Thikana News
০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

 খেজুর-হুজুর-সাদেকা ঠাট্টাতেই বেঁচে থাকা?

 খেজুর-হুজুর-সাদেকা ঠাট্টাতেই বেঁচে থাকা?
কই-কোথায় পাঠাবেন সন্তানদের? ভার্সিটিতে বেলেল্লাপনা-খুনখুনী, মাদ্রাসায় বলাৎকার। আধুনিক ডিজিটালে এ কোন মধ্যযুগের আজব স্মার্টনেস? খুনের আসামীকে চোখের সামনে বুক ফুলিয়ে ঘুরতে দেখা যায়। মাদকসম্রাট সমাজের মাথায় 
বসে আছে। কোন বীভৎসতা না দেখছে মানুষ? ঠাট্টা-মস্করা, না বাস্তবতা? ভাব-নমুনা বুঝে জেদে কেউ এখন আর ফুঁসছেও না। ত্বকী-তনু-মিতু হত্যার পরও সারাদেশ জেগেছিল। কদিনে আবার মিলেও গেছে। এখন হালকা-পাতলা গরম জগন্নাথের ছাত্রী অবন্তিকাকে নিয়ে। জীবদ্দশায় অবন্তিকা যে শিক্ষকদের কাছে ন্যায়বিচার চেয়ে পাননি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষকরাই দু’দিন ক্লাস বন্ধ রেখে শোকের মিছিলে। দু’বছর চুপ থাকলেও এখন শিক্ষার্থীদের ওপর নানাবিধ নির্যাতনের প্রতিবাদে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলনে তারাও। শোকের নামে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার কী টাটকা গল্প? 
অবন্তিকার আত্মহত্যার প্ররোচনায় জড়িত অপরাধে বন্দি সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম, সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী- নামগুলো কী সুন্দর-মধূর না? অথচ তারা জবি শিক্ষার্থীর হত্যাকারী, ছাত্রলীগ-শিক্ষকলীগ কর্মী! জগন্নাথের ভিসি প্রফেসর ড. সাদেকা হালিম নামটিরও কতো গাম্ভীর্য। তিনিও ট্রলের শিকার। অবন্তিকার রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদে গিয়ে ঝামেলা বা বাঁটে পড়ে গেলেন সাদেকা হালিম। সেখানে দাঁড়িয়ে বক্তব্যও রাখেন। তার মসজিদে প্রবেশ স্যোশালমিডিয়ার সাবজেক্ট হয়ে গেছে। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে তুমুল ঝড়। কারো কাছে এটি ইসলাম ধর্মের স্পষ্ট অবমাননা। কুরআন-হাদিসের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। মশকরা করে কেউ বলছেন- তিনিও আল্লামা। কনফার্ম জান্নাতি। এর পক্ষেও আছেন কেউ কেউ। তারা মসজিদে নারী-পুরুষ সমানাধিকার চান। এ ধরনের বিতর্ক একটুও কাক্সিক্ষত? 
কাক্সিক্ষত না হলেও বাস্তবতাটা এ জায়গায়ই এসে ঠেকেছে। মসজিদটির ইমাম কাম খতিব মো. ছালাহ উদ্দিন বলেছেন, তিনি সকাল থেকেই ভিসি ম্যাডামের জন্য মহিলাদের নামাজের জায়গা নিজে সাফ-ছতুর করে রেখেছিলেন। ভেজালটা লাগিয়েছেন প্রক্টর জাহাঙ্গীর স্যার। তিনি বলেছেন, ভিসি ম্যামের বসার জন্য যে জায়গা রাখা হয়েছিল, সেখানে টয়লেটের গন্ধ। তাই ইমামের পজিশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাকে। সময়টাই কি গন্ধময়? নইলে প্রয়াতের জন্য দোয়া মাহফিলে নারী ভিসির মসজিদে গিয়ে ওঠা?  গত দেড় দশকে রাজনৈতিক পরিচয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পাওয়াদের বেশিরভাগেরই ক্যাম্পাসে-হলে গুন্ডামি করা, দোকানে ফাও খাওয়া,  ভাইয়ের তোষামোদি, প্রতিপক্ষের উপর হামলে পড়ার বেশ রেকর্ড। গত দেড়-দুই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনাচারের সাথে যুক্ত হিসেবে যাদের নাম এসেছে, তার নব্বই শতাংশ গত ১৫ বছরের মধ্যে নিয়োগ পাওয়া। জগন্নাথের দ্বীন ইসলামও ওই লটেরই একজন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের ছাত্রলীগ নেতার মানসিক চাপ উপেক্ষা করতে না পেরে আত্মহত্যার ঘটনাও রয়েছে। সেই ঘটনা এখন তামাদি। গত ১৫ বছরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের একটা অংশের যে স্খলন হয়েছে, তা দেশ সৃষ্টির পরের ৩৫ বছরেও হয়েছে? 
