভা থেকে পঞ্চায়েত সব জায়গায়তেই আধিপত্য রয়েছে ধর্মীয় এই সম্প্রদায়ের। এলাকায় শিক্ষিতের হারও ৭৪ শতাংশ। নারী ও পুরুষ ভোটারের সংখ্যাও প্রায় সমান।
স্বাধীনতার পর থেকে অঞ্চলটিতে কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা থাকলেও, ২০০৯ সালের পর থেকে সেখানে অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট বা এআইইউডিএফের জনভিত্তি তৈরি হয়। বিজেপির ভিত্তি নড়বড়ে থাকায় এখানে নিজেরা প্রার্থী না হয়ে এনডিএ শরিক আসাম গণপরিষদের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে বিজেপি। তবে মূল লড়াই হবে এআইইউডিএফ ও কংগ্রেসের।
সংখ্যালঘু মুসলিম প্রভাবিত সংসদীয় এলাকায় হওয়ায় এখানে মূলত এই সম্প্রদায়ের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চাকরি এবং নিরাপত্তা ইস্যুকে জনপ্রতিনিধিরা রাজনীতির অন্যতম বিষয় হিসেবে তুলে ধরেন। এর সঙ্গে রয়েছেন প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্কে বিশ্বাসী মানুষও। তারা সীমান্তের ওপারের মানুষের সঙ্গে অর্থনীতি থেকে সাংস্কৃতিক যোগাযোগও চান।
ধুবড়ীর প্রতিবেশী বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলা। ২৬৮ কিলোমিটার সীমান্ত ভাগ করা কুড়িগ্রামের সঙ্গে রয়েছে চিলমারি নৌ বন্দর নিয়ে নৌ সংযোগ, রয়েছে রৌমারী সীমান্ত। সোনাহাট-ভুরুঙ্গামারী স্থল সীমান্ত চালু হওয়ার জোর সম্ভবনাও রয়েছে। ফলে ধুবড়ীর রাজনীতির সঙ্গে বাংলাদেশও সব সময় গুরুত্ব পেয়ে আসছে।
ঠিকানা/এএস