Thikana News
০৬ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪

আনন্দ উচ্ছ্বাসে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বরণ

আনন্দ উচ্ছ্বাসে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বরণ
১৪ এপ্রিল ছিল পহেলা বৈশাখ। নিউইয়র্কে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বরণ করে নেওয়া হলো বাংলা নতুন বছর ১৪৩১ সনকে। এই দিনে প্রবাসে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা নানা বর্ণিল সাজে সেজে বাংলা বর্ষকে বরণ করে নেন। পহেলা বৈশাখে নিউইয়র্কের টাইম স্কয়ার থেকে শুরু করে পাঁচ বরোর বিভিন্ন স্থানে একাধিক বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হয়। এতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিত্ব, কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ, নিউইয়র্কে নিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অনুষ্ঠানকে আরও সাফল্যমণ্ডিত করে তোলেন। পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে বিভিন্ন বয়সীরা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন। প্রবাসে বসবাস করা নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাঙালি সংস্কৃতিকে ধরে রাখার জন্য তাদেরকেও সম্পৃক্ত করা হয় অনুষ্ঠানে। বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ছিল নানা রকমের খাবারের আয়োজন। প্রাতরাশে দেওয়া হয় দেশীয় সব খাবার। মধ্যাহ্নভোজেও ঠাঁই পায় বাংলাদেশি সব খাবারের সমাহার। পাশাপাশি নন্দিত দেশীয় পোশাকে অতিথি ও দর্শকেরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। নারীরা পরেন সাদা ও লাল পেড়ে শাড়ি, মাথায় অনেকেই দিয়েছেন ফুল, কপালে টিপ। পুরুষেরা     
বেশির ভাগই পরেন পাঞ্জাবি, কেউ কেউ ফতুয়া এবং কটিও পরেন। পায়ে ছিল স্যান্ডেল। নারী-পুরুষদের পাশাপাশি শিশুরাও দেশীয় সাজে উপস্থিত হয়। নিউইয়র্ক ছাড়াও নিউজার্সিসহ বিভিন্ন স্টেট থেকে শিশুশিল্পীরা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আসে।
এদিকে ১৩ এপ্রিল ছিল চৈত্র সংক্রান্তি। চৈত্র সংক্রান্তিতে পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করে নিতেও হয় নানা অনুষ্ঠান। ব্যবসায়ীরা পুরোনো ব্যবসার খাতা বন্ধ করে ১ বৈশাখে পরের দিন থেকে চালু করেন নতুন খাতা, যাকে বলা হয় হালখাতা। নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া, বস্টন, পেনসিলভানিয়াসহ বিভিন্ন স্টেটে বাংলাদেশিদের বসবাস বেশি। ফলে এসব স্টেটে অনুষ্ঠানও বেশি হয়।
বাংলা নববর্ষে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শুভেচ্ছা : বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত ১৪ এপ্রিল রাত ১২টার পর সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) এক বার্তায় তিনি তার এবং স্ত্রী জিল বাইডেনের পক্ষ থেকে এই শুভেচ্ছা জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট-এর এক্স হ্যান্ডেলের টুইটে বলা হয়, ‘বিশ্বব্যাপী যারা বৈশাখী, নবরাত্রি, সংক্রান্তি এবং এই সপ্তাহে আসন্ন নববর্ষ উদযাপনে শরিক হবেন, তাদের জন্য জিল এবং আমি উষ্ণতা, সৌহার্দ্য ও আনন্দ কামনা করি।
শুভ বাংলা, খেম, লাও, মিয়ানমারিজ, নেপালি, সিংহলি, তামিল, থাই এবং বিষু নববর্ষ!’
