যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, সারা বিশ্বে বাঙালি জাতির একটি মাত্র রাষ্ট্র বাংলাদেশ। প্রিয় এই দেশকে পৃথিবীর বুকে উচ্চ মর্যাদায় তুলে ধরার দায়িত্ব আমাদের সকলের। আর এই কাজে প্রবাসী বাঙালিরা অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারেন। গত ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভার্জিনিয়ার ফলস চার্চে এক নাগরিক সংবর্ধনায় বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
চলতি বছরের আগস্টের শেষ সপ্তাহে ভার্জিনিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য ফোবানা সম্মেলনের এবারের চেয়ারপারসন মোহাম্মদ আলমগীর তার আবাসিক ভবনে এই সংবর্ধনার আয়োজন করেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, সারা বিশ্বে চলমান অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। তিনি বলেন, প্রবাসীদের আচার-ব্যবহার, কাজকর্ম আর দৃঢ়তাই প্রমাণ করবে বাংলাদেশ সঠিক পথে রয়েছে। আর এভাবেই নিজেদের দেশকে সঠিকভাবে বিশ্ব পরিমন্ডলে তুলে ধরতে হবে।
‘স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন’- জাতির জনকের এই উক্তি উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, দেশের জন্মলগ্ন থেকেই আমাদের দু’ধরনের সমস্যা রয়েছে। এর একটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে। দেশটির তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছিলেন তা আজ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আর দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে- যারা দেশের ভেতর থেকে স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিল তাদের সংখ্যা কমে এলেও আজও শেষ হয়ে যায়নি।
‘রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাই ক্ষমতাবান মানুষ’ - এ কথা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক সমাজে দেশকে এগিয়ে নেয়া অত্যন্ত কঠিন। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা তার পূর্ণ আন্তরিকতায় অনেক প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ‘আমার মনে হয় প্রবাসীরা যদি সরকারের ইতিবাচক কাজগুলো সমর্থন করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তবে দেশকে আরও এগিয়ে নেয়া যায়,’ তিনি যোগ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুঁড়ি নয়, বরং কানায় কানায় পরিপূর্ণ একটি ঝুঁড়ি। বিমান বন্দরের যাত্রীসেবা সমস্যার সমাধানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী যে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে তা পৃথিবীর অন্যতম। বহি:বিশ্বে এইসব সুযোগ সুবিধাসহ দেশের ব্যাপক উন্নয়নের কথা তুলে ধরতে প্রবাসী বাঙালিদের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এই আইন কর্মকর্তা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের, প্রাক্তন জেলা ও দায়রা জজ মকবুল আহসান, ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনলজির চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপ, ভয়েস অব আমেরিকা বাংলা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান রোকেয়া হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যলামনাই ফোরাম ইনক (ডুয়াফি)-এর প্রেসিডেন্ট কাইয়ুম খান, মেরিল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. ফয়সাল কাদের, সাংস্কৃতিক সংগঠন ধ্রুপদের প্রেসিডেন্ট হিরন চৌধুরীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।