Thikana News
২৭ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
লাইফ সাপোর্টে যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগ

দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সভা ড. মোমেনের বক্তব্যে তোলপাড়

দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সভা ড. মোমেনের বক্তব্যে তোলপাড়



 
লাইফ সাপোর্টে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ- এখন অভিযোগ অনেকেরই। আওয়ামী লীগ এখন কয়েক টুকরো। গ্রুপিং, অভ্যন্তরীণ কোন্দল, নিষ্কৃয়তা! আর নেতাদের একে অপরের প্রতি বিষোদ্গারে প্রবাসে আওয়ামী লীগের  মত সবচেয়ে বড় সংগঠনটির জেরবার অবস্থা। অনেকের অভিযোগ, ১৩ বছরের মধ্যে কোন কমিটি না হওয়ায় এই অবস্থার জন্য দায়ী। একাংশের দাবি, এক যুগের বেশি সময় ধরে কমিটি গঠিত না হওয়ায় এই বিশৃঙ্খল অবস্থা। ড. সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সুদৃঢ় হলেও দলের অপর একটি  অংশের নেতাকর্মীর অভিযোগ পাহাড়সম। তারা বর্তমান কমিটিকে বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনের জন্য কেন্দ্রের প্রতি দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘ সময় ধরে। গত ১৩ ও ১৪ এপ্রিল দুই গ্রুপ পৃথক পৃথক বর্ধিত সভার আয়োজন করে। সভায় অপর গ্রুপটির নেতারা বর্তমান কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে চরম বিষোদ্গার করেন। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের মধ্য দিয়ে সভার সমাপ্তি ঘটে। 
এদিকে গত ৪ এপ্রিল ঢাকায় এক শোকসভায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের দেওয়া এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে ব্যাপক তোলপাড় চলছে। ওই সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. মোমেন বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি-সম্পাদকসহ অধিকাংশ নেতা মাইনাস টু ফর্মুলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ওই সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন বলেও দাবি করেন। ড. মোমেনের এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতারা বলেন, তিনি মিথ্যাচার করেছেন। মন্ত্রিত্ব হারিয়ে ড. মোমেন ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন বলেও তারা মন্তব্য করেন।
গত ১৪ এপ্রিল রোববার এস্টোরিয়ার হ্যালো বাংলাদেশ রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদের পরিচালনায় শুরুতে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর সকল শহীদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাসিব মামুনের সুস্থতা কামনা এবং ঢাকায় অগ্নি-দুর্ঘটনায় সদ্য প্রয়াত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান শামীমের স্মরণে দোয়া করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন কাজী মনসুর খৈয়াম।
সভায় উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ডা. মাসুদুল হাসান, শামসুদ্দীন আজাদ ও লুৎফুল করিম, প্রবাসীকল্যাণ সম্পাদক সোলায়মান আলী, শাহানারা রহমান, আব্দুল মালেক, রব্বানী চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপিকা শাহনাজ মমতাজ, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল, সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম, সিরাজুল ভূইয়া, দপ্তর সম্পাদক ফাহিম, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী, সহসভাপতি মাসুদ সিরাজী ও এম আলমগীর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দুলাল বিল্লাহ, প্রচার সম্পাদক শেখ শফিকুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসভাপতি দুরুদ মিয়া রনেল, সাখাওয়াত হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের নেতা সেবুল মিয়া, রেজা আব্দুল্লাহ, রহিমুজ্জামান সুমন প্রমুখ। এ ছাড়া নিউজার্সি আওয়ামী লীগ, প্যাটারসন আওয়ামী লীগ, পেনসিলভানিয়া আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান বর্ধিত সভার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন এবং বর্তমান কমিটির যেসব শূন্য পদ রয়েছে,  তা পূরণের জন্য উপস্থিত সদস্যদের কাছ থেকে আগ্রহী পদপ্রার্থীর নাম সংগ্রহ করেন। সভায় উপস্থিত সবাই আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ নবায়ন করেন।