তার ওপর সময়টাও একটা বিষয়। রমজান মাস। এ মাসটিতে বেগুন-শঁসা নিয়ে বরাবরই গোল পাকার একটি সংস্কৃতিতে মানুষ অভ্যস্ত। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বা মাদ্রসায় কোনো অনাসৃষ্টির কল্পনাও করেনি। কিন্তু, জগন্নাথের শিক্ষক-ভিসি সেখানে গোল বাধিয়ে দিলেন। এবার রমজানে গোলমাল খেজুর নিয়ে। খেজুরের তোড়ে বেগুন-শঁসা মার খেয়ে গেছে। খেজুর হয়ে গেছে পলিটিক্যাল আইটেম। রাজনীতিকদের সাথে পেরে ওঠেননি হুজুর বা আলেম সম্প্রদায়ও। খেজুর নিয়ে তাদের বয়ান মাঠ পায়নি। এবার তারাবির নামাজের রাকায়াত নিয়েও হুজুরদের গোল পাকানোর প্রবণতা নেই। মন্দের মধ্যে তা কি একটুও ভালো খবর নয়? 
এই ভালোর মাঝে এক চিমটা গন্ধ দিয়ে দিলো দিনাজপুরের এক ছোট্ট হুজুর। ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী দিনাজপুর শহরের কালীতলায় চাচার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এ সময় বালুয়াডাঙ্গা এলাকার আরিফুল ইসলামের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন নামের এক হাফিজিয়া মাদরাসার ছাত্র তার পিছু নেয়। মেয়েটি তার চাচার বাসার কাছাকাছি পৌঁছালে সাখাওয়াত পেছন থেকে অতর্কিতভাবে জড়িয়ে ধরে চুমু খায়। এ সময় মেয়েটি চীৎকার করলে সাখাওয়াত নখ দিয়ে তার দুই গালে গভীরভাবে জখম করে দৌড়ে চম্পট দেয়। খেজুর নিয়ে গোলের মাঝে হুজুরের এই কাণ্ড ভাইরাল না হয়ে উপায় আছে? 
লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট; ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন, ঢাকা। বসে আছে। কোন বীভৎসতা না দেখছে মানুষ? ঠাট্টা-মস্করা, না বাস্তবতা? ভাব-নমুনা বুঝে জেদে কেউ এখন আর ফুঁসছেও না। ত্বকী-তনু-মিতু হত্যার পরও সারাদেশ জেগেছিল। কদিনে আবার মিলেও গেছে। এখন হালকা-পাতলা গরম জগন্নাথের ছাত্রী অবন্তিকাকে নিয়ে। জীবদ্দশায় অবন্তিকা যে শিক্ষকদের কাছে ন্যায়বিচার চেয়ে পাননি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষকরাই দু’দিন ক্লাস বন্ধ রেখে শোকের মিছিলে। দু’বছর চুপ থাকলেও এখন শিক্ষার্থীদের ওপর নানাবিধ নির্যাতনের প্রতিবাদে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলনে তারাও। শোকের নামে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার কী টাটকা গল্প? 
অবন্তিকার আত্মহত্যার প্ররোচনায় জড়িত অপরাধে বন্দি সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম, সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী- নামগুলো কী সুন্দর-মধূর না? অথচ তারা জবি শিক্ষার্থীর হত্যাকারী, ছাত্রলীগ-শিক্ষকলীগ কর্মী! জগন্নাথের ভিসি প্রফেসর ড. সাদেকা হালিম নামটিরও কতো গাম্ভীর্য। তিনিও ট্রলের শিকার। অবন্তিকার রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদে গিয়ে ঝামেলা বা বাঁটে পড়ে গেলেন সাদেকা হালিম। সেখানে দাঁড়িয়ে বক্তব্যও রাখেন। তার মসজিদে প্রবেশ স্যোশালমিডিয়ার সাবজেক্ট হয়ে গেছে। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে তুমুল ঝড়। কারো কাছে এটি ইসলাম ধর্মের স্পষ্ট অবমাননা। কুরআন-হাদিসের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। মশকরা করে কেউ বলছেন- তিনিও আল্লামা। কনফার্ম জান্নাতি। এর পক্ষেও আছেন কেউ কেউ। তারা মসজিদে নারী-পুরুষ সমানাধিকার চান। এ ধরনের বিতর্ক একটুও কাক্সিক্ষত? 
