Thikana News
৩১ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫





 

মালয়েশিয়ায় সাড়ে ৩ হাজার বাংলাদেশির সেকেন্ড হোম

মালয়েশিয়ায় সাড়ে ৩ হাজার বাংলাদেশির সেকেন্ড হোম ছবি সংগৃহীত





 
মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমের মালিকদের মধ্যে বাংলাদেশিদের অবস্থান এখন চতুর্থ। দেশটিতে বাড়ি কিনতে প্লাটিনাম, গোল্ড ও সিলভার এই তিন ভাগে আবেদন করা যায়। প্লাটিনাম স্তরের আওতায় অংশগ্রহণকারীদের অবশ্যই ৫০ লাখ রিঙ্গিত (সাড়ে ১১ কোটি টাকা), গোল্ড স্তরের ২০ লাখ (সাড়ে ৪ কোটি টাকা) এবং সিলভার স্তরের অংশগ্রহণকারীদের ৫ লাখ রিঙ্গিতের (১ কোটি ১৫ লাখ টাকা) একটি স্থায়ী আমানত থাকতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচিত সব স্তরের অংশগ্রহণকারীদের অবশ্যই বার্ষিক মোট ৬০ দিন মালয়েশিয়ায় বসবাসের ন্যূনতম প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে। এই শর্ত পূরণ করেই ৩ হাজার ৬০৪ জন বাংলাদেশি সেকেন্ড হোম তৈরি করেছেন মালয়েশিয়ায়। ২০১৮ সালে বাংলাদেশিদের এই সংখ্যা ছিল ১৫০।

তবে এই টাকা বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে যায়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘মালয়েশিয়া সেকেন্ড হোমের জন্য সেখানে অর্থ পাঠানোর কোনো অনুমোদন বাংলাদেশ ব্যাংক দেয়নি। বৈধভাবে ব্যাংকিং চ্যানেলে ওই অর্থ যায়নি। ওই অর্থ সেখানে কীভাবে গেল, সেটা বিএফআইইউ এবং এনবিআর তদন্ত করে দেখতে পারে।’

এদিকে দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম বলেন, ‘সেকেন্ড হোমের নামে মালয়েশিয়ায় যে অর্থ পাচার হয়েছে, সেটা নিয়ে দুদকের সরাসরি কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। যদি বাংলাদেশ ব্যাংক বা সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্য কোনো সংস্থা আমাদের তালিকা দেয়, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেয়, তাহলে দুদক কাজ শুরু করতে পারে।’ তার কথা, ‘প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেলে দেশে মানি লন্ডারিং আইন আছে, আন্তর্জাতিক আইন আছে। সেই আইনেই আমরা কাজ শুরু করতে পারি।’

বিশ্লেষকেরা বলছেন, মালয়েশিয়ার দেওয়া সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের বৈধ-অবৈধ অর্থ সেখানে পাচার হচ্ছে। আবার কেউ কেউ তৃতীয় দেশে অর্থ পাচারের জন্য মালয়েশিয়াকে রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। এ বিষয়ে অভিবাসন নিয়ে কাজ করা অভিবাসন-বিষয়ক বিশ্লেষক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘যারা সেকেন্ড হোম করেন, তারা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ মালয়েশিয়ার ব্যাংকে জমা রাখার পর বাড়ি  ও গাড়ি কেনেন। তারা সেখানে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও খোলেন। এসব কাজের জন্য তারা যে অর্থ মালয়েশিয়ায় নেন, তা বৈধভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। পুরো অর্থই তারা অবৈধ পথে নেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেউ তাদের স্ত্রী-সন্তানদের ওই দেশে রাখেন। তারা স্থায়ীভাবে ওই দেশে থাকেন। আর একটি অংশ আছে নির্দিষ্ট সময়ের পর তারা ওই দেশে তাদের সম্পদ বিক্রি করে দিয়ে তৃতীয় কোনো দেশে পাঠান। তারা বাংলাদেশের অবৈধ অর্থ মালয়েশিয়ায় নিয়ে বৈধ করেন। তারপর সেই অর্থ অন্য দেশে পাঠান। আর এই প্রক্রিয়া তারা অব্যাহত রাখেন। মালয়েশিয়াকে তারা অর্থ পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহার করেন।’

গত ২৯ মার্চ মালয়েশিয়ার পর্যটন, শিল্প ও সংস্কৃতিমন্ত্রী টিয়ং কিং সিং এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, দেশটিতে গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৬৬ জন সক্রিয় সেকেন্ড হোম পাস হোল্ডার রয়েছেন। তালিকায় ২৪ হাজার ৭৬৫ জন পাসধারী নিয়ে শীর্ষে রয়েছে চীন। এরপর যথাক্রমে দক্ষিণ কোরিয়ার ৪ হাজার ৯৪০ জন, জাপানের ৪ হাজার ৭৩৩ জন, বাংলাদেশের ৩ হাজার ৬০৪ জন, যুক্তরাজ্যের ২ হাজার ২৩৪ জন, তাইওয়ানের ১ হাজার ৬১১ জন, যুক্তরাষ্ট্রের ১ হাজার ৩৪০ জন রয়েছেন। এ ছাড়া সিঙ্গাপুরের রয়েছেন ১ হাজার ২৮২ জন, ভারতের ১ হাজার ২২৩ জন এবং অস্ট্রেলিয়ার ১ হাজার ৬৯ জন। মালয়েশিয়ার সরকার সেকেন্ড হোমধারীদের সংখ্যা প্রকাশ করলেও তাদের নাম-ঠিকানা ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট প্রকাশ করে না। কারণ তারা এটাকে বিদেশি অর্থ দেশে নেওয়ার একটি কৌশল হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে। সূত্র : ডয়েচে ভেলে।

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স