টাইম স্কয়ারে এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড: এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের উদ্যোগে টাইম স্কয়ারে সহস্র কণ্ঠে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়। দুই দিনব্যাপী আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটে। অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন স্টেট থেকে শিল্পীরা আসেন। এর মধ্যে নতুন প্রজন্মের অনেক প্রতিনিধিও ছিলেন। সংগীত পরিচালনায় ছিলেন মহীতোষ তালুকদার তাপস। টাইম স্কয়ারে ১৩ এপ্রিল শনিবার বেলা তিনটায় অনুষ্ঠান শুরু হয়ে শেষ হয় রাত ১০টায়। এটি ছিল ৪৬ ও ৪৭ স্ট্রিট ব্রডওয়ের মাঝখানে। এর নিবেদন করে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি। এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড বাংলাদেশের সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে শনিবার বিকেলে টাইমস স্কয়ারে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করে। সংগঠক বিশ্বজিৎ সাহা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনা করেন তোফাজ্জল লিটন। সিটি মেয়রের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মেয়রের মুখ্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা মীর বাশার। তিনি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন শামিম আল আমিন ও ফাতেমা সাহাব রুমা। অভিনেতা হাসান ইমাম উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, আমি যেন বাংলাদেশেই দিবসটি উদযাপন করছি। এভাবে বাঙালির সংস্কৃতিকে বিশ্বময় উদ্ভাসিত করতে, জাগ্রত রাখতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে সরব থাকতে হবে।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, সেখানে আমরা সব মত আর পথের মানুষ একত্রিত হয়ে পহেলা বৈশাখকে বরণ করি, উদ্‌যাপন করি। তিনি বলেন, এখানেও বাংলাদেশের মতোই বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হচ্ছে। আমার খুবই ভালো লাগছে। তিনি সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
১৪ এপ্রিল ছিল নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে সহস্র কণ্ঠে বিশ্ববাঙালির বর্ষবরণ ১৪৩১ এর অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি পাওয়ার্ড বাই গোল্ডেন এজ হোম কেয়ার। সংগীত পরিচালনায় ছিলেন মহীতোষ তালুকদার তাপস। পহেলা বৈশাখে সহস্র কণ্ঠে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায়ও হয়। এটি শুরু হয় সকাল আটটায়। দিনভর অনুষ্ঠান চলে। শেষ হয় রাত নয়টায়। অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ছিলেন সৈয়দ হাসান ইমাম। অনুষ্ঠানে দেশের ও প্রবাসী শিল্পীরা অংশ নেন। তারা হলেন শাহ মাহবুব, রানো নেওয়াজ, শমী, অনিক রাজ প্রমুখ। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল আজকাল ও টিবিএন২৪। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন বিশ্বজিৎ সাহা, শিবলী সাদিক, তানভীর কায়সার ও হেলাল মিয়া। অনুষ্ঠানে বিশ্বখ্যাত শিল্পী পার্বতী দাস বাউল ছিলেন। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশের ফোকসমাজ্ঞী মমতাজ বেগম। তাদেরকে দেখার জন্য দর্শকরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। তারা একের পর এক গান পরিবেশন করে দর্শকদের আনন্দ দেন।
অনুষ্ঠানে স্টেট সিনেটর জন লু উপস্থিত থেকে বক্তৃতা করেন। নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদাও উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষ ছাড়াও টাইম স্কয়ারে ও জ্যাকসন হাইটসের অনুষ্ঠানে অন্যান্য কমিউনিটির মানুষজনও উপস্থিত হন। এতে তারা বাংলাদেশি ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আরও অবগত হন। আয়োজকেরাও এ ধরনের অনুষ্ঠান করতে পেরে খুশি।
এসব বড় অনুষ্ঠান ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বর্ষবরণের আয়োজন করে। ওইসব অনুষ্ঠানেও দেশের ও প্রবাসের শিল্পীরা অংশ নেন।