কাক্সিক্ষত না হলেও বাস্তবতাটা এ জায়গায়ই এসে ঠেকেছে। মসজিদটির ইমাম কাম খতিব মো. ছালাহ উদ্দিন বলেছেন, তিনি সকাল থেকেই ভিসি ম্যাডামের জন্য মহিলাদের নামাজের জায়গা নিজে সাফ-ছতুর করে রেখেছিলেন। ভেজালটা লাগিয়েছেন প্রক্টর জাহাঙ্গীর স্যার। তিনি বলেছেন, ভিসি ম্যামের বসার জন্য যে জায়গা রাখা হয়েছিল, সেখানে টয়লেটের গন্ধ। তাই ইমামের পজিশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাকে। সময়টাই কি গন্ধময়? নইলে প্রয়াতের জন্য দোয়া মাহফিলে নারী ভিসির মসজিদে গিয়ে ওঠা?  গত দেড় দশকে রাজনৈতিক পরিচয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পাওয়াদের বেশিরভাগেরই ক্যাম্পাসে-হলে গুন্ডামি করা, দোকানে ফাও খাওয়া,  ভাইয়ের তোষামোদি, প্রতিপক্ষের উপর হামলে পড়ার বেশ রেকর্ড। গত দেড়-দুই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনাচারের সাথে যুক্ত হিসেবে যাদের নাম এসেছে, তার নব্বই শতাংশ গত ১৫ বছরের মধ্যে নিয়োগ পাওয়া। জগন্নাথের দ্বীন ইসলামও ওই লটেরই একজন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের ছাত্রলীগ নেতার মানসিক চাপ উপেক্ষা করতে না পেরে আত্মহত্যার ঘটনাও রয়েছে। সেই ঘটনা এখন তামাদি। গত ১৫ বছরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের একটা অংশের যে স্খলন হয়েছে, তা দেশ সৃষ্টির পরের ৩৫ বছরেও হয়েছে? 
তার ওপর সময়টাও একটা বিষয়। রমজান মাস। এ মাসটিতে বেগুন-শঁসা নিয়ে বরাবরই গোল পাকার একটি সংস্কৃতিতে মানুষ অভ্যস্ত। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বা মাদ্রসায় কোনো অনাসৃষ্টির কল্পনাও করেনি। কিন্তু, জগন্নাথের শিক্ষক-ভিসি সেখানে গোল বাধিয়ে দিলেন। এবার রমজানে গোলমাল খেজুর নিয়ে। খেজুরের তোড়ে বেগুন-শঁসা মার খেয়ে গেছে। খেজুর হয়ে গেছে পলিটিক্যাল আইটেম। রাজনীতিকদের সাথে পেরে ওঠেননি হুজুর বা আলেম সম্প্রদায়ও। খেজুর নিয়ে তাদের বয়ান মাঠ পায়নি। এবার তারাবির নামাজের রাকায়াত নিয়েও হুজুরদের গোল পাকানোর প্রবণতা নেই। মন্দের মধ্যে তা কি একটুও ভালো খবর নয়? 
এই ভালোর মাঝে এক চিমটা গন্ধ দিয়ে দিলো দিনাজপুরের এক ছোট্ট হুজুর। ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী দিনাজপুর শহরের কালীতলায় চাচার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এ সময় বালুয়াডাঙ্গা এলাকার আরিফুল ইসলামের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন নামের এক হাফিজিয়া মাদরাসার ছাত্র তার পিছু নেয়। মেয়েটি তার চাচার বাসার কাছাকাছি পৌঁছালে সাখাওয়াত পেছন থেকে অতর্কিতভাবে জড়িয়ে ধরে চুমু খায়। এ সময় মেয়েটি চীৎকার করলে সাখাওয়াত নখ দিয়ে তার দুই গালে গভীরভাবে জখম করে দৌড়ে চম্পট দেয়। খেজুর নিয়ে গোলের মাঝে হুজুরের এই কাণ্ড ভাইরাল না হয়ে উপায় আছে? 
লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট; ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন, ঢাকা। 

কমেন্ট বক্স