এদিকে গত ১৩ এপ্রিল শনিবার যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্য একটি গ্রুপের কার্যকরী কমিটির সভা নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্তোরাঁ হলে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের সহসভাপতি এম ফজলুর রহমান এবং যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন দফতর সম্পাদক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন, গীতা ও বাইবেল থেকে পাঠ করে শোনানো হয় এবং পরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এবং বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা সভার শুরুতে সভার সভাপতি এম ফজলুর রহমান উপস্থিত নেতাদের সামনে জরুরি কার্যকরী সভার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি অভিযোগ করেন, ড. সিদ্দিকুর রহমান স্বৈরাচারী কায়দায় গত ১৩ বছর দল চালিয়েছেন। তিনি গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা করেন না। অনবরত মিথ্যাচার তার হাতিয়ার। আওয়ামী লীগসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে ভেঙে বিলীন করেছেন। তার স্ত্রীসহ মাত্র হাতে গোনা ৫-৭ জন লোক তার সঙ্গে আছেন। তিনি কেন্দ্রের কাছে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটির দাবি জানান।
কার্যকরী সদস্য কায়কোবাদ খান বলেন, সিদ্দিকুর রহমানের অপকর্মের জন্য নেত্রীর সামনে আমরা হাজারো কণ্ঠে যেভাবে ‘নো মোর সিদ্দিক’ স্লোগান দিয়েছিলাম, প্রয়োজনে আবারও তার প্রতিধ্বনি হবে। শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক ফরিদ আলম বলেন, আমরা এবার সম্মেলন চাই। ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সিদ্দিকুর রহমান সভাপতি হয়ে ব্যবসা আর পদ-বাণিজ্য করতে করতে তার লাজলজ্জা লোপ পেয়েছে। এবার শক্ত হাতে তাকে দমন করতে হবে। সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান বলেন, আমি তার (সিদ্দিক) সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। তার কোনো নীতি-আদর্শ নেই। মানবাধিকার সম্পাদক মিসবাহ আহমেদ বলেন, বিভিন্ন স্টেট থেকে সম্মেলনের নামে যে চাঁদাবাজি করেছেন ড. সিদ্দিক, তা জননেত্রী ফেরত দিতে বলেছেন কানাডায়। কিন্তু আজও তিনি তা ফেরত দেননি। আমরা সকল টাকা সংগঠনের তহবিলে ফেরতদানের দাবি করছি। আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ বখতিয়ার বলেন, আসুন, আমরা অবিলম্বে তলবি সভা ডেকে গঠনতন্ত্র মোতাবেক সিদ্দিককে বিদায় দিই এবং সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করে নেত্রী বরাবর পাঠাই নতুন কমিটি গঠনের জন্য। দফতর সম্পাদক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ভেঙে তছনছ করেছেন ড. সিদ্দিক। আজ প্রবাসে আওয়ামী লীগ একটি দুর্বল সংগঠন। উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য রমেশ চন্দ নাথ বলেন, আসুন, ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপশক্তিকে বিদায় করে নতুন যাত্রা শুরু করি। উপদেষ্টা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর বলেন, বিগত ১৩ বছর যাবৎ আমরা আন্দোলন করে যাচ্ছি সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। তিনি ১৫ আগস্ট নিয়েও মিথ্যাচার করেছেন। বলেছেন, ওইদিন নাকি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ মিছিল করে আটক হয়েছিলেন। কত বড় মিথ্যাচার এটি!
সভার সভাপতি এম ফজলুর রহমান সমাপনী বক্তব্যে বলেন, আমরা আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা আমাদের দাবি রেজ্যুলেশন আকারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রেরণ করব, যাতে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে একটা নতুন কমিটি হয়। যাকেই নেত্রী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করেন, তা আমরা মেনে নেব এবং একসঙ্গে কাজ করব।
এ ছাড়া সভায়  বক্তব্য দেন যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম, স্টেট আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ আতিক, আওয়ামী লীগ নেতা আকতার হোসেন, শেখ হাসিনা মঞ্চের সভাপতি জালাল উদ্দিন জলিল, মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রুমানা আখতার, ছাত্রলীগ নেতা শেখ মো. জুয়েল, যুবলীগ নেতা খন্দকার জাহিদুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা মো. জাহিদ মিয়া প্রমুখ।
এ দিকে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক স্ট্যাটাসে আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন লাইফ সাপোর্টে থাকা যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কফিনে লাস্ট পেরেকটি ঠুকে দিলেন ড. সিদ্দিকুর রহমান। আসলে মেট্রিক পাস না করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গেলে যে অবস্থা হওয়ার তা-ই হয়েছে। জীবনে ছাত্রলীগ, যুবলীগ না করে সরাসরি হঠাৎ লীগ হওয়ার কারণেই এই বেহাল অবস্থা। এখন পর্যন্ত তার সঙ্গে যারা আছেন, তাদের বেশির ভাগই হঠাৎ লীগ। তাই অবিলম্বে সাবেক ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের সমন্বয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন সময়ের দাবি।