ব্রঙ্কসে বৈশাখী মেলা ও শোভাযাত্রা : ছন্দা বিন্্তে সুলতান জানিয়েছেন বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বরণ উপলক্ষে গত ১৪ এপ্রিল ব্রঙ্কসের পার্ক চেস্টারের ইউনিপোট রোডে বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস (বাফা)-এর উদ্যোগে বৈশাখী মেলা ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এ সময় নারী-পুরুষ-শিশু সবাই বৈশাখী সাজে, ঢাকঢোল-বাদ্যের তালে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেয়। বৈশাখী মেলা উপলক্ষে ইউনিপোট রোডজুড়ে ছিল ছোট ছোট স্টল। পোশাকের দোকান, জুয়েলারি, রকমারী খাবারের দোকান, পান্তা-ইলিশ, নানারকম ভর্তা, ঝাড় মুড়ি, ফুচকা-চটপটি- সব মিলে ইউনিপোট যেনো হয়ে ওঠে ঢাকারই কোন এক রাজপথ। বর্ষ বরণের এমন আয়োজন দেখে উৎসুক ভিনদেশি পথচারীরাও ছবি তোলে, ভিডিও ধারণ করেন। 
আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিল বৈশাখী শোভাযাত্রা। দুপুর আনুমানিক তিনটার দিকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রা শুরুর প্রাক্কালে বাফার নির্বাহী ফরিদা ইয়াসমীন নতুন বর্ষে সবার সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। 
এরপরই ‘এসো হে বৈশাখ’ গানের সঙ্গে ঢাকঢোল বাজিয়ে শোভাযাত্রাটি পার্ক চেস্টারের বিভিন্ন রোড অতিক্রম করে আবার ইউনিপোটে এসে থামে। র‌্যালিতে বিভিন্ন কমিউনিটির নেতৃবর্গ, শিল্পী, সাহিত্যিক, সংগঠন, বাফার ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকরা অংশ নেন। 
র‌্যালি শেষে সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। দুপুর হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত নববর্ষের এই আয়োজন চলে।
এদিকে ড্রামা সার্কেল, নিউইয়র্কের উদ্যোগে গত ১৪ এপ্রিল রোববার উডসাইডের গুলশান টেরেসে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ অংশগ্রহণ করেন। 
কাকেনটিকাটে বাংলা বর্ষবরণ : গত ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় কানেকটিকাটের মিডেলটাউনে একটি তন্দুর রেস্টুরেন্টে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বরণ করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। সম্প্রীতি এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কানেটিকাটের বিভিন্ন পেশাজীবী বাংলাদেশি পরিবার-পরিজনদের সমাবেশে, শিশু-কিশোরদের কলতানে, পান্তা ইলিশ আর বাংলা গানের অসাধারণ আয়োজনে অত্যন্ত সুন্দর সন্ধ্যার আয়োজন করে তন্দুর। 
কানেটিকাটের বাংলাদেশি-আমেরিকান সিপিএ শ্রাবণী তার পুত্র কৃষকে নিয়ে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, তন্দুর রেস্টুরেন্টে আমি বহুদিন ধরে আসা-যাওয়া করি। সম্প্রতি বাংলাদেশি মালিকানার অধীনে নতুন করে রেস্টুরেন্টটির যাত্রা শুরু হয়েছে। এই রেস্টুরেন্টটির সব খাবার সম্পূর্ণ হালাল। ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত আছেন রেস্টুরেন্টের মালিক কর্তৃপক্ষ। নিজেরা উপস্থিত থেকে সবসময় খুব সুন্দরভাবে তারা সব কিছু পরিচালনা করেন। মিডেলটাউনের সুপরিচিত মুখ, বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতা মোস্তাক মাহমুদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা অত্যন্ত বিনয়ের সাথে অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে খাবার পরিবেশনের কাজ করেন। মোস্তাক মাহমুদ ও তার স্ত্রী দুজনেই নিজ নিজ পেশায় নিয়োজিত- তাদের দুই সন্তান ও এ দেশে জন্ম- কিন্তু তাদের ব্যবহার এবং পরিবেশন ১০০ ভাগ বাঙালি, কোথাও কোনো ত্রুটি নেই। 
এ প্রসঙ্গে মোস্তাক মাহমুদের স্ত্রী বলেন, বহুদিন ধরে তারা মিডেলটাউনের বাসিন্দা, কিন্তু বাংলাদেশি হালাল খাবার পেতে খুব কষ্ট হতো। তাই কমিউনিটির চাহিদার কথা মাথায় রেখে তারা এই রেস্টুরেন্টটি খোলার উদ্যোগ নেন। পুরো রমজান মাসজুড়ে এই রেস্টুরেন্ট এ ইফতারির আয়োজন করা হয়। এখানে বুট-পিঁয়াজুর পাশাপাশি তেহারি-জিলাপির ব্যবস্থা ছিল। বিভিন্ন মসজিদ ও কমিউনিটির অনুষ্ঠানে সুলভে ক্যাটারিং করা হয় তন্দুর রেস্টুরেন্ট থেকে। তাছাড়া বাংলা নববর্ষ, ভ্যালেন্টাইন ডে, স্বাধীনতা দিবস কিংবা নিউ ইয়ার- এরকম সব কটি বিশেষ দিনে অত্যন্ত সুলভ মূল্যে বহু আইটেমসহ বিশেষ বাফেট আয়োজন করা হয়।