অন্যদিকে গত ৪ এপ্রিল ঢাকায় আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা আতাউর রহমান শামীমের স্মরণে আয়োজিত শোকসভায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে নিয়ে বক্তব্য দিলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি ও সাপ্তাহিক গণবাংলা আয়োজিত শোক সভায় সভাপতিত্ব করেন এম এ করিম। প্রধান অতিথি ছিলেন ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
ড. আবদুল মোমেন বলেন, আতাউর রহমান শামীমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার দুর্দিনে আমার পরিচয়। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসে। তখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকি। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের যত নেতাটেতা ছিল, তাদের অধিকাংশই মাইনাস টু ফর্মুলার পক্ষে ছিল। তৎকালীন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হয়ে গেল মাইনাস টুর পক্ষের লোক। আমি তখন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা। আমিই একমাত্র ব্যতিক্রম। সেই দুর্দিনে আমি বস্টনে থাকি। আমরা ৪ বা ৫ জন আওয়ামী লীগ। বাকি সবাই মাইনাস টু ফর্মুলার লোক। একই অবস্থা নিউইয়র্কে। সেখানে কোনো লোক পাওয়া যেত না। আমরা তখন ১৪-১৫ জন শেখ হাসিনা মুক্তি আন্দোলন সংগঠন করি। বাদল আকন্দ নামের ভদ্রলোক এ সংগঠন তৈরি করেন। প্রতি সপ্তাহে তখন নিউইয়র্কে যেতে হতো এ আন্দোলনে শরিক হতে। কারণ তখন আওয়ামী লীগের কেউ আসত না। এ দুর্দিনে আমি গেলে শামীমকে পেতাম। হাকিকুল খোকন, শামীম, টনি রহমানসহ অল্প কয়েকজন আমরা বসতাম।
ড. মোমেন আরও বলেন, নেত্রী জেল থেকে ছাড়া পেয়ে খবর দিলেন তিনি বস্টনে আসছেন। রাত ১০-১১টার দিকে খবর পেলাম, পরদিন বিকেল তিনটায় তিনি আসবেন। বিএনপি-জামায়াত জেনে ফেলেছে। শুনলাম, তাদের ৪০-৫০ জন ‘গো ব্যাক শেখ হাসিনা’ সমাবেশ করবে। আমাদের শক্তি খুবই কম। তখন কী করব? নিউইয়র্ক ও নিউজার্সি কল করা শুরু করলাম। নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের যারা, তারা তো মাইনাস টুর দলে। তবু তাদের কল করলাম। আমার ভাইবোন, ভাগনে, ভাগনি ও ভাগনি-জামাই সবাইকে আসতে বললাম। ‘আই মাস্ট সে, উই আর ভেরি লাকি।’ গোলাপ-টোলাপ নেত্রী আসার আগেই চলে এসেছে। ৬০ জন হয়ে গেলাম। এয়ারপোর্টে পুলিশ দুদিকে দুই দলকে আলাদা করে রেখেছিল। আমাদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় জামায়াত-বিএনপি কোনো ঝামেলা করেনি। নেত্রীর সঙ্গে তখন একজন সিকিউরিটি অফিসার, হাসান মাহমুদ ও রিটায়ার্ড জেনারেল তারিক এসেছিলেন। তখন আমাদের টাকা-পয়সাও ছিল না। তাদের রাখার ব্যবস্থাও নেই। হাসান মাহমুদ আমার বাসায় উঠলেন। এত মানুষ। সবাই ক্ষুধার্ত। নিজাম ভাই ব্যাংকের মালিক। তিনি সহায়তা করলেন। কর্মীদের জন্য পিৎজা খাবারের ব্যবস্থা করা হলো।
ড. মোমেনের এই বক্তব্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মোমেন সাহেব যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে নিয়ে যা বলেছেন, তা মিথ্যাচার। ড. মোমেন কখনোই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন না। তখন প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারি ছিলেন খালিদ হাসান ও সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ। নেত্রী বস্টনে আসছেন এ খবর আমাদের দিয়েছিলেন জয় মামা। আমি, খালিদ হাসান, সাজ্জাদ, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, মমতাজ, টনিসহ শতাধিক নেতাকর্মী সেদিন বস্টনে গিয়েছিলাম। বিমান থেকে নামার পরপরই আমি, খালিদ হাসান, সাজ্জাদুর রহমান ও আখতারুজ্জামান নেত্রীকে রিসিভ করি। তখন তো মোমেন সাহেবকে দেখিইনি। আর পিৎজা খাওয়ানোর কথাও মিথ্যা। নেত্রীর সামনে বসেছিলেন মমতাজ ও নজমুল। নেত্রী টাকা দেন পিৎজা কেনার জন্য। সিদ্দিক বলেন, মন্ত্রিত্ব হারিয়ে ভারসাম্যহীন কথা বলছেন ড. মোমেন।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ বলেন, ২০০৭ সালে যেদিন নেত্রী গ্রেফতার হন, এস্টোরিয়ার বনফুল রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় শত শত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। বস্টন এয়ারপোর্টে আমরা শতাধিক লোক ছিলাম। বিএনপি-জামায়াতের কাউকে আমরা সেখানে দেখিওনি। যুক্তরাষ্ট্রে হাতে গোনা কয়েকজন মাইনাস টু ফর্মুলায় ছিলেন। অধিকাংশই ছিলেন নেত্রীর প্রতি অনুগত। মোমেন সাহেবের বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে মর্মাহত করেছে। তিনি ইতিহাস বিকৃত করেছেন।

কমেন্ট বক্স