বস্টনে বাংলা বর্ষবরণ ও ঈদ পুনর্মিলনী : ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বস্টনে বাংলা নববর্ষ ও ঈদ পুনর্মিলনীতে গান গেয়ে প্রবাসীদের মাতালেন এ সময়ের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী সাব্বির জামান। গত ১৩ এপ্রিল ম্যাসাচুসেটসের মেডফোর্ডের মিডল স্কুলের মিলনায়তনে প্রচুর সংখ্যক দর্শকশ্রোতার উপস্থিতিতে তার সব জনপ্রিয় গান পরিবেশন করে দর্শকদের আনন্দ দেন। বাংলা নববর্ষ ও ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজক ছিলেন নিউ ইংল্যান্ডের সর্বস্তরের বাঙালি। অনুষ্ঠানে সাধারণ দর্শক ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
বিকেল থেকে শুরু হয় বৈশাখী মেলা। হরেক রকমের কাপড়, জুয়েলারি আর খাবারের দোকানে চলে বেচাকেনা। সন্ধ্যার পর শুরু হওয়া সঙ্গীতানুষ্ঠান চলে রাত ১১টা পর্যন্ত। তণুশ্রী বড়ুয়ার সঞ্চালনায় প্রথম পর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব নিউ ইংল্যান্ড (বেইন)-এর সাবেক সভাপতি শাহীন খান, শহীদুল ইসলাম প্রিন্স, মূলধারার রাজনীতিবিদ নাজদা আলম, বেইনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-ই-খোদা (খোকা), সাজ্জাদুর রহমান সাজু ও শেখ বাহাউদ্দিন সুমন।
স্থানীয় শিল্পীদের মধ্যে কৌশলী ইমা, জুয়েল আলম, তামান্না ইসলাম উর্মি ও আঞ্জুমান মুক্তা গান পরিবেশন করেন। এদের গানের ফাঁকে ফাঁকে নৃত্য পরিবেশন করে স্থানীয় শিশুশিল্পী তিতীক্ষা, মেধা, ঐশী বড়ুয়া, মাসুই মার্মা, উমা মার্মা ও মাধবী। 
শেষ পর্বে ২০০৬ সালে ক্লোজআপ ওয়ান-এর জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী সাব্বির জামান একের পর এক তার জনপ্রিয় গান গেয়ে দর্শকশ্রোতাদের মাতিয়ে তোলেন। গান শুরুর আগেই তিনি বলেন, প্রবাসে যারা থাকেন, দেশের প্রতি তাদের মায়া-মমতা আমাদের চেয়ে বেশি। যারা বাংলা গানকে ভালবাসেন, তাদেরকে এ মিলনায়তনে উপস্থিত দেখে আমি সত্যিই আনন্দিত। শিল্পীদেরকে যন্ত্রে সংগত করেন- মোন্তাকিন চৌধুরী নাইস, সাইদুজ্জামান রিড ও মিঠু। 
অনুষ্ঠান শেষে র‍্যাফেল ড্র’র মাধ্যমে ৫টি পুরস্কার প্রদান করা হয়। র‍্যাফেল ড্র’তে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন যথাক্রমে- সৈয়দ বদরে আলম সাইফুল, ড. বামন দাস বসু, কাজী নুরুজ্জামান ও টিপু চৌধুরী।
মায়ামিতে বৈশাখী মেলা : দেশের ঐতিহ্যবাহী ব্যান্ডদল ‘সোলস’ ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মায়ামির বৈশাখী মেলায় পারফর্ম করেছে। বাংলাদেশ কালচার অর্গানাইজেশন অব মায়ামির বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে সোলস প্রায় তিন ঘন্টা গান গেয়ে দর্শক শ্রোতাদের মাতিয়ে রাখেন। এ সময় দর্শকের অনুরোধের পাশাপাশি এ এমন পরিচয়, ব্যস্ততা দেয় না আমাকে অবসর, নিঃসঙ্গতাসহ বেশকিছু গান পরিবেশন করে সোলস।
মায়ামি বৈশাখী মেলায় পারফর্ম করা প্রসঙ্গে ‘সোলস’ ব্যান্ডের প্রধান গায়ক পার্থ বড়ুয়া বলেন, মায়ামিতে বৈশাখী মেলায় এসে মনে হয়নি দেশের বাইরে আছি। এখানকার দর্শকরা দারুণ সঙ্গীতপ্রেমী। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। বিদেশের মাটিতে বসে দেশের শিল্প, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধারণ করছেন। বর্ষবরণের আয়োজন দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। আয়োজকদেরও ধন্যবাদ জানাই, তারা ‘সোলস’র ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করায়।
অনুষ্ঠানটির সার্বিক আয়োজনে ছিল দেশি মিউজিক। বর্ষবরণের মধ্যে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে কনসার্ট শুরু করেছে। জানা গেছে, আগামী ২০ এপ্রিল ভার্জিনিয়ায় ঈদ আনন্দ মেলায় পারফর্ম করবে সোলস।
উল্লেখ্য, গত ১১ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে আসে সোলস। এবারের সফরে রয়েছেন পার্থ বড়ুয়া, মীর মাসুম, আহসানুর রহমান আশিক, মারুফ তালুকদার রিয়েল ও সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার শামীম আহমেদ। 

কমেন্ট বক্স